বরিশাল অফিস:; দারিদ্র্য দমিয়ে রাখতে পারেনি বরিশালের উজিরপুরের রমজান খান সাব্বিরকে। ছেলেবেলা থেকে অভাবের সঙ্গে যুদ্ধ করেই পড়াশোনা চালিয়ে এসেছেন।
এবার মেধা দিয়ে জয়ী হয়েছে মেডিকেল কলেজে ভর্তির যুদ্ধও। কৃষক বাবার ছেলে সাব্বির মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্নপূরণে এখন তার বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য প্রয়োজনীয় ২০ হাজার টাকা। সেই টাকা সংগ্রহ করতে হিমশিম খাচ্ছেন তিনি।
উজিরপুর উপজেলার শোলক ইউনিয়নের পাশের দামোদরকাঠি গ্রামের কৃষক ফিরোজ খানের ছেলে সাব্বির খান। তিনি জানান, ভর্তি পরীক্ষায় ৬৭.৭৫ নম্বর পেয়ে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজে সুযোগ পেয়েছেন। বোনের উপহার পাওয়া ডিজিটাল শুমারি ট্যাব দিয়ে অনলাইনে পড়াশোনা করে একবারের চেষ্টাতেই সুযোগ পেয়েছেন মেডিকেলে।
সাব্বির জানান, কোথাও প্রাইভেট পড়ার মতো সুযোগ তার ছিল না। মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষার কোনো বইও কিনতে পারেননি। অনলাইন ও ইউটিউব থেকে টিউশন নিয়ে অংশ নিয়েছেন ভর্তি পরীক্ষায়।
নবম শ্রেণিতে যখন বিজ্ঞান বিষয় নেন, তখন থেকেই চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন সাবিব্বর। তিনি বলেন, বাবা সব সময় বলেছেন, যত কষ্ট হোক স্বপ্নপূরণে সহায়তা করবেন। বাবার এ আশ্বাসে নিজের লক্ষ্য ঠিক করি চিকিৎসক হব।
সেই লক্ষ্য পূরণে উজিরপুরের এইচএম ইনস্টিউট থেকে ২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হোন সাব্বির। পরে ভর্তি হোন সরকারি গৌরনদী কলেজে। এইচএসসি পরীক্ষায়ও জিপিএ-৫ পেয়েছেন তিনি।
সাব্বিরের বাবা ফিরোজ খান বলেন, আল্লাহর রহমতে সাব্বির পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। কীভাবে ছেলেকে ভর্তি করব আর পড়ালেখার খরচ বহন করব, তাই নিয়ে চিন্তায় আছি। ঋণ করে ভর্তি করানোর চেষ্টা করার কথা জানান তিনি।
সাব্বিরের মা সাহিদা বেগম বলেন, আমার স্বামী কৃষি কাজ করেন। যখন টাকা থাকে তখন গামছা বিক্রির ব্যবসা করেন। এ দিয়ে চলতে কষ্ট হয়। ছেলেকে ২০ হাজার টাকা দিয়ে মেডিকেলে ভর্তি করা নিয়ে চিন্তায় আছি।