শিরোনাম

বরিশালে মোটরসাইকেল চালানো নিয়ে দ্বন্দ্বে শিশুকে হত্যা, গ্রেফতার ৪

Views: 31

বরিশাল অফিস :: মোটরসাইকেল চালনো নিয়ে দ্বন্দ্বে ওমর ফারুক শুভকে (১৫) শ্বাসরোধে হত্যা শেষে নদীতে ভাসিয়ে দেওয়ায় দুই শিশুসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ভোলা ও পটুয়াখালীসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে সোমবার দিনগত গভীর রাতে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনায় গ্রেফতার প্রধান আসামি মাইদুল ইসলাম রাঢ়ী (৩৭) আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

মঙ্গলবার (২ জুলাই) বিকেলে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন মেহেন্দিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াছিনুল হক।

গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন, মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার উলানিয়া গ্রামের মৃত আ. মজিদ রাঢ়ীর ছেলে মাইদুল ইসলাম রাঢ়ী (৩৭) ও একই উপজেলার আম্বিকাপুর গ্রামের বাদল পালবানের ছেলে ইসমাইল বাদল পালবান (১৮)। এছাড়া দুই শিশু হলো—অম্বিকাপুর গ্রামের বাছেদ খানের ছেলে হাসিবুর রহমান (১৪) ও গাজীরচর গ্রামের জুয়েল হোসেনের ছেলে আহাদ হোসেন (১৪)। হত্যার শিকার হওয়া শুভ মেহেন্দিগঞ্জের জাঙ্গালিয়া মাধ্যমিক স্কুল এন্ড কলেজের ৯ম শ্রেণির ছাত্র ও ওই এলাকার ইব্রাহিম খন্দকারের ছেলে।

ওসি ইয়াছিনুল বলেন, মাইদুলের দোকানে শুভ টাকার বিনিময়ে মাঝেমধ্যে বিভিন্ন কাজ করতো। এ কারণে মাইদুলের মোটর সাইকেল মাঝেমধ্যে চালানো নিহত শুভ। এ নিয়ে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিলো। গত ০৬ জুন শুভকে মোটর সাইকেল মেরামতের কথা বলে মেহেন্দিগঞ্জ থেকে ভোলার চরফ্যাশনে নিয়ে যায়। সেখানে মেঘনা নদীর তীরে নিয়ে শুভকে শ্বাসরোধ করে হত্যা শেষে নদীতে লাশ ভাসিয়ে দেওয়া হয়। এদিকে সন্তান নিখোঁজের ঘটনায় গত রোববার থানায় একটি মামলা করেন ইব্রাহিম খন্দকার। এরপর সোমবার ভোলা ও পটুয়াখালী জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়। তখন ভোলায় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি শুভকে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়েছে।

ওসি ইয়াছিনুল হক আরও বলেন, আসামি মাইদুলের মেহেন্দিগঞ্জের লেংগুটিয়া বাজারে একটি ভাঙ্গারির দোকান আছে। সেই দোকানে নিহত শুভ মাঝে মধ্যে কাজ করতো। তাদের মধ্যে সুসম্পর্ক থাকায় শুভ কাজের বিনিময়ে এবং আলাদা হাত খরচের জন্য বিভিন্ন সময়ে টাকা-পয়সা নিত। আসামি মাইদুল ০৬ মাস আগে ব্যবসায়ী কাজে গতি আনতে একটি পুরাতন মোটরসাইকেল কেনেন। কিন্তু মাইদুল মোটর সাইকেল চালাতে না পারতেন না। এ কারণে নিহত শুভকে দিয়ে আসামি মাইদুল সেই মোটরসাইকেলটি চালাত। শুভ ব্যবসার কাজের বাইরেও ব্যক্তিগত কাজে উক্ত মোটরসাইকেলটি ব্যবহার করলে দুজনের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটে।

ওসি আরও বলেন, তারপর শুভকে মোটর সাইকেল মেরামতের কথা বলে ভোলায় নিয়ে হত্যার পরিকল্পনা করে। এরপর ০৬ জুন তারা ভিকটিম শুভকে নিয়ে মেঘনা নদীর পাড়ে জনশূন্য স্থানে যায়। রাত আড়াইটার দিকে আসামি ইসমাইল ভিকটিম শুভর একপাশে বসে এবং আসামি মাইদুল অন্য পাশে বসে।

আসামি ইসমাইল পালবান পেছন থেকে শুভর গলা চেপে ধরে, তখন মাইদুল শুভকে পেছন থেকে ঝাপটে ধরে। এসময় শিশু আহাদ ও শিশু হাসিবুর ভিকটিমের দুই হাত ও পা ধরে রাখে। একপর্যায়ে তারা শ্বাস রোধ করে শুভকে হত্যা করে। এরপর মাইদুল ইসলাম মৃতদেহকে উপর্যপুরি চড়, লাথি মেরে ক্ষোভ প্রকাশ করে। শিশু আহাদ শুভর পকেটে থাকা মোবাইল ফোনটি বের করে সিম খুলে ভোলা সংলগ্ন মেঘনা নদীতে ফেলে দেয় এবং ফোনটি আসামি মাইদুল ইসলামের কাছে। পরবর্তীতে সবাই মিলে মৃতদেহটি ধরে নদীতে ফেলে দেয়।

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *