বাংলাদেশের আমতলী উপজেলার গুলশাখালী ইউনিয়নের কলাগাছিয়া হরিদ্রাবাড়ীয়া একতা নি¤œ মাধ্যমিক বিদ্যালয় এখন শিক্ষার্থী শূন্য। বছরের পর বছর ধরে এই বিদ্যালয়ে একটিও শিক্ষার্থী ভর্তি হয়নি, তবে এখানে চারজন শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছেন, যারা মাসে প্রায় লাখ টাকার বেতন উত্তোলন করছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, এমন পরিস্থিতির মধ্যে স্থানীয় শিক্ষা কর্মকর্তা কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় বিদ্যালয়টি বিলুপ্তির দাবিতে সোচ্চার হয়েছে এলাকাবাসী।
পরীক্ষার দিনেও শিক্ষক-কর্মচারী ছাড়া কেউ নেই
বৃহস্পতিবার, বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষা চললেও একটিও শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়নি। বিদ্যালয়ের অবস্থা বর্ণনা করে জানা গেছে, শ্রেণীকক্ষে ময়লা ও আবর্জনা জমে পড়েছে এবং শিক্ষকদের চেয়ার ও টেবিল ছাড়া কোনো ছাত্রছাত্রীর উপস্থিতি ছিল না। জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হলেও, অন্য সব কিছু নিস্তেজ হয়ে পড়ে আছে।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন জানালেন, “বিদ্যালয়ের আশপাশে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে, তাই এখানে শিক্ষার্থী পাওয়া কঠিন।”
স্থানীয়দের দাবি, প্রতিষ্ঠানটি বিলুপ্ত করা হোক
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল আজিজ নেছারী বলেন, “আমরা আর লজ্জিত হতে চাই না। যদি শিক্ষার্থী না থাকে, তাহলে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে কীভাবে? আমরা ছাত্রছাত্রী সংগ্রহের চেষ্টা করছি, কিন্তু পাচ্ছি না।”
এ বিষয়ে গুলশাখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাড. এইচএম মনিরুল ইসলাম মনি বলেন, “নামে মাত্র একটি বিদ্যালয় আছে। বাস্তবে শিক্ষার্থী নেই। এখানে চলে বড় অঙ্কের নিয়োগ বাণিজ্য।”
শিক্ষা অফিসের কার্যকর পদক্ষেপের অপেক্ষা
এ ব্যাপারে আমতলী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার অলি আহাদ জানান, “আমি বর্তমানে আদালতে আছি, পরে কথা হবে,” বলে ফোনের সংযোগ কেটে দেন।
বরগুনা জেলা শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) রফিকুল ইসলাম বলেন, “বিষয়টি আমি জানি, এবং তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এছাড়া, আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) তারেক হাসান জানান, “প্রথমে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে বিষয়টি জানবো, তারপর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।”
বরগুনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, “এই বিদ্যালয়ের ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
মো: তুহিন হোসেন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম