বরিশাল অফিস :: গরমের মধ্যে অব্যাহত লোডশেডিং নাজেহাল মানুষ। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে শিশু, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা ও এইচএসি পরীক্ষার্থীরা। পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহকদের দাবি বিদ্যুত মাঝে মধ্যে আসে। তাদের দাবির সাথে একমত নন পল্লী বিদ্যুত কর্তৃপক্ষ। তাদের দাবি এক ঘন্টা করে লোডশেডিং দেয়া হয়। বরিশাল নগরীর গ্রাহকদের দাবি এক ঘন্টা থাকে তো, দেড় থেকে দুই ঘন্টা লোডশেডিং হচ্ছে। কিন্তু ওজোপাডিকোর দাবি, গত দুইদিন ছিলো। এখন লোডশেডিং নেই।
সরেজমিনে ঘুরে ও বিদ্যুত গ্রাহকদের সাথে কথা বলে যে তথ্য পাওয়া যায়। কিন্তু বিদ্যুত বিভাগের কর্মকর্তাদের বক্তব্যে পুরোই উল্টো। বরিশালের হিজলা উপজেলার কাউরিয়া বাজারের টেউটিনের দোকানী মিজানুর রহমান বলেন, বিদ্যুত তো মাঝে মধ্যে আসে। দিনের ২৪ ঘন্টার মধ্যে দুই ঘন্টাও ঠিকমতো বিদ্যুত পাই না।
মোবাইল ফোনে কথা বলার সময় তিনি বলেন, ১০ মিনিট পূর্বে বিদ্যুত এসেছে। কথা বলার মধ্যে বিদ্যুত চলে গেছে বলে জানান তিনি।
বরিশাল হিজলার আরেক বাসিন্দা বলেন, মোবাইলে একটু চার্জ দেয়ার মতো সময়ও থাকে না। বাধ্য হয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়ীতে দুইটি চার্জার রেখেছি।
তিনি বলেন, সবচেয়ে বেশি কষ্টে আছে এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা। তারা ঠিকমতো পড়াশুনা করতে পারেন না।
বরিশাল পল্লী বিদ্যুত সমিতি-১ এর আওতায় বরিশাল সদর, বাকেরগঞ্জ, হিজলা, মেহেন্দিগঞ্জ ও মুলাদী উপজেলা। এ উপজেলায় বর্তমানে এক ঘন্টা পর পর লোডশেডিং দেয়া হয়।
এ সমিতির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেন বলেন, তাদের আওতায় ৫ উপজেলায় তিন লাখ ৫০ হাজার গ্রাহক রয়েছেন। ৫৩টি ফিডারের মাধ্যমে তাদের মাঝে বিদ্যুত সরবরাহ করা হয়। গ্রাহকদের চাহিদা রয়েছে ৭০ মেগাওয়াট।
তার দাবি চাহিদার পুরো বিদ্যুত পাচ্ছেন। গ্রাহকদের অভিযোগের বিষয়ে বলেন, গত দুইদিন একটু ছিলো। তবে আজ তেমন কোন সমস্যা নেই।
বরিশাল পল্লী বিদ্যুত সমিতি-১ এর আওতায় বাবুগঞ্জ, বানারীপাড়া, উজিরপুর, গৌরনদী ও আগৈলঝাড়া উপজেলা। পল্লী বিদ্যুত- ২ জেনারেল ম্যানেজরা প্রকৌশলী মো. সাদেকুর রহমান বলেন, এ উপজেলায় তাদের গ্রাহক রয়েছে ৩ লাখ ২৫ হাজার গ্রাহক রয়েছে। ৬৪ ফিডারের মাধ্যমে তাদের বিদ্যুত সরবরাহ করা হয়। তাদের চাহিদা ৭০ মেগাওয়াট। কিন্তু পাচ্ছেন ৫০ মেগাওয়াট। ঘাটতি পূরনে একেকটি ফিডারে এক ঘন্টা করে লোডলেডিং করা হয়।
বরিশাল নগরীর ৪ নম্বর ওয়ার্ড মহাবাজ এলাকার বাসিন্দা অভিযোগ করেন, এক ঘন্টা পর বিদ্যুত থাকে না। এমনকি গভীর রাতে গিয়ে দেড় থেকে দুই ঘন্টা বিদ্যুত থাকে না। গরমের কারনে বিদ্যুত না থাকায় ভোগান্তিতে থাকতে হয়। গভীর রাতে ঘরের বাইরেও বের হওয়া যায় না। তাই সন্তানদের নিয়ে ছটফট করতে হয়।
গত দুইদিন ছিলো জানিয়ে বরিশাল নগরীতে বিদ্যুত সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ওজোপাডিকোর বিক্রয় ও বিতরন বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী ফারুক হোসেন বলেন, তাদের আওতায় ৭১ হাজার গ্রাহক রয়েছে। ১৯টি ফিডারের মাধ্যমে তাদের মাঝে বিদ্যুত সরবরাহ করা হয়। গত দুইদিনে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুত না পাওয়ায় লোডশেডিং করতে হয়েছে। বর্তমানে তাদের ঘাটতি রয়েছে ৫ মেগাওয়াটের মতো। চাহিদা ৫৮ মেগাওয়াট।
ওজোপাডিকোর বিক্রয় ও বিতরন বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, তাদের ৬৬ হাজার গ্রাহক রয়েছে। তাদের ১৬ টি ফিডারের মাধ্যমে বিদ্যুত সরবরাহ করা হয়। তাদের চাহিদার ৩৫ মেগাওয়াট বিদ্যুত পাচ্ছেন বলে দাবি তার।