পটুয়াখালী প্রতিনিধি :: তরুণ উদ্যোক্তা নাহিদ। শখের বসে কোয়েল পালন থেকে এখন চাষি। পটুয়াখালী পৌর শহরের উপজেলা সড়কের হেতালিয়া বাধঘাট এলাকার বাসিন্দা মো. নাহিদ ইসলাম একজন সফল কোয়েল চাষি। নাহিদ ৩ বছর আগে শখের বসে ৮ জোড়া কোয়েল পাখি দিয়ে যাত্রা শুরু করেন।
বর্তমানে যখন অনলাইন গেমস আর মাদকের সাথে মিলেমিশে যাচ্ছে যুব সমাজ ঠিক সে সময়ে টগবগে যুবক মো. নাহিদ ইসলাম নিজ বাড়িতে পরিত্যক্ত জমিতে গড়ে তুলেছেন কোয়েল পাখির খামার। শখের বসে বাজার থেকে প্রথমে কিছু কোয়েল পাখি কিনে বাসায় একটি খাঁচায় রেখে পালন করতে শুরু করলেও বর্তমানে তার রয়েছে ২টি খামার। তাতে তিন হাজারেরও বেশি কোয়েল পাখির দেখাশুনা করছেন। প্রতিদিন খুব সকালে ঘুম থেকে উঠে পাখিদের খাবার দেয়া, পরিচর্যা এবং ডিম সংগ্রহের কাজ করে দিন পার হয় এই যুবকের । বর্তমানে কোয়েল পাখিগুলো ডিম দেয়াতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তরুণ এ উদ্যোক্তা। প্রতিদিন এ সব পাখি থেকে ২৪০০ থেকে ২৫০০ ডিম সংগ্রহ করা হয় তাতে গড়ে প্রতিদিন ৪ থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা আয় হচ্ছে বলে জানান তরুণ উদ্যোক্তা নাহিদ।
নাহিদ জানান, আমার উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন ছিল ছোটবেলা থেকেই। শখের বসে কোয়েল পালন শুরু করে এটাকে নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করে দেখলাম কোয়েল পালন সহজ ও লাভজনক। তাই ব্যাপকভাবে এর লালন পালন শুরু করি। আজ আমার খামারে তিন হাজারেরও বেশি কোয়েল পাখি আছে।
আরো পড়ুন : ধর্ষণের পর হত্যা, ঝুলিয়ে রাখা হয় লাশ, গ্রেপ্তার যুবক
এ বিষয়ে পটুয়াখালী জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. ফজলুল হক সরদার বলেন, কোয়েল পালন একটি লাভজনক ব্যবসা। হাঁস মুরগির তুলনায় জায়গা এবং খাবার কম লাগে। এলাকায় তেমন বেশি কোয়েল পালন হয় না। দু’চার জনে কোয়েল পালন করে এবং তারা লাভজনক পর্যায়ে আছে। কোয়েলের ডিম হাঁস মুরগির ডিমের পাশাপাশি পুষ্টি চাহিদা পূরণ করতে পারে।
পোলট্রিতে এগারোটি প্রজাতি রয়েছে, তারমধ্যে কোয়েল একটি ছোট আকারের গৃহপালিত পাখি। অন্যান্য পোলট্রির তুলনায় কোয়েলের মাংস এবং ডিম গুণগতভাবে উৎকৃষ্ট। আনুপাতিক হারে কোয়েলের ডিমে কোলেস্টেরল কম এবং আমিষ বেশি। একটি মুরগির পরিবর্তে ৮টি কোয়েল পালন করা সম্ভব। কোয়েল পাখি প্রতিপালন করে পারিবারিক পুষ্টি জোগানের সাথে সাথে অতিরিক্ত কিছু আয় করাও সম্ভব। স্বল্প মূল্যে, অল্প জায়গায়, অল্প খাদ্যে কোয়েল পালন করা যায়। কোয়েল পালনের সুবিধা কোয়েল দ্রুত বাড়ে। ৬-৭ সপ্তাহে ডিমপাড়া শুরু করে এবং বছরে ২৫০-২৬০ পাড়ে ডিমে দেয়। কোয়েল ১৭-১৮ দিনে ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়, রোগবালাই খুব কম এবং খাবার খুবই কম লাগে বাংলাদেশের আবহাওয়া কোয়েল পালনের উপযোগী। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কোয়েল পালন দেশের পুষ্টি ঘাটতি মেটাতে এবং জাতীয় আয় বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে।