পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার ভরিপাশা গ্রামের সেলিনা বেগমের কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে চারপাশ। একমাত্র সন্তান আমিনুল ইসলাম আমিনকে হারানোর বেদনায় তিনি দিন কাটাচ্ছেন। ২১ জুলাই রাজধানীর যাত্রাবাড়ির দনিয়া এলাকায় পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারায় ১৬ বছরের কিশোর আমিন।
সাধারণ পরিবারের ছেলে আমিন। অটোরিকশাচালক বাবা ওবায়দুল ইসলাম এবং মা সেলিনা বেগমের একমাত্র সন্তান। পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করলেও অভাবের তাড়নায় কাজ শুরু করে একটি কারখানায়। মাসে আট হাজার টাকা বেতনে চাকরি করত সে।
শেষ দিনের গল্প
মৃত্যুর দিন সকালে মাকে জানিয়েছিল, শরীর ভালো না, কাজে যাবে না। সারাদিন ঘরে থাকার পর বিকেলে নাস্তার কথা বলে বের হয়। মা জানতেন না, সে যাচ্ছিল আন্দোলনে। সেখানে পুলিশের গুলিতে আহত হয় আমিন।
অপরিচিত দুই ছাত্র গুরুতর আহত আমিনকে হাসপাতালে নিয়ে যান। রিকশায় ওঠানোর সময় চালক হিসেবে সেখানে উপস্থিত ছিলেন আমিনের বাবা। সন্তানকে এমন অবস্থায় দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। ঢাকা মেডিকেলে নেওয়ার পর চিকিৎসকরা আমিনকে মৃত ঘোষণা করেন।
মায়ের আর্তনাদ
আমিনের মা বলেন, “আমার ছেলে ফুটবল খেলত। অনেক পুরস্কার আনত। এখন সব স্মৃতি নিয়ে বাঁচতে হচ্ছে। আমি শতকোটি টাকা চাই না। আমার ছেলেকে ফেরত চাই।”
একটি পরিবারের শোক
আমিনের প্রতিবেশীরা জানায়, সে সবসময় বলত, “মৃত্যু হলে শহীদ হব।” কিন্তু সেই কথা এখন বাস্তব। বাবা ওবায়দুল ইসলাম বলেন, “আমার কলিজা খালি হয়ে গেছে। শেখ হাসিনাকে হুকুমের আসামি করে বিচার চাই।”
আমিনকে তার দাদার কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়েছে। সেখানে জানাজায় অসংখ্য মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম