শীতকালের আগমন না হলেও অনেকেই এখনই ত্বকে শুষ্কতা ও চামড়া ওঠার সমস্যায় ভুগছেন। বিশেষ করে মুখ, হাত, ও পায়ের ত্বক শুষ্ক হয়ে ওঠে এবং কিছু ক্ষেত্রে পিলিং বা ত্বকের খোসা ওঠার সমস্যা দেখা দেয়। সাধারণত, এসব সমস্যা ক্রিম বা ভ্যাসলিন মাখলেও দ্রুত সমাধান হয় না। তবে, এর পেছনে রয়েছে কিছু কারণ এবং সঠিক যত্ন নিলে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব। চলুন, জেনে নেওয়া যাক ত্বক শুষ্ক ও খোসা ওঠার কারণ এবং তা প্রতিরোধের উপায়-
ত্বক শুষ্ক হওয়ার কারণ:
১. শীত বা গরমের প্রভাব:
শীত বা অত্যাধিক গরম ত্বকের আর্দ্রতা হ্রাস করে। যখন ত্বক প্রয়োজনীয় আর্দ্রতা হারায়, তখন তা শুষ্ক হয়ে যায় এবং পিলিং হতে পারে। শীতে বিশেষ যত্ন নিতে না পারলে ত্বক আরো শুষ্ক হয়ে পড়ে।
২. পানিশূন্যতা:
শীতকালে অনেকেই পর্যাপ্ত পানি পান করেন না, যা ত্বককে ডিহাইড্রেটেড (পানিশূন্য) করে তোলে। এতে ত্বক রুক্ষ হয়ে যায় এবং ত্বকে খোসা ওঠার সমস্যা দেখা দেয়। প্রতিদিন অন্তত ৮ গ্লাস পানি পান করতে হবে যাতে ত্বক আর্দ্র ও কোমল থাকে।
৩. প্রসাধনীর ক্ষতিকর প্রভাব:
বিভিন্ন স্কিন কেয়ার প্রোডাক্টে ব্যবহৃত রাসায়নিক উপাদানগুলো ত্বকের ওপর খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে। দীর্ঘদিন এসব কেমিক্যাল ব্যবহারে ত্বক রুক্ষ হয়ে যায় এবং পিলিংয়ের সমস্যা সৃষ্টি হয়।
৪. ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া:
অ্যান্টিবায়োটিক বা কোনো কড়া ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে ত্বকের চামড়া উঠে যেতে পারে। বিশেষ করে দীর্ঘ সময় ধরে এসব ওষুধ গ্রহণ করলে ত্বকে খোসা ওঠার সমস্যা বৃদ্ধি পায়।
৫. রোদে পোড়ানো:
রোদে অতিরিক্ত সময় কাটানো বা সানট্যানের কারণে ত্বক রুক্ষ ও শুষ্ক হয়ে পড়ে। এতে ত্বকে ফোস্কা পড়তে পারে এবং পরবর্তীতে ত্বকের চামড়া উঠতে পারে।
ত্বকের যত্ন নেওয়ার উপায়:
১. নিয়মিত ময়েশ্চারাইজিং:
শীতকালে ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়ার কারণে নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত। আপনি অ্যালো ভেরা, নারিকেল তেল বা গ্লিসারিন ব্যবহার করতে পারেন, যা ত্বককে আর্দ্র রাখবে এবং শুষ্কতা প্রতিরোধ করবে।
২. পর্যাপ্ত পানি পান করুন:
পানিশূন্যতা এড়াতে প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। এতে ত্বক সুস্থ ও কোমল থাকবে এবং পিলিংয়ের সমস্যা কমবে।
৩. সঠিক প্রসাধনী ব্যবহার:
ত্বকের জন্য সঠিক স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করুন, যা কেমিক্যাল মুক্ত এবং ত্বকের জন্য উপযোগী। আলাদা আলাদা ত্বক (যেমন: শুষ্ক ত্বক, তৈলাক্ত ত্বক) অনুযায়ী উপযুক্ত প্রসাধনী নির্বাচন করুন।
৪. সানস্ক্রিন ব্যবহার:
রোদে বাইরে যাওয়ার আগে সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। এতে ত্বক রোদ থেকে সুরক্ষিত থাকবে এবং ত্বকে পিলিং হতে কম হবে।
৫. খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন:
শীতে ত্বকের সঠিক যত্ন নেওয়ার জন্য খাদ্যাভ্যাসও গুরুত্বপূর্ণ। ভিটামিন-সি ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার খান, যেমন- লেবু, শসা, গাজর, এবং পর্যাপ্ত ফ্যাট গ্রহণের জন্য বাদাম এবং তেলযুক্ত খাবার।
৬. নিয়মিত ত্বক পরিষ্কার করুন:
ত্বকের পরিচর্যা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে, অতিরিক্ত স্ক্রাবিং বা পরিষ্কার না করা উচিৎ, কারণ এতে ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। হালকা ক্লিনজার ব্যবহার করে ত্বক পরিষ্কার করুন।
—