এস এল টি তুহিন (বরিশাল) : আওয়ামী লীগ সরকারের টানা তিন মেয়াদকালে বরিশালসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলের প্রত্যন্ত পল্লী অঞ্চলসহ এমন কোন স্থান নেই যেখানে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুরদর্শীতায় দক্ষিণাঞ্চলবাসীর জন্য সবচেয়ে বড় উপহার হচ্ছে স্বপ্নের পদ্মা সেতু। দেশ-বিদেশের শত ষড়যন্ত্রকে মোকাবেলা করে নিজ অর্থে দক্ষিণাঞ্চলবাসীর জন্য প্রধানমন্ত্রী উপহার দিয়েছেন পদ্মা সেতু।
এছাড়াও পায়রা সমুদ্র বন্দর, পায়রা তাপবিদ্যুত কেন্দ্র, দেশের সর্বদক্ষিণের সাগরকন্যা কুয়াকাটা পর্যন্ত ফেরিবিহীন সহজ যোগাযোগসহ প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের সড়ক উন্নয়ন, রক্ষণাবেক্ষণ, ব্রিজ, কালভার্ট, ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় সাইক্লোন সেল্টার, বিদ্যালয় ভবন, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স, উপজেলা কমপ্লেক্স ও ইউনিয়ন পরিষদের ভবন নির্মাণ, হাট-বাজার উন্নয়ন, ক্ষুদ্রাকার পানিসম্পদ উন্নয়নমূলক প্রকল্প বাস্তবায়ন, কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, মডেল মসজিদ নির্মানসহ অসংখ্য উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশাপাশি ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের ভাঙ্গা থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত ফোরলেনের কাজসহ আরো অসংখ্য উন্নয়নমূলক কাজ চলমান থাকায় উন্নয়নের জোয়ারে ভাসছে বরিশালসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চল।
আর এ কারণেই দক্ষিণাঞ্চলের আওয়ামী লীগের একমাত্র অভিভাবকখ্যাত বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ এমপি তার প্রতিটি সভা-সমাবেশে বলে থাকেন, দেশে হয়তো আরো অনেক প্রধানমন্ত্রী আসবে ও যাবে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার মতো সাহসী এবং উন্নয়ন নিয়ে স্বপ্ন দেখা প্রধানমন্ত্রীকে একবার হারালে আর পাওয়া যাবেনা।
নদীবেষ্টিত দক্ষিণাঞ্চল স্বাধীনতার পরবর্তী সময় থেকে ছিল অনুন্নত ও অবহেলিত। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টির কারণে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলে যে উন্নয়নযজ্ঞ শুরু হয়েছে তার সুফল আসতে শুরু করেছে। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের মেগা প্রকল্পের মাধ্যমে দ্রুত পাল্টে গেছে নদীবিধৌত দক্ষিণাঞ্চলবাসীর জীবনমান। এতোদিনের বইয়ের পাতার উদাহরণকে পাল্টে দিতে ভাঙ্গা-বরিশাল ও কুয়াকাটা পর্যন্ত রেললাইনের সম্ভাব্যতা যাচাই শেষ হয়েছে। একই রুটে ফোরলেনের জমি অধিগ্রহণ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
বিমান বাহিনীর রাডার স্টেশন ও শেখ হাসিনা সেনানিবাস স্থাপিত হয়েছে বরিশালে। সবকিছু মিলিয়ে উন্নয়নের মহাযজ্ঞে একসময়ের অবহেলিত জনপদ দক্ষিণাঞ্চলে এখন জমির দাম পূর্বের চেয়ে কয়েক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী কয়েক বছরেই বরিশাল দেশের অন্যতম শিল্প-বাণিজ্যের প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হবে। এজন্য আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পূনরায় আওয়ামী লীগ সরকারকে নির্বাচিত করার দাবি তুলেছেন ব্যবসায়ী, অর্থনীতিবিদ ও রাজনীতিবিদরা।
একান্ত সাক্ষাতকারে বরিশাল-১ আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের আশ্রয়স্থল আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের টানা তিন মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদক্ষ পরিকল্পনায় শুধু দক্ষিণাঞ্চল নয়; পুরো বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে।
দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে ঠিক তখই এদেশের স্বাধীনতা বিরোধী নিন্দুকেরা তা সহ্য করতে না পেরে উন্নয়নের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে তৎপর হয়ে উঠেছে। আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ আরও বলেন, শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় থাকলেই দেশের সার্বিক উন্নয়ন হয়। তাই দেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবারও আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনতে হবে। নতুবা চলমান অসমাপ্ত সকল উন্নয়ন কাজ থমকে যাবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিকতায় ইতোমধ্যে বরিশালসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলের উল্লেখযোগ্য উন্নয়নের কথা তুলে ধরে বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, বর্তমান সরকারের সময়ে বরিশালে দোয়ারিকা-শিকারপুর সেতু, বরিশাল পৌরসভাকে সিটি করপোরেশনে উন্নতীকরণ, বিমান বন্দর ও বরিশাল শিক্ষাবোর্ড চালুকরণ, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, বাকেরগঞ্জে শেখ হাসিনা সেনানিবাস, বিমান বাহিনীর রাডার স্টেশন, শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, টিচার্স ট্রেনিং কলেজ এবং আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম স্থাপন, শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত সেতু, চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত ভবন নির্মান, বিভাগীয় শিল্পকলা একাডেমি কমপ্লেক্স নির্মান, আমানতগঞ্জে দুইশ’ শয্যা বিশিষ্ট শহীদ সুকান্ত বাবু শিশু হাসপাতাল, গড়িয়ারপাড়ে ১৩২ কেভি বিদ্যুত উপকেন্দ্র, শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে এক হাজার বেডে উন্নতীকরণ, মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স্থাপন, স্বতন্ত্র মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, গৌরনদী ও উজিরপুরকে পৌরসভায় উন্নতীকরণ, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট, কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মান, মেডিকেল টেকনোলজী ট্রেনিং সেন্টার, অসংখ্য স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসার ভবন নির্মান করা হয়েছে।
এছাড়াও বর্তমানে ভাঙ্গা থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত ফোরলেন সড়কের কাজ চলমান রয়েছে। একইসাথে এতোদিনের বইয়ের পাতার উদাহরনকে পাল্টে দিতে ভাঙ্গা-বরিশাল ও কুয়াকাটা পর্যন্ত রেললাইনের সম্ভাব্যতা যাচাই শেষ হয়েছে। পাশাপাশি গ্রামীণ সড়কগুলো পাকা করণের ফলে কৃষি উৎপাদন, শিক্ষা-স্বাস্থ্য, দারিদ্রমুক্তি ও গ্রামীণ অর্থনীতির আমূল পরিবর্তন হয়েছে। সরকারের বিভিন্ন ধরনের ভাতার আওতায় আসায় সচ্ছলতা ফিরে এসেছে হতদরিদ্রদের মাঝে। ফলে ব্যাপক উন্নয়ন কার্যক্রমের সুফল পাচ্ছে বরিশালসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলবাসী।
জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত ও বরিশাল জেলার দুইবারের শ্রেষ্ঠ পদকপ্রাপ্ত মাহিলাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈকত গুহ পিকলু বলেন, ১৯৯৬ সালে প্রথম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার গঠনের পর পরই বরিশাল-১ (গৌরনদী-আগৈলঝাড়া) নির্বাচনী এলাকা থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য আলহাজ আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ জাতীয় সংসদের চীফ হুইপ নির্বাচিত হন। এরপর থেকেই দীর্ঘদিনের ভাগ্যবঞ্চিত দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নের চিত্র পাল্টে যেতে শুরু করে। পরবর্তীতে ২০০১ সালে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর সকল উন্নয়নমূলক কর্মকা- থমকে যায়। উল্টো আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ চীফ হুইপ থাকাকালীন সময়ে গৌরনদী ও আগৈলঝাড়া উপজেলার জন্য বরাদ্দকৃত বিদ্যুত বিপণন কেন্দ্রটিও সিলেটে সরিয়ে নেয়া হয়। দীর্ঘদিন উন্নয়ন বঞ্চিত হয় বরিশালসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলবাসী। পরবর্তীতে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে এবং সংসদ সদস্য আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর ঐক্লান্তিক প্রচেষ্টায় ধীরে ধীরে দক্ষিণাঞ্চলে উন্নয়নের গতি বৃদ্ধি পায়।
দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহত বাণিজ্যিক বন্দর টরকীর ব্যবসায়ী মোঃ আল-আমিন হাওলাদার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুরদর্শী স্বপ্ন বাস্তবায়নে এবং উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রাই বলে দিচ্ছে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর হাত ধরে দক্ষিণাঞ্চলের প্রতিটি আসন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উপহার দেওয়া সম্ভব হবে। আর আগামীতেও বিপুল ভোটের ব্যবধানে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সরকার গঠণ করবে।
বরিশাল জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দা মনিরুন নাহার মেরী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার উন্নয়নের সরকার। শেখ হাসিনা যতোবার ক্ষমতায় এসেছে, ততোবার দেশের সাধারণ মানুষের জীবন যাত্রার মান পরিবর্তন হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বরিশাল আওয়ামী লীগের একমাত্র অভিভাবক আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ এমপি সব সময় দক্ষিণাঞ্চলবাসীর ভাগ্য উন্নয়ন নিয়ে ভাবেন। তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় গোটা দক্ষিণাঞ্চল আজ উন্নয়নের জোয়ারে ভাসছে।
বরিশাল বিভাগ উন্নয়ন ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আতিকুর রহমান আতিক বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুরদর্শী উন্নয়ন ভাবনা বাস্তবায়নে বরিশাল আওয়ামী লীগের অভিভাবক আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ এমপির কঠোর নির্দেশনায় খুব অল্পসময়ের ব্যবধানে দক্ষিণাঞ্চলের পুরনোদিনের চেহারা পাল্টে গিয়ে নতুনরূপে সেজেছে। এজন্যই আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ এমপিকে বলা হয় বরিশালের উন্নয়নের রূপকার। তিনি আরও বলেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা মার্কার প্রার্থীদের নির্বাচিত করার মাধ্যমে বর্তমান সরকারের অসমাপ্ত কাজগুলো সমাপ্ত করতে হবে।