বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (শেবাচিম) এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি পরিচ্ছন্ন এবং শৃঙ্খলিত হয়ে উঠেছে। সকাল বেলা এখন আর হকারদের ভিড় কিংবা যানবাহনের জটলা দেখা যায় না। দুপাশের মাঠে ময়লা আবর্জনার স্তূপও নেই। হাসপাতালের ভিতরে দেয়াল, ফ্লোর এবং সিঁড়িতে পান-সিগারেটের দাগও দেখা যাচ্ছে না। চমৎকার পরিচ্ছন্ন পরিবেশে রোগী ও তাদের স্বজনদের চোখে স্বস্তির অনুভূতি স্পষ্ট। তবে, বাইরের পরিবেশ কিছুটা উন্নত হলেও, কিছু অনিয়ম এখনও হাসপাতালের ভিতরে বিদ্যমান।
মঙ্গলবার ( ৩১ ডিসেম্বর ) সকালে সরেজমিনে ঘুরে শেবাচিমে এই পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। তবে, এখানকার কিছু বিভাগে এখনও অনিয়ম পরিলক্ষিত হয়। বিশেষত টিকিট কাউন্টার, মেডিসিন, ক্যান্সার এবং চক্ষু বিভাগে অব্যবস্থাপনা চলছে। এসব বিভাগের প্রধানরা এখনও পুরনো সরকারের মনোনীত লোকজন, এবং টেকনোলজিস্টের অভাবে অনেক গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসার যন্ত্রপাতি অকেজো হয়ে পড়েছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সংকটের সুযোগে অযোগ্যরা এসব বিভাগ দখল করে রেখেছে।
হাসপাতালের চত্বর ঘুরে দেখা যায় টিকিট কাউন্টারেও কিছু অনিয়ম চলছে। এখানে মোট সাতটি কাউন্টার থাকার কথা, কিন্তু টিকিট বিক্রি করছেন মাত্র চারজন। টিকিটের মূল্য ১০ টাকা, তবে ভর্তি রোগীদের জন্য ১৫ টাকা লেখা রয়েছে দেয়ালে। অনেক রোগী তাদের অবস্থা জানানোর পরেও সঠিকভাবে পরিষেবা পাচ্ছেন না। কিছু দিন আগে, একটি কাউন্টারে একটি মহিলাকে ২০ টাকা নেওয়ার পর টাকা ফেরত দেওয়া হয়নি। টিকিট কাউন্টার এবং পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের মাঝে স্বজনপ্রীতির কারণে রোগীরা ক্ষুব্ধ হচ্ছেন।
এছাড়া, হাসপাতালের ভিতরে রোগী ও স্বজনদের কিছু অসচেতনতাও লক্ষ্য করা গেছে। পিক বা থুথু যত্রতত্র ফেলছে তারা, এবং তাদের অভিযোগ, ডাস্টবিনের অভাবে এমনটি হচ্ছে। রোগী ও স্বজনদের পরামর্শ অনুযায়ী, টিকিট কাউন্টার হাসপাতাল ভবনের বাইরে সরিয়ে নেয়া হলে সুবিধা হতো। এছাড়া, হাসপাতাল চত্বরে আরও পাবলিক টয়লেট এবং সড়ক সংলগ্ন টিকিট কাউন্টার স্থাপন করা যেতে পারে।
বরিশালের সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা মনে করেন, হাসপাতালের শৃঙ্খলা ফেরানোর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সংকট দূর করা হলে, হাসপাতালের কার্যক্রম আরও উন্নত হবে। এ বিষয়ে শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মশিউল মুনীর বলেন, “বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এবং টেকনোলজি সমস্যা দূর করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। আমি যত দ্রুত সম্ভব এই সমস্যাগুলি সমাধান করব।”
মো: তুহিন হোসেন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম