বরিশাল অফিস :: দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহত চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবামেক) হাসপাতালের পরিচালক হিসেবে সেনা কর্মকর্তা নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীসহ সর্বস্তরের সচেতন মানুষ। বৃহস্পতিবার কলেজ প্রাঙ্গণে গিয়ে দাবি সংবলিত পোস্টার এবং ব্যানার লাগানো দেখা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মূলত হাসপাতালকে অনিয়ম-অব্যবস্থাপনার হাত থেকে রক্ষা করতেই এমন দাবি করা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি হাসপাতাল পরিচালনার সাথে জড়িত প্রশাসনের কোন কর্মকর্তারা। সূত্রমতে, এর আগে গত রোববার ইন্টার্ন চিকিৎসক ও মেডিকেল শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে শেবামেকের পরিচালক ডাঃ এইচএম সাইফুল ইসলাম পদত্যাগ করেছেন। এরপর থেকেই সেনাবাহিনী থেকে পরিচালক নিয়োগের দাবি উঠেছে।
শেবামেকের এমবিবিএস পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী আরাফাত রহমান বলেন, বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কোনো শিশুর জন্ম হলে টাকা ছাড়া নবজাতকের মুখ দেখতে পারেন না বাবা-মা। প্রতিটি পদে পদে দালালদের টাকা দিতে হয় এবং একটা সিন্ডিকেট পরিচালকদের থেকে শুরু করে সবাইকে নিয়ন্ত্রণ করে। এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণে সেনাবাহিনীর কোনো কর্মকর্তাকে পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেয়ার জন্য সর্বমহলে জোর দাবি উঠেছে।
তিনি আরো বলেন, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অবস্থা শেবামেকের চেয়েও খারাপ ছিল। সেখানে সেনবাহিনীর সদস্যকে দায়িত্ব দেবার পর সেবার মান আমূল পাল্টে গেছে। এমন উদাহরণ আরো আছে। তাই দক্ষিণাঞ্চলের সেবাপ্রত্যাশী কোটি মানুষের কথা চিন্তা করে সেনাবাহিনীর একজন দক্ষ কর্মকর্তাকে শেবাচিমের দেওয়া উচিত।
শেবামেকের অসংখ্য শিক্ষার্থীরা বলেন, বিগত দিনগুলোতে দেখা গেছে যেসব চিকিৎসকেরা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তারা সিন্ডিকেট নির্ভর হয়ে পরেছিলেন। সেসব সিন্ডিকেটের সঙ্গী হয়ে নানা অনিয়ম ও বিতর্কের জন্ম দিলেও তারা হাসপাতালের কাঙ্খিত উন্নয়ন ঘটাতে পারেন নি। তাই আমরা এবার পরিচালক হিসেবে একজন সেনা কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেবার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।
হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক ডাঃ হেদায়েত উল্লাহ বলেন, বিগত দিনে হাসপাতালে যেমন অনিয়ম, দুর্নীতি এবং চিকিৎসকদের নিরাপত্তাহীনতার চিত্র দেখা গেছে এখন আর কেউ তার পুনরাবৃত্তি দেখতে চায় না। তিনি আরও বলেন, যেহেতু বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের নিয়োজিত করে চোখে পরার মতো উন্নয়ন ও সংস্কার হয়েছে, তাই তাদেরও দাবি শেবাচিমের পরিচালক হিসেবে যেন একজন সেনা কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়।