শিরোনাম

ষষ্ঠীপূজার মধ্য দিয়ে শুরু হলো শারদীয় দুর্গোৎসব

Views: 32

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক :: ষষ্ঠীপূজার মধ্য দিয়ে শুরু হলো হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। পাঁচ দিনের এ উৎসব আনন্দমুখর করে তুলতে নানা আয়োজন করেছেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। মণ্ডপে মণ্ডপে হবে দেবী দুর্গার আরাধনা।

আজ বুধবার (০৯ অক্টোবর) সকাল থেকেই মণ্ডপে মণ্ডপে বেলগাছের নিচে শুরু হয় ষষ্ঠীবিহিত পূজা। মন্ত্রপাঠে হয় দেবী আবাহন।

সরকারি ছুটির দিন না হওয়া সত্ত্বেও এসময় মন্দিরগুলোতে সমবেত হয় হিন্দুধর্মাবলম্বীরা। তাদের বিশ্বাস, এদিনই কৈলাশ থেকে দেবী মর্ত্যে তার বাপের বাড়িতে এসে পৌঁছান।

সমবেতদের প্রত্যাশা, এবার নির্বিঘ্নেই এই মহোৎসব উদযাপন করতে পারবেন তারা।

এবার সারাদেশে দুর্গাপূজা হচ্ছে ৩১ হাজার ৪৬১টি মণ্ডপে, যা গতবারের চেয়ে ৯৪৭টি কম। বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ ও মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির হিসাব অনুযায়ী, এবার দেশে ৩১ হাজার ৪৬১টি মণ্ডপ ও মন্দিরে শারদীয় দুর্গাপূজা হচ্ছে। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ৩২ হাজার ৪০৮। তবে ঢাকা মহানগরে এবার চারটি পূজামণ্ডপ বেড়ে ২৫২টি হয়েছে, যা গত বছর ছিল ২৪৮টি।

উল্লেখ্য, ১৩ অক্টোবর বিজয়া দশমীর ছুটি। দুর্গাপূজা উপলক্ষে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সরকারি ছুটি ঘোষণা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। ফলে মাঝখানের শুক্র ও শনিবার মিলিয়ে এবার দুর্গাপূজায় চার দিনের ছুটি মিলছে।

দুর্গোৎসব উপলক্ষে পৃথক বাণীতে রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস হিন্দু ধর্মাবলম্বীসহ দেশবাসীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। এ ছাড়া শুভেচ্ছা জানিয়েছেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটিসহ হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা।

মহাষষ্ঠী আজ-
শারদীয় দুর্গোৎসবের প্রথম দিন মহাষষ্ঠী আজ। সকাল ৯টা ৫৭ মিনিটের মধ্যে দেবীর ষষ্ঠ্যাদি কল্পারম্ভ ও ষষ্ঠীবিহিত পূজা শুরু হবে। সায়ংকালে দেবীর আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মধ্য দিয়ে শুরু হবে মূল দুর্গোৎসব। এর আগে ২ অক্টোবর দেবী দুর্গার আবাহন বা মহালয়ার মধ্য দিয়ে সূচনা হয় দেবীপক্ষের। সাধারণত দেবীপক্ষ শুরুর সাত দিন পর দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিক সূচনা ঘটে। মঙ্গলবার মহাপঞ্চমীতে সন্ধ্যায় দেবীর বোধন হয়। এর মাধ্যমে দক্ষিণায়নের নিদ্রিত দেবী দুর্গার নিদ্রা ভাঙার জন্য বন্দনাপূজা করা হয়। এ সময় চণ্ডীপাঠে মুখর ছিল মণ্ডপ-মন্দির।

নির্ঘণ্ট অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) দুর্গোৎসবের মহাসপ্তমী। এর পর শুক্রবার মহাষ্টমী ও কুমারীপূজা এবং শনিবার মহানবমী। তবে পঞ্জিকামতে, শনিবার মহানবমী পূজার পরই দশমীবিহিত পূজা হবে। আর রোববার বিজয়া দশমীর মধ্য দিয়ে উৎসব শেষ হবে। ওই দিন বিকেলে বিজয়ার শোভাযাত্রা করে প্রতিমা বিসর্জন দেয়া হবে।

পূজার প্রতিদিনই মণ্ডপে অঞ্জলি, প্রসাদ বিতরণ ও ভোগ-আরতির আয়োজন রয়েছে। দুর্গোৎসব চলাকালে দেশজুড়ে মণ্ডপে মণ্ডপে আলোকসজ্জা, আরতি, স্বেচ্ছায় রক্তদান, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোচনা সভা, নাটক, নৃত্যনাট্যসহ বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।

সনাতন বিশ্বাস ও পঞ্জিকামতে, জগতের মঙ্গল কামনায় দেবী দুর্গা এবার দোলায় (পালকি) চড়ে স্বর্গালোক থেকে মর্ত্যলোকে আসবেন।
যার ফল হলো– এবার মড়ক, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, রোগ ও মহামারি বাড়বে। দেবী স্বর্গালোকে ফিরবেন গজে (হাতি) চড়ে। যার ফল হিসেবে বসুন্ধরা শস্যপূর্ণা হয়ে উঠবে।

পুরাণমতে, রাজা সুরথ প্রথম দেবী দুর্গার আরাধনা শুরু করেন। তিনি বসন্তে এই পূজার আয়োজন করায় একে বাসন্তীপূজা বলা হয়। কিন্তু রাবণের হাত থেকে সীতাকে উদ্ধার করতে লঙ্কাযাত্রার আগে রামচন্দ্র দেবীর পূজার আয়োজন করেন শরৎকালের অমাবস্যা তিথিতে, যা শারদীয় দুর্গোৎসব নামে পরিচিত। শরৎকালের পূজাকে এ জন্য অকাল বোধনও বলা হয়।

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *