বরিশাল অফিস :: পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকে বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কে যানবাহনের চাপ যেমন বেড়েছে দ্বিগুণ। ফলে ঢাকা -বরিশাল নৌ-রুটের কমেছে যাত্রীদের সংখ্যা। বিলাসবহুল বেশ কয়েকটি লঞ্চ বন্ধ হয়ে গেলে বাকিরা রোটেশন করে কোনোভাবে টিকে আছে।
পদ্মা সেতু পার হয়ে বরিশাল থেকে ঢাকামুখী মানুষের স্রোত মহাসড়কে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মোটরসাইকেলের সংখ্যা । যাতে করে প্রতিদিন সড়ক দুর্ঘটনায় ঝরছে প্রাণ আর ঢাকা-বরিশাল ও কুয়াকাটা মহাসড়ক এখন পরিণত হয়েছে মরণফাঁদে। তাই সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু ঝুঁকি এড়াতে বরিশাল -ঢাকা নৌপথে লঞ্চ চলাচলের উপরে আবারও নির্ভর হতে চায় সাধারণ যাত্রীরা ।
তাদের দাবি,বরিশাল থেকে লঞ্চ ভোর ৫ টায় ঢাকার উদ্দেশ্য ছেড়ে গিয়ে দিনে যেয়ে আবার সন্ধ্যায় ৬ টায় বা সকাল ১০ টার মধ্যে ঢাকা পৌঁছাতে এবং রাতেই বরিশালে ফিরে আসতে । তিন থেকে চার ঘন্টায় বরিশাল- ঢাকা থেকে পুনরায় বরিশাল হতে হবে লঞ্চ সার্ভিস ।
বরিশালের নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনালের কাউন্টার ম্যানেজার আল আমিন সিকদার বলেন, বর্তমান সময়ে বেশিভাগ যাত্রীরা বরিশাল থেকে সকালে ঢাকার উদ্দেশ্য রহণা দিয়ে আবার সন্ধ্যায় ফিরে আসার চেষ্টা করেন, বেশিরভাগই সন্ধ্যার ফিরতি টিকিট কেটে রাখেন তাই সকাল সন্ধ্যা যাত্রী চাপ অনেক বেশী থাকে ।
বরিশাল থেকে ঢাকামুখী মেহেদী হাচান নামের এক মোটরসাইকেল চালক জানান, আমার অফিসের জরুরী মিটিংয়ের প্রয়োজনে ঢাকা যাচ্ছি। বিকেলের মধ্যে আবারও বরিশালে ফিরে আসতে হবে। তবে ঢাকা যাওয়ার পথে পোস্তগোলা ও হানিফ ফ্লাইওভারেই যানজটে আটকে যেয়ে কয়েকঘন্টা এতে কেটে যায়ে এতে করে অনেক ভোগান্তিসহ সময় নষ্ট হয়।
তিনি জানান,বরিশাল-ঢাকা নৌপথে সকাল থেকেই দিনে লঞ্চ চলাচল হলে মোটরসাইকেল বহনের সুবিধা থাকলে ও ভাড়া সহনীয় ভাবে করে দিলে সাধারণ যাত্রীদের অনেক আংশেই ভিড় হবে লঞ্চে। কোন রকমের যানজটে ভোগান্তি ছাড়াই ঢাকায় পৌঁছাতে পারবেন যাত্রীরা ।
সুন্দরবন নেভিগেশন কোম্পানির চেয়ারম্যান ও লঞ্চ মালিক সমিতির সহ সভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু জানান,’সড়ক দুর্ঘটনা যে হারে বাড়ছে তাতে যাত্রীরা পুনরায় লঞ্চ নির্ভর হবে বলে আমি আশাবাদী। দিনের বেলায় লঞ্চ চলাচলে আমাদের আপত্তি নেই।’আমরা ধরে নিয়েছিলাম পদ্মা সেতু চালুর পর দক্ষিণাঞ্চলের নৌপথে যাত্রী কমবে আসবে। তবে এতে লোকসানে পড়তে হয়নি আমাদের লঞ্চ ব্যবসায়ীদের। যাত্রী সংকট অন্যদিকে তেলের মূল্য বৃদ্ধি হওয়ায় ঝালকাঠি রুটে সুন্দরবন-১২ লঞ্চটি বন্ধ রাখা হয়েছে। ওই রুটটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। শুধু ঝালকাঠি রুট না এমন বেকায়দা দক্ষিণাঞ্চলের সব রুটে।’লঞ্চ মালিকরা অনেকেই লঞ্চ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এমতাবস্থায় দিনের আলোতে লঞ্চ চলাচলের ঝুঁকি কেউ নিতে চায় না।’তবে আমি বিষয়টি নিয়ে সমিতির বৈঠকে আলোচনা করবো। পরীক্ষামূলক সকাল ছয়টা থেকে চালানো যায় কিনা দেখবো’।
বিআইডব্লিউটিএ‘র চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফা বলেন,’সকাল ৬টা থেকে লঞ্চ চলাচল ও মোটরসাইকেল বহন করায় বিআইডব্লিউটিএ এর পক্ষ থেকে কোন নিষেধাজ্ঞা বা বিধিনিষেধ নেই। তবে লঞ্চ মালিকরা যদি মনে করেন তারা দিনে চালাবেন তাহলে শুধু আমাদের কাছে আবেদন করলেই হবে’।