মো: আল-আমিন (পটুয়াখালী): দীর্ঘ দুই বছর ধরে বিছানায় পড়ে আছেন জুয়েল (১৯)। খেতে না পারা, বারবার বমি-পায়খানা করে দিন দিন নিস্তেজ হয়ে পড়ছে তার শরীর। অর্থের অভাবে ভালো চিকিৎসা এমনকি রোগটাও শনাক্ত করতে পারেনি পরিবার। এখন সরকার ও সামর্থ্যবানদের দিকে তাকিয়ে আছেন তারা।
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার লতাচাপলী ইউনিয়নের গঙ্গামতি গ্রামের শ্রবণ প্রতিবন্ধী মো. ইউসুফের ছেলে জুয়েল (১৯)। চার ভাইবোনের মধ্যে দ্বিতীয় সে।
জানা যায়, ২০২১ সালে হঠাৎ করেই পেটে ব্যথা, বমি, হঠাৎ অসুস্থ হয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলাসহ নানা সমস্যা শুরু হয় জুয়েলের। অক্ষর জ্ঞানহীন বাবা-মা ছেলের সুস্থতার জন্য নিজেদের সর্বশেষ থাকা সম্বল নিজের বাড়ির গাছ, হাঁস-মুরগি ও দশটি ছাগল বিক্রি করে দেয়। তাতেও ছেলে সুস্থ হচ্ছে না। স্থানীয় কিছু যুবক জুয়েলের চিকিৎসার জন্য মানুষের কাছে সাহায্য চেয়ে বেড়াচ্ছে।
জুয়েলকে সহযোগিতার উদ্যোগ নেওয়া জুয়েল রানা বলেন, ‘ঢাকা পিজি হাসপাতালের ডাক্তার বলেছে, লিভার ও খাদ্যনালিজনিত সমস্যার কারণে ওর শরীর দিন দিন নিস্তেজ হচ্ছে। দুই বছর ধারাবাহিক চিকিৎসা করালে কিছুটা সুস্থ হবে।’
জুয়েলের বাবা ইউসুফ বলেন, ‘আমি কানে শুনি না, তাই আমাকে অনেকে কাজে নিতে চায় না। মানুষের কাছে গিয়ে হাত পাতি ওর চিকিৎসার জন্য।’
জুয়েলের মা লাইলী বেগম বলেন, ‘আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী সবার কাছে হাত পেতে সংসার চালাই। ছেলের চিকিৎসার জন্য যখন যে যা বলে সেই পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করেছি। কিন্তু ছেলেটা সুস্থ হচ্ছে না। আল্লাহর কাছে বলি ছেলেকে সুস্থ দেখে যেন মরতে পারি।’
কুয়াকাটা ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার সৈয়দ আশিকুর রহমান বলেন, জুয়েলের শারীরিক অবস্থা দেখে প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে তার খাদ্যনালিতে বড় ধরনের সমস্যা হচ্ছে। ওর লম্বা সময় চিকিৎসা দরকার।’
পটুয়াখালী জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক শিলা রানী দাস বলেন, ‘এ ধরনের রোগীদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে উপজেলা কার্যালয় অথবা জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত আবেদন করলে আমরা বিষয়টি দেখে ব্যবস্থা নেব।’