বরিশাল অফিস :: দেশে ব্যাপক হারে বেড়েছে সাইবার অপরাধ। দেশের মোট অপরাধের ১১.৮৫ শতাংশই এখন সাইবার অপরাধ। আর এ অপরাধগুলোর আক্রান্তদের মধ্যে ৫৯ শতাংশই নারী।
‘সিক্যাফ সাইবার অপরাধপ্রবণতা-২০২৪’ প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে সাইবার অপরাধ তালিকায় শীর্ষে রয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও অনলাইন অ্যাকাউন্ট হ্যাকিং, যা মোট অপরাধের ২১ দশমিক ৬৫ শতাংশ। ভুক্তভোগীদের ৭৮ দশমিক ৭৮ শতাংশের বয়স ১৮-৩০ বছরের মধ্যে।
শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশন (সিক্যাফ) আয়োজিত এক সেমিনারে প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ সাইবার অপরাধপ্রবণতা-২০২৪’ প্রতিবেদনে এ গবেষণার ফলাফল তুলে ধরা হয়।
গবেষণায় ২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল থেকে ২০২৪ সালের ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত ১৩২ জন ভুক্তভোগীর সাক্ষাৎকার নিয়ে সাইবার অপরাধ বিশ্লেষণ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ৫ বছরের মধ্যে গত বছর দেশে সাইবার জগতে পর্নোগ্রাফি অপরাধ প্রবণতা বেড়েছে। ভুক্তভোগীদের ১১ দশমিক ৩৫ শতাংশ এ ধরনের অপরাধে আক্রান্ত হয়েছেন। তবে ১৮ বছরের কম বয়সী শিশুদের ওপর সাইবার আক্রমণের হার কমে ১৩ দশমিক ৬৫ শতাংশে নেমে এসেছে।
ভুক্তভোগীদের মধ্যে ৪৭ দশমিক ৭২ শতাংশ সামাজিক মর্যাদাহানী, ৪০ দশমিক ১৫ শতাংশ আর্থিক ক্ষতির শিকার এবং প্রায় সবাই মানসিক যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে গেছেন। এদের মধ্যে মাত্র ১২ শতাংশ আইনের আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের মধ্যে ৮১ দশমিক ২৫ শতাংশ সাধারণ ডায়েরি এবং ১৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ লিখিত অভিযোগ করেছেন। তবে ৮৭ দশমিক ৫ শতাংশ ভুক্তভোগীই জানিয়েছেন তারা সন্তুষ্ট হতে পারেননি।
জরিপে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, যারা জালিয়াতির শিকার হয়েছেন তাদের বেশিরভাগই শিক্ষিত। ৪০ দশমিক ৯ শতাংশ উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেছেন, ২১ দশমিক ২১ শতাংশ স্নাতক ডিগ্রিধারী, ১৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ মাধ্যমিক শিক্ষা এবং ১২ দশমিক ৮৭ শতাংশ মাধ্যমিকের নিচে রয়েছেন।
এতে দেখা গেছে, অপরাধের ধরনে বহুমাত্রিকতা যুক্ত হচ্ছে। যার প্রভাবে প্রতিবেদনে ‘অন্যান্য’ ধরনের অপরাধ বেড়েছে আশঙ্কাজনক হারে। এক বছরে এই হার প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক ৮৫ শতাংশে।
প্রতিবেদনে বিশেষজ্ঞরা বে কিছু স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী সুপারিশ করেছেন। যার মধ্যে ইন্টারনেট ব্যবহারে ‘দেখা মাত্রই ক্লিক নয়, যাচাই ছাড়া শেয়ার নয়’- এই চর্চা অব্যাহত রাখা, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কড়া নজরদারি সুনিশ্চিত করা, নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষায় জোর দেওয়া এবং সুরক্ষা লঙ্ঘন হলে তা শনাক্তে প্রযুক্তিগত সক্ষমতা নিশ্চিত করার কথা বলে হয়েছে।