মো:আল-আমিন, পটুয়াখালী: উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হওয়ায় নিরাপদ আশ্রয়ে ঘাটে ফিরতে শুরু করেছে মাছ ধরার শতশত ট্রলার। বৃহস্পতিবার মধ্য রাত থেকে সমুদ্র উত্তাল হওয়ায় পটুয়াখালীর বড় দু’টি মৎস্য বন্দর আলীপুর ও মহিপুরের ঘাটে নিরাপদ আশ্রয় নিতে শুরু করেছে গভীর সমুদ্রে অবস্থানরত জেলেদের মাছ ধরার শত শত ট্রলার।
শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকালে মৎস্য বন্দর দু’টি ঘুরে দেখা গেছে, দেশের বিভিন্ন প্রান্তের জেলেদের ট্রলার আশ্রয় নিচ্ছে এই মৎস্য বন্দরে। তবে উপকূলে ফেরা জেলেদের চোখেমুখে ছিল হতাশার ছাপ। এদিকে, এবার ইলিশের ভরা মৌসুমেও আশানুরূপ ইলিশের দেখা পায়নি জেলেরা। জলবায়ু পরিবর্তন জনিত কারণে ঘন ঘন ঝড় বন্যা ও বৈরী আবহাওয়ার কবলে পরে নিঃস্ব হচ্ছে জেলে মৎস্যজীবীরা।
জেলেরা বলেন, সমুদ্রে গিয়ে যখনই ইলিশ পাচ্ছেন তখনই বৈরী আবহাওয়ার কবলে পরে খালি হাতে ঘাটে ফিরে আসতে হচ্ছে।
এর আগে গত ২৩ জুলাই ৬৫ দিনে নিষেধাজ্ঞা কাটানোর পরে এ পর্যন্ত প্রায় ১০-১২ বার আবহাওয়া খারাপ হয়েছে। এতে এক দিকে লোকসানের মুখে পড়ছে, অন্যদিকে হুমকির মুখে পড়ছে মৎস্য পেশা।
তারা আরও জানান, বছরের বেশির ভাগ সময়ে এভাবে অবরোধ আর আবহাওয়া খারাপ হলে পেশায় টিকে থাকা দায় হয়ে যাবে। লোকসানের মুখে ফিরতে হবে অন্য পেশায়।
এফবি তামান্না ট্রলারের মাঝি ইউনুস মিয়া বলেন, গত রাতে হঠাৎ সমুদ্র উত্তাল হয়ে ওঠে। সমুদ্র টিকতে না পেরে ঘাটে ফিরে আসতে হয়েছে। তিনি আরও বলেন, যে পরিমাণ টাকা খরচ করে সমুদ্রে গিয়েছিলাম তার অর্ধেক টাকার মাছ নিয়ে ঘাটে ফিরতে পারিনি ।
মৎস্যবন্দর আলীপুরের মৎস্য ব্যবসায়ী আব্দুল জলিল ঘরামী বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে আলীপুর মহিপুরের অধিকাংশ ট্রলার ঘাটে ফিরে এসে খাপড়াভাঙ্গা নদীতে নোঙ্গর করেছে। ঘন ঘন বৈরী আবহাওয়া ও নিষেধাজ্ঞার কারণে এ ব্যবসায় ধ্বস নেমেছে।
কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, আকস্মিক আবহাওয়া খারাপ হওয়ার কারণে উপকূলের মাছ ধরা ট্রলারগুলো গভীর সমুদ্রে থেকে ঘাটে ফিরতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে অধিকাংশ ট্রলার ঘাটে ফিরে এসেছে। এখনো অনেক ট্রলার সমুদ্রে রয়েছে। রাতের মধ্যে সব ট্রলার ঘাটে ফিরে আসবে।
পটুয়াখালীর আবহাওয়া কর্মকর্তা মাহবুবা সুখী বলেন, পরবর্তী ২৪ ঘন্টা বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে। দেশের নদীবন্দর গুলোকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। তাই পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত গভীর সমুদ্রে অবস্থানরত সকল মাছধরা ট্রলার ও নৌযানকে উপকূলের কাছাকাছি নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।