আর একটা ম্যাচ। মঞ্চ সেই কমলাপুর বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়াম। প্রতিপক্ষও সেই ভারত। এ ম্যাচ জিতলেই সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা থাকবে বাংলাদেশেই। ২০২১ সালে ভারতকে হারিয়েই বাংলাদেশের মেয়েরা হয়েছিল দক্ষিণ এশিয়ার সেরা।
তিন বছর আগে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথে বাংলাদেশ দুইবার হারিয়েছিল ভারতকে। লিগপর্ব ও ফাইনালের ফল ছিল ১-০। চলতি টুর্নামেন্টে লিগম্যাচেও ভারতকে ১-০ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশের মেয়েরা।
এবার বাংলাদেশের মেয়েদের চোখ দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে ট্রফি নিজেদের কাছেই রেখে দেওয়া। সন্ধ্যা ৬টায় শুরু হবে বাংলাদেশ ও ভারতের মেয়েদের ফাইনালযুদ্ধ। ফাইনাল শেষে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে পুরস্কার বিরতরণ করবেন যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপন এমপি।
বাংলাদেশ নারী ফুটবলে দীর্ঘ সময় প্রধান কোচের দায়িত্ব পালন করেছেন গোলাম রব্বানী ছোটন। বাংলাদেশ মেয়েদের যতগুলো টুর্নামেন্ট জিতেছে সবগুলোই ছোটনের কোচিংয়ে। এই প্রথমবার মেয়েদের কোনো টুর্নামেন্টের ফাইনালে ডাগআউটে থাকবেন অন্য কোচ। তিনি সাইফুল বারী টিটু। ছোটনের নেতৃত্বে আসা ট্রফি অবশ্যই ধরে রাখতে চাইবেন সাইফুল বারী টিটু।
ফাইনালপূর্ব মিডিয়া ব্রিফিংয়ে সাইফুল বারী টিটু বলেন, ‘চার দলের টুর্নামেন্টে প্রতিটি ম্যাচই গুরুত্বপূর্ণ। আর ফাইনালের বিষয়টা ভিন্ন। সব ম্যাচ জেতা মেয়েরা খুব বেশি উজ্জীবিত। ওরা এর আগেও চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। আমার মনে হয় ওদের খুব বেশি কিছু বলতে হবে না। ওরা জানে ওদের কি করতে হবে।’
সেই মঞ্চ, সেই প্রতিপক্ষ-বাংলাদেশের পরিকল্পনা কি থাকছে? জবাবে সাইফুল বারী টিটু বলেন, ‘একটা দলের সাথে দ্বিতীয়বার খেলা হলে দুই কোচের জন্যই সমস্যা সমান। দুই দলেরই সম্ভাবনাও সমান। কারণ দুই দলই প্রতিপক্ষকে চিনে যায় এবং পরস্পর সম্পর্কে ধারনাটাও পায়। আমরা পরস্পরের বিপক্ষে খেলেছি। সবাই অ্যানালাইসিস করার সুযোগ পাবে। ওদের সঙ্গে একজন অ্যানালিস্টও আছে দেখলাম। আর ফাইনালে তো একটা স্নায়ুচাপের বিষয় থাকেই। তবে আমাদের মেয়েদের যতটুকু দেখেছি তাদের বাড়তি কোনও চাপ নেই। তারা ম্যাচটা উপভোগ করতে চায়। প্রথম ম্যাচ প্রতিদ্বন্দ্বীতাপূর্ণ হয়েছে এটায় কোনও সন্দেহ নাই।’
ভারত দলকে শক্তিশালী উল্লেখ করে বাংলাদেশ কোচ বলেছেন, ‘ওদের বেশ কিছু ভালো ফুটবলার রয়েছে। সমশক্তির দলগুলোর মধ্যে যেটা হয়, যারা কম ভুল করবে তারাই জিতবে। আমাদেরর ওই লক্ষ্যটাই থাকবে ভুল যত কম করা যায়। এত কষ্ট করে ফাইনালে এসে সবাই চাইবে শিরোপা জিততে। মেয়েরা তো শিরোপা জিতলে তার স্বীকৃতিও পায়। সে জন্য তারা শিরোপা জয়ের জন্য উদগ্রীব থাকে। আমার ধারনা তারা নিজেদেরর সর্বোচ্চটা দিয়েই চেষ্টা করবে। ভারতের এই দলে অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ খেলা কয়েকজন ফুটবলার রয়েছে। তাদের বিশ্বমানের ফুটবলারদের সঙ্গে মোকাবিলার অভিজ্ঞতা রয়েছে যেটা আমাদের নেই। তবে দল নিয়ে আশাবাদী। আমি মনে করি ফাইনালে আমার কিছুই বলতে হবে না। ওরা জানে ওদের কি করতে হবে। ওরা নিজেদের সর্বোচ্চটা দেওয়ার জন্যই মাঠে নামবে। ওদেরকে আলাদা ভাবে মোটিভেট করার প্রয়োজন নাই।’
বাংলাদেশ ফাইনাল জিতলে অধিনায়ক আফঈদা খন্দকার ‘চ্যাম্পিয়ন অধিনায়কদের’ তালিকায় নাম লিখিয়ে ফেলবেন। আফঈদার জন্য প্রথম ফাইনাল না। তবে অধিনায়ক হিসেবে প্রথম ফাইনাল। কোনো টেনশন এবং চাপ?
জবাবে আফঈদা খন্দকার বলেছেন, ‘ফাইনাল ম্যাচে যতটুকু টেনশন থাকার অতটুকুই আছে। এর বেশি না। আর চাপ নিচ্ছি না। যতটা কঠোর পরিশ্রম করেছি, তার ওপর আত্মবিশ্বাস আছে। এই টুর্নামেন্টে জন্য আমরা এতদিন কঠোর পরিশ্রম করেছি। সেই পরিশ্রমের ওপর আত্মবিশ্বাস রেখেই ফাইনালে মাঠে নামবো। দল জিতলে, আমি জিতবো। আমার টার্গেট দলকে জেতানো। ফাইনালে সুযোগ কম আসবে। যেগুলোআসবে সেগুলো কাজে লাগাতে হবে।’