সিলেটের তেলের খনিতে উত্তোলনযোগ্য মজুদ প্রায় দেড় কোটি ব্যারেল বলে ধারণা করা হচ্ছে। স্লামবার্জার নামক কনসালটেন্ট প্রতিষ্ঠান তাদের রিপোর্টে জানিয়েছে, দৈনিক ৫০০ থেকে ৬০০ ব্যারেল হারে তেল উত্তোলন করা সম্ভব হলে আগামী ১০ বছর পর্যন্ত এই মজুদ উত্তোলন করা যাবে।
সিলেট গ্যাস ফিল্ড কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক, প্রকৌশলী মো. রেজাউল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে নিশ্চিত করেছেন যে, মজুদ আরও বেশি হতে পারে। স্লামবার্জারের রিপোর্ট অনুযায়ী, সিলেটের খনিতে মোট ১৪.৮ মিলিয়ন ব্যারেল (প্রায় দেড় কোটি) উত্তোলনযোগ্য তেল রয়েছে। এতে দৈনিক ৫০০ থেকে ৬০০ ব্যারেল তেল উত্তোলন সম্ভব বলে অনুমান করা হচ্ছে।
এছাড়া, সিলেট-১০ কূপের ১৩৯৭-১৪৪৫ মিটার গভীরতায় তেলের অবস্থান চিহ্নিত করা হয়েছে। পরীক্ষামূলক উৎপাদনের সময় প্রথম দিনে ২ ঘণ্টায় ৭০ ব্যারেল তেল উত্তোলন হয়, যদিও কূপটি বর্তমানে বন্ধ রাখা হয়েছে।
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার জানিয়েছেন, সিলেট-১০ থেকে উত্তোলিত তেলের কোয়ালিটি অত্যন্ত উন্নতমানের। বুয়েট এবং ইস্টার্ন রিফাইনারী কর্তৃপক্ষ তাদের পরীক্ষার পর তেলটি উৎকৃষ্ট মানের বলে প্রতিবেদন দিয়েছে।
এছাড়া, সিলেট-১০ কূপে গ্যাসের তিনটি স্তর পাওয়া গেছে, যার সম্ভাব্য মজুদ ৪৩.৬ থেকে ১০৬ বিলিয়ন ঘনফুট হতে পারে। গ্যাস উত্তোলনের প্রস্তুতি চলছে, তবে পাইপলাইনের অভাবে এখনো উত্তোলন শুরু হয়নি।
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জানিয়ে দেন, পাইপলাইন নির্মাণের কাজ শিগগিরই শেষ হবে এবং ফেব্রুয়ারি মাস থেকে দৈনিক ২০ থেকে ২৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে।
বর্তমানে দেশের গ্যাস ফিল্ডগুলোর উৎপাদন কমে আসছে, এবং আগামী ২০২৬-২০২৭ অর্থবছরে দেশে গ্যাসের চাহিদা ৪৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট ছাড়িয়ে যাবে বলে প্রাক্কলন করা হয়েছে।
বাংলাদেশে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৬৭ লাখ ৬১ হাজার ৩২০ টন জ্বালানি তেল ব্যবহৃত হয়েছে, যার মধ্যে মাত্র ৮ শতাংশ তেল দেশীয় উৎস থেকে এসেছে। বাকি ৯২ শতাংশ আমদানি করা তেল। ডিজেল এবং বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য ব্যবহৃত ফার্নেস অয়েল বর্তমানে দেশের প্রধান জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
মো: তুহিন হোসেন,
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম