চন্দ্রদীপ ডেস্ক : ওয়ানডে বিশ্বকাপের সব থেকে সফল দল বলা হয় অস্ট্রেলিয়াকে। কারণ এই টুর্নামেন্টের সব থেকে বেশি ট্রফি (পাঁচ বার) জয়ী দল তারাই। সর্বশেষ ঘরের মাঠে ২০১৫ বিশ্বকাপের শিরোপা জেতেন অজিরা। ভারতে চলমান বিশ্বকাপেও তারা রয়েছেন দারুণ ছন্দে। এতে করে তৃতীয় দল হিসেবে টিকিট কেটেছেন সেমিফাইনালের।
আজ কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া দ্বিতীয় সেমিফাইনালে মাঠে নামবেন তারা। এই ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ আসরের আরেক শক্তিশালী দল দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে এই ম্যাচে দুই দলের সামনে ভিন্ন লক্ষ্য। অস্ট্রেলিয়ার নজর মিশন হেক্সা পূরণের জন্য আরেক ধাপ এগিয়ে যাওয়ার এবং দক্ষিণ আফ্রিকার লক্ষ্য প্রথম বারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচ খেলার স্বাদ নেওয়ার।
চলতি বিশ্বকাপের অস্ট্রেলিয়াও রাউন্ড রবিন পর্বে ৯টি ম্যাচের মধ্যে ৭টি ম্যাচে জয় পেয়েছিল এবং হেরেছিল ২টি ম্যাচে।
দক্ষিণ আফ্রিকার ফলাফলও একই ছিল তবে অজিদের থেকে নেট রান রেটে এগিয়ে ছিলেন প্রোটিয়ারা। এছাড়া এ আসরে দক্ষিণ আফ্রিকা হেরেছিল ভারত এবং নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে। অন্যদিকে অজিদের দুইটি হার ছিল স্বাগতিক ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেই। প্রথম পর্বের সেই হারের স্মৃতি ভুলে আজ অস্ট্রেলিয়ার নামতে হবে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ঘুরে দাঁড়াতে।
এদিকে চলতি আসরে এর আগে কলকাতার এই মাঠে চারটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্বকাপে এই মাঠে প্রথম ম্যাচে নামে বাংলাদেশ এবং নেদারল্যান্ডস। সে ম্যাচে আগে ব্যাট করে স্কোর বোর্ডে ২২৯ রান জমা করেন ডাচরা। সেই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৪২ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। ফলে সেই ম্যাচে ৮৭ রানের বিশাল জয় তুলে নেই নেদারল্যান্ডস। এই মাঠে দ্বিতীয় ম্যাচে মাঠে নামে বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান। ঐ ম্যাচে আগ ব্যাট করে ২০৪ রান করেন টাইগাররা। সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৭উইকেট হাতে রেখে জয় তুলে নেন বাবর আজমের দল। এই মাঠে তৃতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হয় স্বাগতিক ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা। সেই ম্যাচে আগে ব্যাট করতে নেমে ৩২৬ রান করেন স্বাগতিকরা। সেই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মাত্র ৮৩ রান গুটিয়ে যান প্রোটিয়ারা। ফলে ২৪৩ রানের বিশাল জয় পায় রোহিত-কোহলিরা। এই ম্যাচে শেষ ম্যাচে মাঠে নামে ইংল্যান্ড এবং পাকিস্তান। সেই ম্যাচে আগে ব্যাট করতে নেমে স্কোর বোর্ডে ৩৩৭ রান সংগ্রহ করেন ইংলিশরা। সেই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ২৪৪ রানে অলআউট হয় পাকিস্তান। ফলে ৯৩ রানের বিশাল জয় পান জস বাটলারের দল। এই মাঠে এখন পর্যন্ত ৩৪টি ওয়ানডে ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। সেই ম্যাচে আগে ব্যাট করা দলের জয় ২১টি ম্যাচে। এবং পরে ব্যাট করা দলের জয় ১৩টি ম্যাচে। এই মাঠে গড় রান ২৫৮।
অন্যদিকে এক দিনের এই ফরম্যাটে এ নিয়ে ১০৯ বার মুখোমুখি হয়েছে অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা। তার মধ্যেও এগিয়ে রয়েছেন প্রোটিয়ারা। তারা মুখোমুখি দেখায় ৫৫ ম্যাচ জিতেছে অন্যদিকে অজিদের জয় ৫০। এছাড়া ৩টি ম্যাচ ড্র ও একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছিল। চলতি বিশ্বকাপের শক্তিসামর্থ্যেও এগিয়ে রয়েছেন প্রোটিয়া বাহিনী। তবে তাদের ভাবনা এবার অন্যদিকে। সেটার কারণ হলো—যে কোনো ভাবেই হোক ফাইনালের টিকিট কাটার। ১৯৯২ সালে বিশ্বকাপে প্রথম বারের মতো অংশ গ্রহণ করার পর এবারসহ ৯টি আসরে অংশগ্রহণ করেছে প্রোটিয়ারা। এর মধ্যে পাঁচ আসরেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে তারা (১৯৯২, ১৯৯৯, ২০০৭, ২০১৫ ও ২০২৩)। তবে কোনোবারই ফাইনালে উঠতে পারেনি তারা। এই কারণেই তাদের বিশ্বকাপে চোকার্স বলে ডাকা হয়। তার থেকে মজার বিষয় হচ্ছে পাঁচ সেমিফাইনালের মধ্যে তিন বারই প্রতিপক্ষ হিসেবে পেয়েছে অস্ট্রেলিয়াকে। যার মধ্যে দুই বারই হেরেছে। আর আজকের ম্যাচটি তৃতীয়। দেখার বিষয় অস্ট্রেলিয়া প্রোটিয়াদের বিপক্ষে বৃহস্পতিবার হ্যাটট্রিক জয় তুলে নিয়ে মিশন হেক্সায় এগিয়ে যাবে নাকি প্রোটিয়া নিজেদের প্রথম পূরণ করবে।