পটুয়াখালী প্রতিনিধি :: বঙ্গোপসাগরের তীরঘেঁষা সোনাতলা নদের তীব্র ভাঙনে বিধ্বস্ত-বিপর্যন্ত নীলগঞ্জ ইউনিয়নের গৈয়াতলা গ্রামের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। দুই বছরের ধারাবাহিক ভাঙনে ঝুঁকিপূর্ণ জীবনযাপন ও আমন-সবজি চাষাবাদ বন্ধ হওয়ার শঙ্কায় দিনাতিপাত করছিল ১০ থেকে ১২টি গ্রামের হাজারো কৃষক পরিবার। কোটি টাকা ব্যয়ে বাঁধ নির্মাণ শুরু হওয়ায় নিশ্চিন্ত নীলগঞ্জের মানুষ।
সরেজমিন বিপন্ন বাঁধ এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, সোনাতলা নদের জোয়ারের পানির তীব্র স্রোতের তোড়ে নদে ধসে পড়ছে বাঁধের মাটি।
এমন অবস্থা দেখে আতঙ্কিত গৃহবধূ আয়শা বেগম বলেন, ‘দ্যাহেন, ভাঙা বাঁধের কাছেই আমার বাড়ি। বেড়িবাঁধ ভাঙতে ভাঙতে আমার ঘরের খুব কাছে আইয়্যা পড়ছে। বাঁধ ভাঙার ভয়ে রাইতে পোলা-মাইয়া লইয়্যা ঘুমাইতে পারি না। দ্যাহেন বান্দের অবস্থা, দুই-এ্যাকটা ঢেউ আঘাত করলেই ভাইঙা যাইবে। পানিতে মুহূর্তেই ভাসাইয়া লইয়া যাইবে মোর বাড়িঘর সব।’
তবে বাঁধ সংস্কার কার্যক্রম শুরু হওয়া বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মোটরসাইকেল হাট এবং মা-বাবার দেওয়া এন্টারপ্রাইজের প্রতিনিধি এনায়েত হোসেন বলেন, ‘আমরা এক সপ্তাহ আগে বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু করি। কিন্তু ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে কাজ পরিচালনা করা যাচ্ছিল না। তার পরও আমরা বাঁধের প্রটেকশনের কাজ অব্যাহত রেখেছি।
তবে এখন বৃষ্টিপাত কমেছে। আশা করা হচ্ছে, আগামী ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে আমরা বাঁধের ৮০০ মিটার বাঁধ নির্মাণ সম্পন্ন করতে পারব। বেড়িবাঁধের ওহিদুল মিয়ার বাড়ি থেকে মতলেব সরদারের বাড়ি পর্যন্ত জরুরি ভিত্তিতে বাঁধের কাজ শুরু হয়েছে। পর্যাপ্ত শ্রমিক এবং দুটি এক্সকাভেটর দিয়ে দিনরাত কাজ চলছে।’
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৪৬ পোল্ডারের দায়িত্বরত উপসহকারী প্রকৌশলী বিদ্যা রতন সরকার বলেন, পাঁচটি ধাপে মেসার্স মোটরসাইকেল হাট এবং এবং মা-বাবার দেওয়া এন্টারপ্রাইজ এ মাসেই বাঁধ নির্মাণকাজ শেষ করবে বলে আশা করা যাচ্ছে।