২০২৫ সালে হজে যাওয়ার জন্য নিবন্ধনের শেষ তারিখ ছিল বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর), তবে শেষ দিনেও হজ কোটা পূর্ণ হয়নি। এ বছরও কোটা ফাঁকা রয়ে গেছে। মোট ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জনের জন্য নির্ধারিত কোটা ছিল, যার বিপরীতে প্রাথমিক নিবন্ধন করেছে ৮৩ হাজার ৫৮৭ জন। তবে, সাড়া না পেয়ে তিন দফা সময়সীমা বাড়ানো হয় ধর্ম মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে, তবুও কোটা পূর্ণ হয়নি। গত তিন বছর ধরে এই সংকট চলতে থাকায় হজে জড়িত ব্যবসাগুলোতে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন হজ এজেন্সির মালিকরা।
২০২৩ এবং ২০২৪ সালে দেখা গেছে, কোটা পূর্ণ হওয়ার চেয়ে অনেক কম যাত্রী হজ পালন করেছেন। ২০২৩ সালে কোটা থেকে ৩ হাজার ৯৮০ জন এবং ২০২৪ সালে ৪১ হাজার ৯৪১ জন কম যাত্রী হজ পালন করেন, কিন্তু কোটা ছিল এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন।
হজ একটি পবিত্র ইবাদত হলেও, দিন দিন হজ ব্যবস্থাপনা কঠিন ও ব্যয়বহুল হয়ে উঠেছে। খরচের জন্য অনেকেই নফল উমরার দিকে ঝুঁকছেন, এবং বেসরকারি হজ এজেন্সিগুলোর কাছে নিবন্ধন না করায় তাদের ক্ষতি হয়েছে। এ বছরের হজ প্যাকেজের মূল্য তারতম্য এবং সৌদি কর্তৃপক্ষের নতুন নিয়মগুলির কারণে, হজ ব্যবস্থাপনা আরও জটিল হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তবে, বেসরকারি হজ এজেন্সিগুলোর অভিযোগ, ধর্ম মন্ত্রণালয় ও তাদের মধ্যে দূরত্ব এবং সামনাসামনি আলাপ-আলোচনার অভাবের কারণে কোটা পূর্ণ করা সম্ভব হয়নি। এই পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় একদল বাণিজ্যিক মহল লাভবান হয়েছে, যারা হজকে একটি মৌসুমী ব্যবসা হিসেবে ব্যবহার করছে।
বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ মুফতি অহিদুল আলম বলেন, “হজ একটি বড় ইবাদত, কিন্তু এর সঙ্গে ব্যবসায়িক নজর যুক্ত হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, বিশ্বের অন্যান্য মুসলিম দেশে হজের খরচ কম হলেও, বাংলাদেশে তা অনেক বেশি। সৌদি আরবের ভাড়া, আবাসন এবং অন্যান্য খরচের কারণে বাংলাদেশের হজযাত্রীদের খরচ বেড়ে যাচ্ছে।
এছাড়া, সরকারিভাবে হজ প্যাকেজের খরচ প্রতিবারই বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০১৯ সালে যেখানে খরচ ছিল তিন লাখ ৪৫ হাজার টাকা, সেখানে ২০২৫ সালে তা বেড়ে পাঁচ লাখ ৭৯ হাজার টাকায় দাঁড়িয়েছে। প্লেন ভাড়া এবং সৌদি সরকারের সেবার খরচের কারণে হজের খরচে ব্যাপক বৃদ্ধি ঘটেছে।
মো: তুহিন হোসেন,
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম