চন্দ্রদীপ ডেস্ক : দিনরাত নির্বিচার বোমাবর্ষণ চলছে। ধসে পড়েছে শত শত বাড়ি ও ভবন। ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে আছে অগুনতি মানুষ। হাসপাতালে লাশের সারি। আশ্রয় নেওয়ার জায়গা নেই। চিকিৎসাসামগ্রীর তীব্র সংকট। বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ, ফুরিয়ে আসছে খাবার। ২২ লাখ মানুষের নগরী ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় এখন এই পরিস্থিতি। টানা পাঁচ দিন সেখানে অবিরাম বোমাবর্ষণ করে এসেছে ইসরায়েলের বিমানবাহিনী।
হামাস সদস্যদের বিরুদ্ধে স্থল অভিযান চালানোর প্রস্তুতিও নিয়েছে ইসরায়েল। এরই মধ্যে সীমান্তে তিন লাখের বেশি সেনা ও সামরিক সরঞ্জাম মোতায়েন করেছে তারা। যেকোনো মুহূর্তে এ অভিযান শুরু হতে পারে বলে জানিয়েছেন ইসরায়েলি কর্মকর্তারা। যুদ্ধ পরিস্থিতি সামলানোর জন্য বিরোধীদলীয় নেতা বেনি গানৎসকে নিয়ে তিন সদস্যের একটি মন্ত্রিসভা গঠন করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
ইসরায়েলের এ অভিযানে সহায়তার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পাঠানো অস্ত্র ও গোলাবারুদ দেশটিতে পৌঁছেছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইসরায়েলে হামাসের হামলাকে ‘সম্পূর্ণভাবে শয়তানের কাজ’ আখ্যায়িত করে ইহুদি রাষ্ট্রটির পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন। অপর দিকে গাজায় ইসরায়েলের চলমান হামলার কঠোর সমালোচনা করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। ইসরায়েলের হামলাকে যুদ্ধ নয়, বেপরোয়া হত্যাকাণ্ড হিসেবে বর্ণনা করেছেন তিনি। এরদোয়ান বলেন, ‘আমরা প্রকাশ্যে ইসরায়েলে বেসামরিক নাগরিকদের হত্যার বিরোধিতা করি। একইভাবে আমরা কখনো গাজায় নির্বিচার অব্যাহত বোমা হামলা চালিয়ে নিরপরাধ মানুষকে বেপরোয়াভাবে হত্যা করা মেনে নিতে পারি না।’ এদিকে রক্তপাত এড়াতে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের বাহিনীগুলোর প্রতি সমঝোতা আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
গত শনিবার গাজার স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায়। এরপর গাজায় পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরায়েল। তাদের বোমাবর্ষণে গাজা ধ্বংসস্তূপে রূপ নিয়েছে। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গতকাল বুধবার জানায়, ইসরায়েলি বাহিনীর পাঁচ দিনের বোমাবর্ষণে ১ হাজার ১০০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন পাঁচ হাজারের বেশি। অপর দিকে ইসরায়েলে হামাসের হামলায় নিহতের সংখ্যা ১ হাজার ২০০ ছাড়িয়েছে বলে দেশটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।