পটুয়াখালী প্রতিনিধি :: পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। গত ১০ দিনে মৎস্য বন্দর মহিপুর ও আলীপুরসহ কলাপাড়ার বিভিন্ন আড়তে বিক্রি হয়েছে প্রায় ৪৭৫ মেট্রিক টন ইলিশ। এবার ইলিশের দাম অনেক চড়া। এতে হতাশা প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। সাগরে জেলিফিশের প্রাদুর্ভাব কমে যাওয়ায় ইলিশসহ সব ধরনের মাছের উৎপাদন বেড়েছে বলে দাবি মৎস্য বিভাগের।
সরেজমিনে কলাপাড়ার বৃহৎ মৎস্য বন্দর মহিপুর, আলীপুর, কুয়াকাটা, ধুলাসার, ধোলাইবাজার ও আঁশাখালী আড়তে গিয়ে দেখা যায়, প্রচুর পরিমাণে ইলিশ বিক্রি হচ্ছে। কারণ, গত ১০ দিন গভীর সাগর থেকে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ নিয়ে ঘাটে এসেছে ট্রলারগুলো।
জানা গেছে, মৎস্য বন্দরগুলোতে ১ কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৫০০-১৬০০ টাকা কেজি দরে। ৮০০ গ্রামের ইলিশ কিনতে ক্রেতাদের খরচ করতে হচ্ছে ১২০০-১৩০০ টাকা, ৬০০ গ্রামের ইলিশ ৮০০-৯০০ টাকা। বাজারে জাটকা ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৫০০-৬০০ টাকা কেজি দরে।
আরো পড়ুন : আগুনে পুড়ে ছাই ঈদের আনন্দ
মহিপুরের পাইকারি মাছ ব্যবসায়ী সলেমান মিয়া বলেন, গত ১০দিন (সোমবার পর্যন্ত) সব জেলেরাই সাগর থেকে মাছ নিয়ে ফিরেছেন। দামও ভালো পেয়েছেন তারা। মূলত পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে মাছের দাম কমেনি। আমরা যারা পাইকারি ব্যবসা করি আমরাও ঢাকায় মাছের ভালো দাম পেয়েছি।
ধুলাস্বর এলাকার জেলে ইউসুফ মিয়া বলেন, আমরা মূলত ডিঙ্গি নৌকা দিয়ে মাছ শিকার করি। প্রতিদিন সাগরে যাই আবার ফিরে আসি। সাগরে জেলিফিশ কমে যাওয়ার পর আমাদের জালে ইলিশসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধরা পড়েছে। এভাবে মাছ আসলে আমরা ধারদেনা কাটিয়ে উঠতে পারবো।
কলাপাড়া মাছ বাজারে ইলিশ কিনতে আসা ক্রেতা ফজুল মিয়া বলেন, ব্যবসায়ীরা পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে ইলিশের প্রচুর দাম চাচ্ছেন। যেভাবে দাম চাচ্ছে মনে হয় সোনা কিনতে এসেছি। আমরা বাজার মনিটরিংয়ের দাবি জানাচ্ছি।
আরো পড়ুন : পটুয়াখালীতে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা পরিস্থিতি পরিদর্শনে পুলিশ সুপার
অপর ক্রেতা সাইফুল মিয়া বলেন, বিক্রেতারা ১ কেজি ইলিশের দাম চাচ্ছে ১৭০০-১৮০০ টাকা। এভাবে ইলিশের দাম বাড়লে আমরা কোনোভাবেই এই মাছটি আর কিনে খেতে পাড়বো না। বাজারে প্রশাসনের নজরদারি বাড়লে ইলিশের দাম কমতে পারে।
কলাপাড়া সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, গত ১০ দিনে কলাপাড়া উপজেলার জেলেরা ৪৭৫ মেট্রিকটন ইলিশ বিক্রি করেছেন। এছাড়া চিংড়ি, লইট্যা, পোয়া, তুলার ডাডি ও সোনাপাতাসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছও পাচ্ছেন জেলেরা। আশা করছি, বৃষ্টি হলে মাছের পরিমাণ আরও বাড়বে।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমরা বাজার মনিটরিং করছি। পণ্যের দাম বেশি রাখলে তার (ব্যবসায়ী) বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।