চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক: চলতি মৌসুমে সর্বোচ্চ ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ওঠে যশোরে। এই মৌসুমে তাপপ্রবাহ সইতে হলো ২৪ দিন; এর আগে কোনো বছরই এতো সময় দাবদাহ দেখেনি বাংলাদেশ। এরই মধ্যে চলমান তাপপ্রবাহ আরও সপ্তাহখানেক চলার আভাস দিচ্ছেন আবহাওয়াবিদরা।
এবার দেশের বিভিন্ন এলাকায় তাপপ্রবাহ শুরু হয় ৩১ মার্চ। মাঝে ৯ ও ১০ এপ্রিল দেশের কোথাও তাপপ্রবাহ ছিল না।
বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দেশে রেকর্ড ২৪ দিন দাবদাহ হয়েছে জানিয়ে আবহাওয়াবিদ শাহনাজ সুলতানা বলেন, “প্রতি এপ্রিল মাসেই আমাদের তাপপ্রবাহটা আসে। কিন্তু এ বছরের স্থায়িত্বটা একটু বেশি।”
শাহনাজ জানান, এর আগে সবচেয়ে বেশি দিনের তাপপ্রবাহের রেকর্ড হয়েছিল ২০১৯ সালে। ওই বছর ২৩ দিন দাবদাহ ভুগতে হয় মানুষকে। আর গত বছর তাপপ্রবাহ চলে ১৮ দিন।
আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, “৩১ মার্চে দুয়েক জায়গায় তাপপ্রবাহ ছিল। এখনও চলছে, এটা আরও দীর্ঘায়িত হতে পারে।”
বৃহস্পতিবার ৪১ জেলার উপর দিয়ে তাপপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার মধ্যে সর্বোচ্চ ৪২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে যশোরে। এদিন ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ৩৯ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
প্রচণ্ড গরমে হাঁসফাঁস অবস্থায় দুই দফায় টানা ছয় দিনের সতর্কবার্তার পর এদিন নতুন করে আরও তিন দিনের সতর্কবার্তা দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার বুলেটিনে বলা হয়েছে, চুয়াডাঙ্গা ও যশোর জেলার উপর দিয়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এর বাইরে টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, রাজশাহী, পাবনা, দিনাজপুরসহ খুলনা বিভাগের অন্যান্য জেলার উপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।
এছাড়া ঢাকা, মাদারীপুর, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, বগুড়া, নওগাঁ, সিরাজগঞ্জ, রংপুর, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, পঞ্চগড়, ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, রাঙামাটি, চাঁদপুর, ফেনী, বান্দরবান ও নোয়াখালী জেলাসহ বরিশাল বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।
চলমান এ তাপপ্রবাহ মে মাসের ৪/৫ তারিখ পর্যন্ত চলতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক আজিজুর রহমান।
চলতি মৌসুমে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ২০ এপ্রিল; সেদিন যশোরে তাপমাত্রা উঠেছিল ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
বাতাসে তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম হলে তাকে মৃদু তাপপ্রবাহ ধরা হয়। ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রির কম তাপমাত্রাকে বলা হয় মাঝারি এবং ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রির কম তাপমাত্রাকে তীব্র তাপপ্রবাহ বলা হয়। আর তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রির উপরে উঠলে তাকে বলা হয় অতি তীব্র তাপপ্রবাহ।
পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে।