বরিশাল অফিস :: কার্যাদেশ অনুযায়ী ছয় মাসের মধ্যে জনগুরুত্বপূর্ণ সেতুর নির্মান কাজ শেষ করার কথা থাকলেও ২৪ মাস পেরিয়ে গেলেও শেষ হয়নি জেলার মুলাদী উপজেলার সফিপুর ইউনিয়নের ভুয়াই সেতুর নির্মাণকাজ। দীর্ঘদিনেও সেতুর কাজ শেষ না হওয়ায় স্থানীয় শতাধিক মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সেতু/কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ভুয়াই সেতুর জন্য ৮৯ লাখ ৭ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। ২০২২ সালের মে মাসে সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। ৫০ ফুট দৈর্ঘ্যরে সেতু নির্মাণের জন্য ছয় মাস সময় নির্ধারণ করে ঠিকাদারকে কার্যাদেশ দেন প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা। তৎকালীন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান কাজী মাইনুল আহসান সবুজ সেতুর নির্মান কাজ পান।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, কার্যাদেশ অনুযায়ী ঠিকাদার ৫০ ফুটের কিছুটা কম দৈর্ঘ্যরে সেতু নির্মাণ করেন। ফলে সেতুর দুই পাশে প্রায় ৩০ ফুট ফাঁকা রয়েছে। ২০২৩ সালে ঢাকা থেকে প্রকৌশলী এসে সেতু পরিদর্শন করে সংযোগ সড়কের জন্য অতিরিক্ত প্রায় ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। কিন্তু সেতুর নির্মাণকাজ শেষ কিংবা সংযোগ সড়ক করেননি ঠিকাদার। গত তিন মাস ধরে সেতুর নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে।
ভুয়াই বাজারের ব্যবসায়ী জাকির হোসেন জানান, বিকল্প সড়কের ব্যবস্থা না করেই ঠিকাদার ২০২২ সালের মে মাসে কাজ শুরু করেন। ওইসময় থেকে স্থানীয় লোকজন একটি বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচল করছে। ঠিকাদার সেতুর পিলার নির্মাণ করে দীর্ঘদিন কাজ ফেলে রাখেন। পরে উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তার দপ্তরের কাছে আবেদন করার প্রেক্ষিতে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে সেতুর পাটাতন ঢালাইয়ের কাজ করেছেন ঠিকাদার। কিন্তু সেতুর দুই পাশে প্রায় ৩০ ফুট করে ফাঁকা রয়েছে। ওই জায়গা মাটি ভরাট না করায় সেতু দিয়ে চলাচল করা যাচ্ছেনা।
সফিপুর ইউনিয়নের চরপদ্মা গ্রামের বাসিন্দ সুমন ঘরামী বলেন, এই সেতু দিয়ে পূর্ব চরপদ্মা, উত্তর চরপদ্মা, পাতারচর, ছোট পাতারচর লক্ষীপুর, চিতলীয়া, বালিয়াতলী ও উত্তর বালিয়াতলী গ্রামের প্রায় ৪০ হাজার মানুষ চলাচল করে। এ ছাড়া ভুয়াই বাজার, পূর্ব চরপদ্মা বাজারের ব্যবসায়ীদের পণ্য পরিবহনে এই সেতু ব্যবহার করতে হয়। সেতুর নির্মান কাজ শুরুর পর দুই বছরের বেশি সময় ধরে সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীরা চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।
সেতু নির্মান কাজের ঠিকাদার কাজী মাইনুল আহসান সবুজ বলেন, সেতুটির পাটাতন ঢালাই শেষ হয়েছে। বর্ষার কারণে মাটি পাওয়া যাচ্ছে না। তাই দুই পাশে মাটি ভরাট করা সম্ভব হয়নি। বর্ষা শেষ হলেই দ্রুত মাটি ভরাটসহ সেতুর বাকি কাজ সম্পন্ন করা হবে।
বরিশাল মুলাদী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা হানিফ শিকদার বলেন, ড্রেজার দিয়ে নদী থেকে বালু উত্তোলনে বিধিনিষেধ থাকায় বালু না পাওয়ায় সেতুর সংযোগ সড়ক করা সম্ভব হচ্ছে না। বর্ষা মৌসুম শেষে সেতুর দুই পাশে মাটি ও বালু ভরাট করে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হবে।