মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার পশ্চিম কমলাপুর গ্রামের বাসিন্দা আসাদ মাতুব্বর (৪০) দুই বছর আগে সচ্ছলতার আশায় ইতালি যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি ছাড়েন। কিন্তু সেই স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়নি। বুধবার (১ জানুয়ারি) সকালে পরিবারের কাছে আসে তার মৃত্যুর খবর, যা পরিবারে শোকের মাতম সৃষ্টি করেছে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, আসাদ মাতুব্বর ইতালি যাওয়ার জন্য মাদারীপুর সদর উপজেলার ঝিকরহাট গ্রামের দালাল রুবেল খানের মাধ্যমে ১৭ লাখ টাকায় চুক্তি করেছিলেন। তবে লিবিয়া পৌঁছানোর পর তাকে একটি বন্দিশালায় আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। দালাল চক্রের সদস্যরা টাকার জন্য তাকে মারধর করছিল এবং তার পরিবারের কাছে মোবাইল ফোনে নির্যাতনের ভিডিও পাঠাচ্ছিল।
পরিবারের দাবি, দালালরা আসাদকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। তারা জানান, আসাদের মুক্তির জন্য একাধিক দফায় মোট ৪২ লাখ টাকা পাঠানো হয়। কিন্তু তারপরও তাকে মুক্তি দেওয়া হয়নি। অবশেষে, গত বুধবার আসাদের মৃত্যুর খবর আসে।
নিহতের ভাই মাসুদ মাতুব্বর বলেন, “আমরা রুবেল খানসহ দালাল চক্রের সদস্যদের কাছে ৪২ লাখ টাকা দিয়েছিলাম, কিন্তু টাকা শেষ হওয়ার পর তারা নির্যাতন করে আমার ভাইকে হত্যা করেছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে মামলা করবো।”
নিহতের স্ত্রী রাখি আক্তার বলেন, “আমার স্বামীকে টাকার জন্য হত্যা করেছে দালালরা। আমি লাশ দেখতে চাইলে তারা আমার কাছে লাশও পাঠায়নি। আমি দালালদের বিচার চাই।”
মা কুলসুম বেগম জানান, “আমরা লাশ ফেরত চাই, কিন্তু রুবেল ও তার সহযোগীরা আরও পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেছে। আমরা তাদের বিচার চাই।”
ডাসার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদ উল হাসান জানান, নিহত আসাদের পরিবার মামলা করলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে, মাদারীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শাহ মো. সজীব বলেন, “মাদারীপুরে মানবপাচারের ঘটনা বেশি ঘটে। স্থানীয়দের আরও সচেতন হতে হবে। নিহতের পরিবার মরদেহ দেশে আনার জন্য আবেদন করলে প্রশাসন তাদের সার্বিক সহযোগিতা করবে।”
অভিযুক্ত রুবেল খানকে ফোন করেও পাওয়া যায়নি। তার ফোন বন্ধ এবং বাড়ি তালাবদ্ধ পাওয়া গেছে, ফলে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
মো: তুহিন হোসেন,
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম