চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক: ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসকে মিসরীয় মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে নতুন করে একটি যুদ্ধবিরতি ও বন্দীবিনিময় চুক্তির প্রস্তাব করেছে ইসরাইল
। এই প্রস্তাবনার সাথে যুক্ত দু’টি ইসরাইলি সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
নতুন প্রস্তাবে হামাসের সাথে ৪২ থেকে ৬০ দিন পর্যন্ত সময়ের জন্য একটি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। এই সময় নারী, ৫০ বছরের বেশি পুরুষ ও গুরুতর আহত বন্দীদের মধ্যে থেকে ১০০ জনকে মুক্তি দেবে হামাস। আর হামাসের দাবির ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, তারা প্রাথমিকভাবে ৩৩ জনের মুক্তি চেয়েছিল। তাদের কেউ কেউ বেঁচে নেই। বাকিদেরকে ছেড়ে দেয়া হবে। এর বাইরে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তসহ শত শত ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেয়ার জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
জেরুসালেম পোস্ট জানিয়েছে, সম্প্রতি আঞ্চলিক পরিস্থিতিতে কিছুটা সুবিধা পাচ্ছে ইসরাইল। এর মধ্যে রয়েছে গত অক্টোবরে হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে হত্যা করা এবং লেবাননের হিজবুল্লাহর সাথে যুদ্ধবিরতি চুক্তি করা ইত্যাদি। এছাড়া আগামী জানুয়ারিতে মার্কিন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় ফিরবেন। এসব ইস্যুতে ইসরাইল কিছুটা সুবিধা পাচ্ছে। সেখান থেকে পূর্ণ মাত্রায় সুবিধা গ্রহণের জন্যই ইসরাইল নতুন কৌশল অবলম্বন করতে যাচ্ছে।
সূত্রটি আরো জানিয়েছে, এরই ধারাবাহিকতায় ইসরাইল নতুনভাবে হামাসকে যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছে। তবে গত আগস্ট মাসে তারা যে প্রস্তাবনা রেখেছিল, নতুন চুক্তিটিকে তারই অবিকল বলা যেতে পারে। তবে সেখান থেকে চুক্তির প্রথম পর্যায়টি বাস্তবায়নে সর্বোচ্চ জোর দেয়া হয়েছে।
ইসরাইলি একটি সূত্র বলেছে, মিসরীয় ও কাতারী মধ্যস্থতাকারীরা মনে করছেন যে হামাস এখন নতুন যুদ্ধবিরতি ও বন্দীবিনিময় চুক্তিতে সম্মত হতে পারে। যদিও তাতে তাদের দাবির আংশিক প্রতিফলিত হয়।
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সাথে সিনিয়র মন্ত্রী এবং বেশ কয়েকজন নিরাপত্তা প্রধানের সাথে বৈঠকের সময় নতুন প্রস্তাবের মূল বিষয়গুলো চূড়ান্ত করা হয়েছিল। এই পয়েন্টগুলো মিসরীয় গোয়েন্দাদের কাছে পাঠানো হয়েছিল, যারা তখন কায়রোতে হামাসের প্রতিনিধিদের কাছে পেশ করেছিল।
ইসরাইলি কর্মকর্তারা বলেছেন, মিসর বর্তমানে হামাসের সাথে প্রাথমিক আলোচনার চ্যানেল। তবে কাতারও এতে জড়িত রয়েছে।
হামাসের প্রতিক্রিয়ার জন্য অপেক্ষা করছে ইসরাইল
হামাসের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে এক ইসরাইলি কর্মকর্তা মন্তব্য করেছেন, ‘আমরা হামাসের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে মিসরীয়দের জানানোর জন্য অপেক্ষা করছি। কয়েক দিনের মধ্যে আমরা জানতে পারব যে হামাস আমাদের উপস্থাপন করা কাঠামোর মধ্যে আলোচনা করতে ইচ্ছুক কিনা।’
হামাস যদি ইতিবাচকভাবে সাড়া দেয়, তাহলে যুদ্ধবিরতির সময়কাল, কত বন্দী মুক্তি দেয়া হবে এবং কাদেরকে মুক্তি দেয়া হবে, তার মতো বিশদ বিবরণ চূড়ান্ত করতে একটি ইসরাইলি প্রতিনিধি দল কায়রো যাবে।
এদিকে, ইসরাইলি মন্ত্রী রন ডার্মার ওয়াশিংটনে গিয়ে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজের সাথে দেখা করেছেন।
ট্রাম্পের একজন উপদেষ্টা বলেছেন, ইসরাইল সমর্থন করে, এমন কোনো বন্দীবিনিময় ও যুদ্ধবিরতির চুক্তি হলে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট সেটিকে সমর্থন করবেন।
তিনি আরো বলেন, ট্রাম্প চান এই ধরনের একটি চুক্তি দ্রুত এবং ২০ জানুয়ারির আগেই যেন সম্পাদিত হয়ে যায়।
কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল থানি স্কাই নিউজকে বলেছে, তিনি এই বিষয়ে ট্রাম্পের উপদেষ্টাদের সাথে যোগাযোগ করছেন।
সূত্র : জেরুসালেম পোস্ট