বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (শেবাচিম) স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে ২২টি প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়েছে। এই প্রস্তাবনাগুলো বাস্তবায়নের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মশিউল মুনীর। বরিশালের সুশীল সমাজের প্রতিনিধি কাজী মিজানুর রহমান পরিচালকের কাছে উন্নয়নমূলক একটি প্রতিবেদন পেশ করলে বিষয়টি আলোচনায় আসে।
গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় হাসপাতালের বিভিন্ন সংকট ও সম্ভাবনা নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়। কাজী মিজানুর রহমান দীর্ঘমেয়াদে টেকসই সেবার জন্য পরিচালকের কাছে ২২টি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব তুলে ধরেন।
স্বাস্থ্যসেবায় মূল সংকট::
বরিশালের সবচেয়ে বড় হাসপাতাল শেবাচিম দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও টেকনিশিয়ানের অভাব।
সরকারি মেশিনপত্র নষ্ট বা অব্যবহৃত।
অপর্যাপ্ত জনবল ও অচল লিফট।
মেডিকেল বর্জ্য সঠিক প্রক্রিয়াজাতকরণের অভাব।
পরিচ্ছন্নতার ঘাটতি। এসব কারণে রোগীরা মানসম্মত চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
প্রস্তাবনায় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে এসেছে—
1. হাসপাতাল পরিচালকের নির্ধারিত সময়সূচি ৯টা-৫টা করতে হবে।
2. পুরো হাসপাতাল সিসি ক্যামেরার আওতায় এনে কন্ট্রোল রুম স্থাপন করতে হবে।
3. ডাক্তার এবং রোগীদের জন্য পরিচ্ছন্ন পরিবেশ ও শৌচাগারের মান উন্নয়ন।
4. ৪টি নতুন অ্যাম্বুলেন্স সংগ্রহ ও বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সের অপতৎপরতা নিয়ন্ত্রণ।
5. ল্যাব পরীক্ষা স্বল্পমূল্যে এবং নির্ভুলভাবে নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ।
6. বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এবং টেকনিশিয়ানের শূন্যপদগুলো দ্রুত পূরণ।
মতবিনিময়ের সময় ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মশিউল মুনীর বলেন, “আমি ঢাকায় গিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগকে এসব বিষয়ে জানাব এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও টেকনিশিয়ান সমস্যার সমাধান করতে প্রথম পদক্ষেপ নেব। শেবাচিম হাসপাতালের সেবার মানোন্নয়নে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আরও আলোচনা করব।”
এছাড়া হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা উন্নত করতে দলমত নির্বিশেষে নাগরিক সংলাপ আয়োজনের প্রয়োজনীয়তার কথাও উঠে এসেছে।
দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার তাগিদ ::
দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের সঠিক চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে স্বল্প, মধ্যম এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণের বিকল্প নেই। ক্যান্সার, কিডনি ও শিশু হাসপাতালের নির্মাণকাজ দ্রুত সম্পন্ন করার দাবিও জনমনে উচ্চকিত।
শেবাচিমের ব্যবস্থাপনা, আধুনিক যন্ত্রপাতি ও দক্ষ জনবল বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে উন্নত স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়া সম্ভব।
মো: তুহিন হোসেন,
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম