ইলিশের প্রাচুর্যে পরিচিত বরিশাল এবার ইলিশ সংকটে। পোর্ট রোডসহ আশপাশের পাইকারি বাজারগুলোতে কাঙ্ক্ষিত ইলিশের দেখা নেই। সাইজের দিক থেকে বড় ইলিশ একেবারেই অনুপস্থিত, আর বাজারে থাকা ইলিশের দাম আকাশছোঁয়া। ১ কেজি ২০০-৩০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের প্রতিকেজি ৩,৭৫০ টাকা এবং ১ কেজি সাইজের মাছ বিক্রি হচ্ছে প্রতি মণ লাখ টাকা ছাড়িয়ে।
বাজারে ইলিশের সংকট::
বরিশালের পোর্ট রোড মোকামে ১৬৭টি আড়তের মধ্যে মাত্র ২০-২৫টি আড়তে ইলিশ বিক্রি হয়েছে। মাছ ব্যবসায়ী বেলায়েত সিকদার জানান, গত কয়েকদিনে দেড় কেজি ওজনের ইলিশ পাওয়া যায়নি।
১ কেজি ২০০-৩০০ গ্রাম সাইজের ইলিশ বিক্রি হয়েছে প্রতিকেজি ৩,৭৫০ টাকা।
১ কেজি সাইজের ইলিশ প্রতি মণ ১ লাখ ২০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে।
৫০০-৬০০ গ্রাম ইলিশের কেজি বিক্রি হয়েছে ১,৭৫০ টাকায়।
বিপাকে শ্রমিক ও খুচরা বিক্রেতা::
ইলিশের ঘাটতিতে ব্যাপক সংকটে পড়েছেন শ্রমিক ও খুচরা ব্যবসায়ীরা।
খুচরা বিক্রেতা শিল্পী বেগম জানান, ইলিশের বেশি দামের কারণে গত এক মাস ধরে ব্যবসা করতে পারছেন না। সংসার চালাতে আড়তদারের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করছেন।
শ্রমিক উত্তম বলেন, পোর্ট রোডের হাজারো শ্রমিকের মধ্যে অনেকে বেকার হয়ে পড়েছেন। অনেকেই পেশা পরিবর্তনে বাধ্য হচ্ছেন।
মৎস্য বিশেষজ্ঞদের মতামত::
মৎস্য কর্মকর্তা বিমল চন্দ্র দাস বলেন, “গত কয়েক বছর ধরে শীতে ইলিশ পাওয়া যেত। তবে এবার নদী ও সাগরে কোথাও ইলিশ মিলছে না। এই সংকটের কারণ সম্পর্কে আমাদের কাছে তথ্য নেই।”
স্থানীয় জেলেরা জানান, নিষেধাজ্ঞার সময়ে ডিমওয়ালা ইলিশের অতি শিকার এবং পাচার এর অন্যতম কারণ হতে পারে।
চাহিদার শূন্যতায় আঞ্চলিক প্রভাব::
সদর উপজেলার চন্দ্রমোহন, লাহারহাট, এবং তালতলী এলাকায় প্রতিবছর লোকাল ইলিশ পাওয়া যেত। কিন্তু এই বছর স্থানীয় জেলেরা মাছ ধরতে পারছেন না। চাহিদা পূরণে অক্ষমতার কারণে বরিশালবাসী ইলিশের সহজলভ্যতার ঐতিহ্য হারাতে বসেছে।
ইলিশের প্রাচুর্যের জন্য পরিচিত বরিশালের এই সংকট শুধু স্থানীয় অর্থনীতিতেই প্রভাব ফেলছে না, এটি ভোজন রসিকদের জন্যও একটি বড় ধাক্কা। প্রশাসনের তৎপরতায় যথাযথ সমাধান জরুরি।
মো: তুহিন হোসেন,
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম