এর আগে বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) বিকেলে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির পক্ষ থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, অবৈধ আওয়ামী সরকারের পদত্যাগ ও নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার পুনঃপ্রতিষ্ঠা, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসা এবং বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ সব বিএনপি নেতাকর্মীদের মুক্তিসহ এক দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে এবং অবৈধ তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে ২৬ নভেম্বর রোববার ভোর ৬টা থেকে ২৮ নভেম্বর মঙ্গলবার ভোর ৬টা পর্যন্ত ৪৮ ঘণ্টা সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি পালিত হবে।
একই দিন রাতে বিবৃতি দিয়ে আলাদাভাবে অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলটির ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম এক বিবৃতিতে এ নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার ২০১৪ ও ২০১৮ সালে সাজানো প্রহসনের নির্বাচন করে মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে। তারা অতীতের মতো আবারো একতরফা ভোটারবিহীন পাতানো নির্বাচনের ষড়যন্ত্র করছে। এ ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে বিরোধী দলের মতামতকে অগ্রাহ্য করে গণতন্ত্র হরণকারী আওয়ামী সরকার অনুগত নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে ফরমায়েশি তফসিল ঘোষণা করিয়েছে।
এটিএম মা’ছুম বলেন, সরকারের তল্পিবাহক নির্বাচন কমিশনের একতরফা তফসিল জাতি ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার অসৎ উদ্দেশ্যে দেশকে একটি অকার্যকর, ব্যর্থ ও তাঁবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করেছে এবং দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব আজ হুমকির মধ্যে পড়েছে।
তিনি বলেন, এ অবস্থায় দেশকে ধ্বংসের হাত থেকে উদ্ধারের লক্ষ্যে জামায়াতের নিবন্ধন সংক্রান্ত মামলায় ন্যায়ভ্রষ্ট রায় ও ফরমায়েশি একতরফা তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে এবং জালিম সরকারের পদত্যাগ, নির্বাচনকালীন কেয়ারটেকার সরকার গঠন, আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানসহ সব রাজবন্দি ও ওলামা-মাশায়েখের মুক্তি, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং দ্রব্যমূল্য মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসার দাবিতে আমি জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে আগামী ২৬ নভেম্বর (রোববার) ভোর ৬টা থেকে ২৮ নভেম্বর ভোর ৬টা পর্যন্ত সারা দেশে টানা ৪৮ ঘণ্টা শান্তিপূর্ণ সড়ক, রেল ও নৌপথ অবরোধের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করছি।
উল্লেখ্য, গত ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে ঢাকায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপির ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। সেদিন এক পুলিশ সদস্য নিহত হন এবং অনেকে আহত হন। সমাবেশ ভন্ডুল করার প্রতিবাদে পরদিন হরতাল আহ্বান করে বিএনপি। ওইদিন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর পরের কয়েকদিনে মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু, মোয়াজ্জেম হোসেন আলালসহ বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের প্রায় সব কেন্দ্রীয় নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এসব গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে এবং সরকারের পদত্যাগের আগে থেকে চলা এক দফা দাবিতে ৩১ অক্টোবর থেকে মোটামুটি লাগাতার অবরোধ কর্মসূচি দিয়ে আসছে বিএনপি। এর মধ্যে তফসিল ঘোষিত হওয়ায় প্রতিবাদে ২ দিন হরতাল পালন করা হয়। এখন নিয়মিতভাবে সপ্তাহের মঙ্গলবার বাদে বাকি চারদিন অবরোধ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।