এস এল টি তুহিন,বরিশাল :: দ্বৈত নাগরিকত্ব প্রমানিত হওয়ায় বরিশাল-৪ (হিজলা-মেহেন্দীগঞ্জ) আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ড. শাম্মী আহমেদ ও বরিশাল-৫ (সদর) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর প্রার্থীতা বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। শুক্রবার সকালে ইসিতে আপিল শুনানি শেষে এ রায় ঘোষণা করা হয়েছে। আপিল শুনানিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ অন্য নির্বাচন কমিশনাররা এই রায় ঘোষণা করেছেন। সূত্রমতে, বরিশাল-৪ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ড. শাম্মী আহমেদ মনোনয়নপত্রে তার দ্বৈত নাগরিকত্ব (অস্টেলিয়া) সংক্রান্ত তথ্য গোপন করেছেন মর্মে অভিযোগ করে তার প্রার্থীতা বাতিল চেয়ে রিটার্নিং অফিসারের কাছে আবেদন করেছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য পঙ্কজ দেবনাথ। পরে জেলা রিটার্নিং অফিসার শাম্মী আহমেদের মনোনয়নপত্র বাতিল করেন। রিটার্নিং অফিসারের আদেশের বিরুদ্ধে শাম্মী আহমেদ নির্বাচন কমিশনে আপিল দায়ের করেন। আপিল শুনানি শেষে নির্বাচন কমিশন শাম্মি আহমেদের প্রার্থীতা বাতিল করেন।
বহাল রইলো পঙ্কজ দেবনাথ ॥ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া বরিশাল-৪ আসনে সংসদ সদস্য পঙ্কজ দেবনাথের প্রার্থীতা বহাল রেখেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। শুক্রবার সকালে নির্বাচন কমিশনের আপিল শুনানিতে এই রায় ঘোষনা করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার সিইসি কাজী হাবিবুল আওয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশন। সূত্রমতে, স্বতন্ত্র প্রার্থী পঙ্কজ দেবনাথের বিরুদ্ধে আপিল করেছিলেন নৌকার প্রার্থী ড. শাম্মী আহমেদ। পঙ্কজ দেবনাথ বলেছেন, শুক্রবার ইসিতে শাম্মী আহম্মেদের দুটো আপিল ছিল। একটি রিটার্নিং অফিসার কর্তৃক বাতিল হওয়া তার মনোনয়ন ফিরে পাওয়ার জন্য, আরেকটি ছিল আমার প্রার্থীতা চ্যালেঞ্জ করে। পুরো কমিশন আমাদের কথা শুনেছেন। আমি ন্যায়বিচার পেয়েছি, সত্যের জয় হয়েছে। এ ব্যাপারে ড. শাম্মী আহমেদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিফ না করলেও তার একাধিক সমর্থকরা জানিয়েছেন, তাদের প্রার্থী (শাম্মি আহমেদ) ইসির রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করবেন।
সাদিক আব্দুল্লাহর প্রার্থীতা বাতিল ॥ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে বরিশাল-৫ (সদর) আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদ্য সাবেক সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর প্রার্থীতা বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন। তার মনোনয়ন অবৈধ ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেছিলেন একই আসনের নৌকার প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীম। শুক্রবার সকালে যাচাই-বাছাই শেষে সাদিক আব্দুল্লাহর প্রার্থীতা বাতিলের আবেদন মঞ্জুর করেছে নির্বাচন কমিশন। ফলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবেও দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে লড়াই করতে পারছেন না সাদিক আব্দুল্লাহ। জাহিদ ফারুক শামীম তার আবেদনে উল্লেখ করেছিলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর যুক্তরাষ্ট্রে দ্বৈত নাগরিকত্ব রয়েছে। তিনি এ তথ্য হলফনামায় গোপন করেছেন। এছাড়া, রাজধানীর উত্তরায় সাদিক আব্দুল্লাহর নামে প্লট ও যুক্তরাষ্ট্রে তার স্ত্রীর নামে বাড়ি থাকলেও এসব তথ্য হলফনামায় উল্লেখ করা হয়নি।
জাহিদ ফারুকের মনোনয়ন বৈধ ॥ বরিশাল-৫ (সদর) আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীমের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। শুক্রবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে আপিল শুনানিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ অন্য নির্বাচন কমিশনাররা এই রায় ঘোষণা করেছেন। এর আগে জাহিদ ফারুক শামীমের মনোনয়ন বাতিল চেয়ে আপিল করেছিলেন একই আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ। আপিলে জাহিদ ফারুক ও তার স্ত্রী-সন্তান আমেরিকার নাগরিক বলে দাবি করা হয় এবং সেখানে বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছিল। হলফনামায় আমেরিকার ফিলাডেলফিয়ায় প্রতিমন্ত্রীর স্ত্রী-সন্তানের সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগও করেন সাদিক আব্দুল্লাহ। তবে এসব অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করে আসছিলেন জাহিদ ফারুক শামীম। অবশেষে আপিলের পর ইসির তদন্তে সাদিক আব্দুল্লাহর দায়ের করা অভিযোগ মিথ্যে প্রমানিত হওয়ায় জাহিদ ফারুক শামীমের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।