শিরোনাম

দুমকিতে নির্মাণের ছয় মাসেই সড়কে ধস

Views: 50

মো: আল-আমিন (পটুয়াখালী): পটুয়াখালীর দুমকীর পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নে সড়ক নির্মাণের মাত্র ছয় মাসেই ধস পড়েছে।

সড়কটির একটি অংশ নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। অন্য অংশেও বড় বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। যে কোনো সময় সড়কটি দেবে গিয়ে ওই এলাকার মানুষ যোগাযোগবিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

সেই সঙ্গে কচা নদীর জোয়ারের পানিতে বিস্তীর্ণ এলাকার আমন ধান ও রবি ফসল তলিয়ে যেতে পারে বলে উদ্বিগ্ন ওই এলাকার কৃষকসহ সাধারণ মানুষ।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নে কচাবুনিয়া নদীর পশ্চিম পাড়ে নেছারিয়া মাদরাসা থেকে পুকুরজানা বাজার পর্যন্ত সড়কের অন্তত ১০০ মিটারে প্রায় অর্ধেকাংশ ধসে গেছে। বাকি অর্ধেকাংশেও ফাটল ধরেছে। নদীর তীরে টেকসই সাপোর্ট না থাকায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা সড়কটি ছয় মাস না যেতেই এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

পাউবো কর্তৃপক্ষ ভাঙনরোধে তাৎক্ষণিক কিছু বালুর বস্তা ফেললেও সেখানে টেকসই পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। জোয়ারভাটায় পানির স্রোতের তোড়ে এখানে ফেলা বালুর বস্তাগুলো দেবে যাচ্ছে।

উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মাহফুজ খানের সাব-কন্ট্রাক্টর জনৈক মুনাব্বর হোসেন তড়িঘড়ি করে রাস্তাটির কার্পেটিং কাজ করেন।

তবে স্থানীয়দের দাবি, এখানে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারসহ নানা অনিয়ম করা হয়েছে।

তাছাড়া নদীর তীরে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে সাপোর্ট না থাকায় জুলাই মাসের মাঝামাঝি সড়কে ধস নামে। জোয়ারের পানির স্রোতে নিচের মাটি সরে যাওয়ায় সড়ক ভেঙে গেছে। ওই সময় স্থানীয়ভাবে কাঠ-বাঁশের সাপোর্ট দেওয়া হলেও তা টেকসই হয়নি। সম্প্রতি সড়কটির সেই অংশে বড় বড় ফাটল দেখা দিয়েছে।

দক্ষিণ পাঙ্গাশিয়া গ্রামের রাজ্জাক ফকির জানান, কচা নদীর ভাঙনে যে কোনো মুহূর্তে রাস্তাটি নদীতে বিলীন হয়ে যেতে পারে।
রাস্তা ভেঙে গেলে কয়েকটি গ্রামের বাড়িঘর ফসলি জমি তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

একই অভিযোগ দক্ষিণ পাঙ্গাশিয়ার বাসিন্দা রাজ্জাক মল্লিক, আবদুল বারেক মেম্বারসহ অনেকের।

তেঁতুলবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পিয়ারা বেগম জানান, ওই রাস্তা দিয়ে স্কুলের বেশির ভাগ ছাত্রছাত্রীর চলাচল করতে হয়। এসব শিশু শিক্ষার্থী নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় থাকতে হচ্ছে আমাদের।

রাস্তাটি নির্মাণ কাজের ঠিকাদার মোনাব্বর হোসেন ফোনে জানান, কাজের পরিমাণ অনুযায়ী বিল দেওয়া হয়েছে। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তদারকি কর্মকর্তাদের নির্দেশনা মেনেই কাজ করা হয়েছে।

উপজেলা প্রকৌশলী মো. সাদ জগলুল ফারুক বলেন, এটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের রাস্তা। ভাঙন ঠেকাতে তারা হয়তো কোনো ব্যবস্থা নেবেন। সড়ক মেরামত করার লক্ষ্যে সামনে মেইনটেন্যান্স প্রকল্প থেকে বরাদ্দ দেওয়া হবে।

পটুয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুর রহমান বলেন, কচা নদীর তীরবর্তী রাস্তাটির ভাঙনরোধে জরুরি মেইনটেনেন্সের মাধ্যমে কিছু বালুর বস্তা ফেলা হয়েছিল। সরেজমিন পরিদর্শন করে টেকসই পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *