শিরোনাম

হুমকি উপেক্ষা করে ভোট বর্জন জাপা প্রার্থীদের

Views: 47
চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক:  দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের প্রচার শুরু হয় গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর। এর পর থেকে নির্বাচনকে ‘প্রহসন’ দাবি করে সরে দাঁড়াচ্ছেন জাতীয় পার্টির একের পর এক প্রার্থী। তাদের অভিযোগ-মনোনয়ন দেওয়ার পর থেকে জাপা হাইকমান্ড প্রার্থীদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ রাখছে না। তারা হুমকির শিকার হচ্ছেন, হামলা ও মামলা করা হচ্ছে। তবু দলের নেতৃত্ব কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

সংবাদ সম্মেলন ও গণমাধ্যমকে জানিয়ে ভোট থেকে সরে গেছে প্রায় ২৩ জন। তবে ঘোষণা না দিলেও অনেকেই নেই ভোটের মাঠে, অনেকেই সরেছেন নীরবে।

আবার নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার ২৪ ঘণ্টা পর ভোটের পরিবেশকে সুষ্ঠ বলে আগের বক্তব্য প্রত্যাহার করেছেন সিলেট-৫ আসনে জাপার প্রার্থী।

নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো এ প্রার্থীরা সরকারের সঙ্গে সমঝোতার ২৬ আসনের বাইরের।

সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, প্রায় শতাধিক প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে গেছেন। প্রার্থীদের সরে যাওয়ায় ক্ষোভ জানিয়েছেন গত ৩ জানুয়ারি। প্রার্থীরা নিজ স্বার্থে সরেছেন উল্লেখ করে জিএম কাদের বলছেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন।

গত বুধবার (৩ জানুয়ারি) রংপুরে নিজের নির্বাচনী এলাকায় এক সমাবেশে জিএম কাদের বলেন, গণমাধ্যমের সামনে আমাদের দোস দিয়ে যারা নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দিচ্ছেন তা দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে এ কাজ করছেন। যারা নির্বাচন থেকে সরে যাচ্ছেন, তারা নিজেদের স্বার্থে সরে যাচ্ছেন। এগুলো যাচাই-বাছাই করে আগামীতে তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের প্রার্থীরা এখনও বলছেন, তারা ভালো করবেন। তাছাড়া বিপুল প্রার্থী সরে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। যখন সরে যাবে তখন বলা যাবে। তবে সরে গেলে আমাদের ওপর চাপ সৃষ্টি হবে।

তবে ওইদিনই ভোট থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দেন জাতীয় পার্টির ৪ প্রার্থী। তারা হলেন, চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সোহরাব হোসেন, চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের রবিউল ইসলাম, সিলেট- ৫ আসনের সাব্বির আহমেদ, গাইবান্ধা-৫ আসনের প্রার্থী আতাউর রহমান সরকার আতা।

এর পরের দিন বৃহস্পতি (৫ জানুয়ারি) নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন আরও ৫ প্রার্থী। তারা হলেন ময়মনসিংহ-৩ আসনের মোস্তাফিজুর রহমান, লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের মুহাম্মদ রাকিব হোসেন, গাইবান্ধা-৫ আসনের আতাউর রহমান,
মুন্সীগঞ্জ-১ আসনে অ্যাডভোকেট শেখ মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম ও রাজশাহী-৬ আসনের প্রার্থী মো.শামসুদ্দিন।

লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের মুহাম্মদ রাকিব হোসেন  বলেন, ‘দেশে প্রহসনের নির্বাচন হচ্ছে। লক্ষ্মীপুরের সাধারণ মানুষ নির্বাচন থেকে বিমুখ হয়ে পড়েছে। শুধু বিশেষ সুবিধাভোগী কিছু লোক নির্বাচনের মাঠ গরম রেখেছে। ভোটের মাঠে কালো টাকার ব্যাপক ছড়াছাড়ি হচ্ছে। কালো টাকার প্রভাবে কেন্দ্রে এখন এজেন্ট দেওয়া যাচ্ছে না।’

তিনি বলেন, ‘পোস্টার ছিঁড়ে নিয়ে যাওয়া হলেও রিটার্নি কর্মকর্তা বা দলের কারও কাছে অভিযোগ জানিয়েও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি। সুষ্ঠু পরিবেশ না থাকায় কেন্দ্রের নির্দেশে আমি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছি।’

ময়মনসিংহ-৩ (গৌরীপুর) আসনে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, নির্বাচনে কর্মীদের ভয়ভীতি-প্রদর্শন, পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা এবং কার্যালয় ভাঙচুর হয়েছে অব্যাহতভাবে। এখানে নির্বাচনের সুষ্ঠু যে পরিবেশ, তা নেই। এ নির্বাচন এক পেশে নির্বাচন। এ কারণে আমি আমার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছি।

প্রার্থীতা প্রত্যাহারের সময় পার হওয়ার পর আইনগতভাবে ভোট ছেড়ে দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এসময় ভোট ছাড়লেও ব্যালটে তাদের প্রতীক থাকবে

আইন অনুযায়ী, তারা ইসির কাছে বৈধ প্রার্থী হিসেবেই গণ্য হবেন। এমনকি ভোটের মাঠ ছেড়ে দেওয়া কেউ যদি বিজয়ী হন, আইনত সেটা বৈধ হবে। ফলে শেষ মুহূর্তে সরে গেলেও নির্বাচনে কোনো প্রভাব পড়বে না।

দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে ২৮টি রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মিলে ১ হাজার ৯৭০ জনের মত প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *