শিরোনাম

পটুয়াখালীতে নাব্য সংকট চরমে, ঝুঁকি নিয়ে চলছে নৌযান

Views: 44

 

মো:আল-আমিন, পটুয়াখালী : পটুয়াখালীর নৌপথ ঢাকা-পটুয়াখালী নৌরুটে নাব্য সংকটের কারণে ব্যাহত হচ্ছে যাত্রী ও পণ্যবাহী নৌ চলাচল।
জেলার বিভিন্ন নদীতে জেগে উঠেছে ছোট-বড় অসংখ্য ডুবোচর। ভাটার সময় এসব নৌ চ্যানেল দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে নৌযান চলাচল করে। নৌযান নিয়ে প্রায়ই আটকে পড়ে ডুবোচরে। তখন নিরুপায় হয়ে অপেক্ষা করতে হয় জোয়ারের। ফলে ভোগান্তিতে পড়তে হয় যাত্রীদের। পটুয়াখালী টার্মিনালের অবস্থাও বেহাল।

পটুয়াখালী নদীবন্দর সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-পটুয়াখালী-গলাচিপা নৌপথে কবাই থেকে কারখানা, ঝিলনার মোড়ে টেকের চর, রৈহালিয়-লাউকাঠি নদীর মোহনা হতে পটুয়াখালী টার্মিনাল হয়ে লাউকাঠি খেয়াঘাট চ্যানেলে, লাউকাঠি নদীর মোহনা হতে জৈনকাঠি মোড় ও ভুরিয়া লঞ্চঘাট হতে কলাগাছিয়া লঞ্চঘাট পর্যন্ত ডুবোচর থাকায় বিআইডব্লিউটিএ বরাবর ড্রেজিংয়ের জন্য পটুয়াখালী নদীবন্দর থেকে আবেদন পাঠানো হয়েছে।

এমভি ছত্তার খান-১ লঞ্চের মাস্টার আবদুল মালেক জানান,পটুয়াখালী-ঢাকা নৌপথে ডুবো চরের কারণেই যত সমস্যা। সময় মতো গন্তব্যে পৌঁছুতে না পারায় যাত্রীদের দুর্ভোগের সৃষ্টি হচ্ছে। প্রায়ই ডুবো চরে আটকে যায় লঞ্চ। জোয়ার না আসলে গন্তব্যে যাওয়া যায় না।  আমরা নৌ পরিবহন বরাবরে ডুবো চরে পানির পরিমাণ ও স্থান নির্ধারণ করে দিয়েছি। তাই ঢাকা-পটুয়াখালী নৌরুটে লঞ্চ নিয়ে ঠিকমতো আসা-যাওয়া করা যাচ্ছে না। আর পটুয়াখালী টার্মিনাল ঘাটের অবস্থা বেহাল। জোয়ার না আসলে টার্মিনাল থেকে লঞ্চ ছাড়া যাচ্ছে না। টার্মিনাল থেকে লঞ্চ ছাড়ার সময় সাড়ে ৫ টা। কিন্তু অনেক সময় লঞ্চ সন্ধ্যা ৭টায় ছাড়তে হয়। অনেক যাত্রীদের পরীক্ষা থাকে, অফিস থাকে। তাদের সময় মতো পৌঁছে দিতে না পারলে যাত্রীদের কথা শুনতে হয়। বিষয়টি যদি সংশ্লিষ্ট দফতর নজরে না নেয় তাহলে ডুবো চরের সমাধান হবে না।

নৌপথযাত্রী নোমান জানান, পটুয়াখালী থেকে ঢাকা যাওয়ায় উত্তম মাধ্যম লঞ্চ। কিন্তু শীতের সময় নদীতে অসংখ্য ডুবোচর সৃষ্টি হয়। আর এতে প্রায়ই লঞ্চগুলো ডুবো চরে আটকে পড়ে। ফলে আমরা সময় মতো গন্তব্য স্থলে পৌঁছুতে পারি না। দ্রুত ড্রেজিংয়ের ব্যবস্থা নিলে যাত্রীরা হয়রানির স্বীকার হবে না। স্বাভাবিক গতি আসবে নৌরুট গুলোতে।

এমভি প্রিন্স আওলাদ ৭ লঞ্চের মাস্টার ইসরাফিল জানান, কারখানা ও ঝিলনা মোড় পার হওয়া অনেক কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। পটুয়াখালী টার্মিনাল থেকে ১০ হাত পরিমাণ পেছনে গেলে চরে আটকে পড়ে লঞ্চ একদিকে কাত হয়ে থাকে। এতে যে কোনও মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। নৌপথে অনেক জায়গায় বয়া, মার্কার ও সিগন্যাল বাতি নাই। ডুবো চরের স্থানে কোনও লাইটিং বাতি নেই। বাতি থাকলে আমরা বুঝতে পারতাম যে এ স্থানে ডুবোচর আছে। আমাদের আসলে ধারণা করে লঞ্চ চালাতে হয়। নৌমন্ত্রীর কাছে আবেদন যে চরগুলো অতি দ্রুত ড্রেজিং ও নৌপথ চিহ্নিত করে দেওয়া হোক।

পটুয়াখালী নৌবন্দর কর্মকর্তা খাজা সাদিকুর রহমান জানান, ঢাকা-পটুয়াখালী নৌরুটের বিভিন্ন পয়েন্টে নাব্যতা সংকটের কারণে নৌযান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। তাই এ বিষয়ে নদীগুলাকে নাব্য সংকট থেকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে ড্রেজিং করতে ঊর্ধ্বতন মহলে অবহিত করা হয়েছে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন যায়গায় ড্রেজিংয়ের কাজ চলছে। ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে খুব দ্রুত নদী পথের নাব্য সংকট সমাধান হবে।

নদীবন্দরের নির্বাহী প্রকৌশলী (সিভিল) আবু বাকের সিদ্দিক জানান, যেখানে যেখানে নাব্য সংকট রয়েছে সেখানে ড্রেজিং করা হচ্ছে। পটুয়াখালী টার্মিনাল ঘাটে অতি শিগগিরই ড্রেজিংয়ের কাজ শুরু হবে।

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *