এস এল টি তুহিন, বরিশাল :: দেশে নির্বাচন যেতে না যেতেই বেড়েই চলেছে ঊর্ধ্বমুখী বিভিন্ন নিত্যপণ্যের বাজার। শীতের মৌসুম হলেও দাম কমেনি সবজির বাজারে। নির্বাচনের জন্য সরবরাহ কম থাকায় সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েই চলছে,আদা,রসুন,আলু এবং পেয়াজ ও মুরগীরসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ।
রবিবার (১৪ জানুয়ারি) সকালে বরিশালের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রসুন বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৩০ টাকা, আদা ২০০ থেকে ২১০, পেয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১ শত টাকা করে। আলু বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। অপর দিকে ব্রয়লার মুরগীর দাম কমলেও বেড়ে গেছে সোনালী এবং লেয়ার মুরগীর দাম। গত সপ্তাহে ব্রয়লার বিক্রি হয়েছে ২০০ টাকা করে। গতকাল ২০ টাকা কমে ১৮০ টাকা করে বিক্রি হয়েছে ব্রয়লার মুরগী দাম। তবে ১০ টাকা থেকে ১৫ সোনালী এবং লেয়ার মুরগীতে বেড়েছে। সোনালী বিক্রি হচ্ছে ৩ শত টাকা গত সপ্তাহে ছিলো ২৯০ টাকা, লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ৩১০ টাকা। যা গত সপ্তাহে ছিল ২৯০ টাকা। হঠাৎ করে বেড়ে গেছে সবধরনের মাছের দাম। মাছ সরবরাহ কম থাকায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। রুই কাতলা ৩০০ থেকে ৪ শত টাকা, কৈ মাছ ২২০ টাকা, শিং মাছ ২২০ টাকা, পাঙ্গাস ২০০ থেকে ৩০০ টাকা, তেলাপিয়া ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, ইলিশ ৬ শত থেকে ১২ শতকা এভাবেই বাজারে সব ধরনের মাছের দাম বেড়ে গেছে। ডিম বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা হালি। দেশী হাস ও মুরগীর ডিম বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকা।
বাজারে শীতকালীন সব ধরনের সবজি ৭০ থেকে ৮০ টাকা করে বিক্রি করতে দেখা গেছে। তবে সীম বিক্রি হচ্ছে – ৮০ থেকে ৯০ টাকা করে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কোন দোকানেই মূল্য তালিকা টাঙ্গানো নাই। আবার দুই একটি দোকানে থাকলেও তা দোকানের পিছনে লাগানো। যা ক্রেতাদের চোখে পড়ার মত না। এব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন বলে মনে করছে ক্রেতারা।
বরিশালের পোর্ট রোড বাজারের মো: ইব্রাহীম হাওলাদার নামের এক ক্রেতা জানান, শীতের মৌসুমে এসেও সবজির দাম শুনে আমাদের মতো নিম্ন আয়ের মানুষের বিপাকে পড়তে হয়। সেই সকল সবজি আমাদের ক্রয় করা সম্ভাব হয় না। তরপরও আলু, পিঁয়াজ আর চিনির দাম কমলে আমাদের আর টেনশন করতে হয় না। আপনারা সাংবাদিকরা এটা নিয়ে লেখুন প্লিজ। সরকারকে বলুন, ঘরে ঘরে রেশনিং পদ্ধতি চালু করতে। এই টিসিবি ব্যবস্থায়, একটা থাকে তো আরেকটা থাকেনা। আর নিত্যপণ্যের দাম কমলে টিসিবি বা রেশনিং কিছুই চাইনা আমাদের।
তিনি বলেন, সরকার যখন মন্ত্রী পরিষদ গঠন করছেন ঠিক তখনই বাজারে চালের দাম বস্তা প্রতি ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বেড়েছে। এটাও আমাদের জন্য ভোগান্তির কারণ। আটার দাম সেই কবে থেকে ৫৫-৬০ টাকা হয়ে আছে। সরকারের কাছে বাজার নিয়ন্ত্রণের দাবী জানাই।
বরিশাল কীর্তনখোলা নদীর পাড়ে ডিসিঘাট সংলগ্ন পাইকারি বাজারের ব্যবসায়ী আলম হাওলাদার জানান, শীতের সবজির দাম এখন একটু কম। ভোলা, পটুয়াখালী ও বরিশালের বাকেরগঞ্জের চর এলাকা থেকে প্রচুর সবজি আসছে পাইকারী বাজারে। তবুও খুচরা বাজারে সিন্ডিকেটের কারণে চড়া দামে এ সকল সবজি কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। এছাড়াও বাজারের অন্য সব প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রনে আনা একান্ত জরুলী।
এ বিষয়ে বরিশাল জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম জানান, আমাদের ভ্রাম্যমান ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে প্রতিদিনেই বরিশালের বিভিন্ন বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে। কোন দোকানে বা কোন ব্যক্তি কোন জিনিসের উপর মূল্যবৃদ্ধি রাখে তাহলে তাকে আইন অনুযায়ী বিভিন্ন মেয়াদে জেল জরিমানা করা হচ্ছে। আমি আশা করি বরিশালের বাজার কয়েক দিনের মধ্যেই সকল পণ্যর দাম আরো নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।