শিরোনাম

বরিশালের বানারীপাড়ায় যৌতুকের দাবিতে গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ

Views: 45

বরিশাল অফিস :: বরিশালের বানারীপাড়ায় ব্রাণকাঠি গ্রামে ভালোবেসে ঘর বেধে চম্পা (২২) নামের এক গৃহবধুকে প্রেমিক স্বামীর যৌতুকের নির্মম বলি হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনার পর থেকে তার স্বামী সুমন বেপারী দুই বছরের মেয়ে তানহাকে নিয়ে পলাতক রয়েছে।

রবিবার (১৪ জানুয়ারি) রাত ১১টার দিকে বানারীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চম্পার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তার মৃত্যুরহস্য উদঘাটনে ১৫ জানুয়ারি সোমবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হওয়ার পরে ওই দিন বাদ আসর জানাজা শেষে উপজেলার মহিষাপোতা গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে তার মরদেহ দাফন করা হয়।

এ ব্যপারে নিহত চম্পার মা রেবা বেগম বানারীপাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। চম্পার বাবা-মা ও ভাইসহ স্বজনদের অভিযোগ- জামাতা সুমন বেপারী তার ব্রাণকাঠি গ্রামে সম্প্রপ্রতি ৬ শতক সম্পত্তি ক্রয় করেন। ওই সম্পত্তি ক্রয় করতে গিয়ে সে ঋণগ্রস্থ হয়ে পড়ায় তা পরিশোধের জন্য স্ত্রী চম্পাকে বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দিতে বলেন।

মেয়ের সুখের কথা ভেবে চম্পার দরিদ্র বাবা-মা সমিতি থেকে ঋন নিয়ে জামাতাকে ১৫ হাজার টাকা দেন। এতে সুমন সন্তুষ্ট না হয়ে স্ত্রীর কাছে আরও টাকা দাবি করেন। এ নিয়ে তাদের সংসারে কলহ সৃষ্টি হয়।

সুমন টাকার দাবিতে গালাগালসহ স্ত্রীকে নানাভাবে মানসিক ও শারিরীক নির্যাতন শুরু করে। ফলে গত ৮/৯দিন পূর্বে চম্পা শিশু কন্যাকে নিয়ে বানারীপাড়া পৌর শহরের এক নম্বর ওয়ার্ডে পিতা কুটিয়াল আনোয়ার মল্লিকের বাড়িতে এসে ওঠেন। ঘটনার দিন রবিবার সন্ধ্যায় সুমন শ্বশুর বাড়ি থেকে স্ত্রীকে নিয়ে যেতে চাইলে দু’জনের মধ্যে কথাকাকাটি হয়।

এ সময় সুমন স্ত্রী চম্পাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও মারধর করতে তেড়ে গেলে শ্বশুর-শাশুড়ি তাকে নিবৃত করেন। পরে সুমন তার বাড়ি ফিরে যান। সন্ধ্যা ৭টার দিকে চম্পা তার দুই বছরের শিশু কন্যা তানহাকে নিয়ে উপজেলার সদর ইউনিয়নের ব্রা²ণকাঠি গ্রামে স্বামীর বাড়ি ফিরে যান। সেখানে যাওয়ার পরে তাদের মধ্যে পুনরায় ঝগড়াঝাটি হয়। ওই দিন রাত ১০টার দিকে চম্পাকে অচেতন অবস্থায় তার শাশুড়িসহ প্রতিবেশীরা বানারীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। চম্পার শ্বশুর তৈয়ব আলী বেপারী ও শাশুড়ি আলেয়া বেগমের দাবি ঘরের আড়ার সঙ্গে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে চম্পা আত্মহত্যা করেছে।

অপরদিকে চম্পার পরিবারের দাবি- তাকে মারধর করে হত্যার পরে ঘরের আড়ার সঙ্গে মরদেহ ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। এদিকে আদরের চম্পাকে হারিয়ে তার পরিবারে বইছে শোকের মাতম। বাবা-মাসহ স্বজনদের আহাজারিতে হাসপাতাল ও এলাকার পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে।

এ ব্যাপারে বানারীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মাইনুল ইসলাম বলেন, চম্পার প্রকৃত মৃত্যু রহস্য উদঘাটনে তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *