মো: আল-আমিন (পটুয়াখালী): পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার লতাচাপলী ইউনিয়নের মম্বীপাড়া গ্রামের বধির প্রতিবন্ধী মো. ইউসুফের পুত্র জুয়েল (১৮)। ইচ্ছা ছিল সমাজের আরও পাঁচজন সুস্থ মানুষের মতো জীবনযাপন করা। কিন্তু গত দু’বছর ধরে অজানা এক দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে দিনদিন নিস্তেজ হয়ে যাচ্ছে।
জানা যায়, চার ভাইবোনের মধ্যে জুয়েল দ্বিতীয় সন্তান। ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময়ে তার পেটে ব্যাথা, বমি থেকে শুরু হয় জুয়েলের অসুস্থতা। অক্ষর জ্ঞানহীন বাবা-মা একদিকে সংসারের খরচ মিটানো, অন্য দিকে ছেলের চিকিৎসা নিয়ে খুবই চিন্তিত। এলাকার তরুণদের সহযোগিতা এবং পরিবারের প্রচেষ্টায় নামে মাত্র টাকা দিয়ে চলছে জুয়েলের চিকিৎসা। এখন বাড়ির শেষ সম্বলটুকু বিক্রি করে নিঃস্ব জুয়েলের পরিবার। তাই সমাজের বিত্তবানদের কাছে ছেলের চিকিৎসার জন্য সাহায্যের আবেদন করেছেন জুয়েলের পিতা-মাতা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বেশ কয়েকজন যুবক জুয়েলকে বাঁচাতে বিভিন্ন দোকান হাট-বাজার এবং মানুষের কাছে সাহায্য চেয়ে বেড়াচ্ছেন। তবে চিকিৎসকরা বলছেন অজানা কোনো বড় ধরনের রোগে ভুগছে জুয়েল। যে কারণে প্রয়োজন মোটা অংকের টাকা।
জুয়েলের বাবা ইউসুফ বলেন, আমি কানে শুনি না তাই আমাকে অনেকে কাজে নিতে চায় না। ছেলেটি যখন কাজ করতো তখন আমি দুশ্চিন্তামুক্ত থাকতাম। অসুস্থ হওয়ার পর আমি মানুষের কাছে গিয়ে হাত পাতি ওর চিকিৎসার জন্য। যখন যে কাজ পাই তা করি। কিন্তু আমার পক্ষে এখন মৃত্যু ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই।
মা লাইলী বেগম জানান, আমার সন্তানের চিকিৎসার জন্য এলাকার সকলের কাছে সহযোগিতা চাই। পরিবারের তিনবেলা খাবার মেটানোর জন্য আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী সকলের কাছে হাত পেতে সংসার চালাই।
কুয়াকাটা ২০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. সৈয়দ আশিকুর রহমান আশিক বলেন, জুয়েলের শারীরিক অবস্থা প্রাথমিক ভাবে দেখে মনে হচ্ছে তার খাদ্যনালীতে বড় ধরনের সমস্যা। অথবা ক্যান্সারজনিত সমস্যায় সে ভুগতে পারে। উন্নত পরীক্ষা- নিরীক্ষা ছাড়া কোন কিছু বলা যাচ্ছে না। সে কারণে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকাতে প্রেরণ করা হয়েছে।
জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক শিলা রানী দাস জানান, এসব অসুস্থ রোগীর চিকিৎসার ক্ষেত্রে উপজেলা কার্যালয় অথবা জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত আবেদন করলে আমরা বিষয়টি দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেবো।