শিরোনাম

পটুয়াখালীতে গোলের রসে তৈরি হচ্ছে গুড়

Views: 69

এস এল টি তুহিন,বরিশাল;: পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার বিস্তীর্ণ লোনাজল ভূমিতে প্রাকৃতিকভাবে গড়ে উঠেছে গোল গাছের বাগান।’গুড়ের তৈরি পায়েস কিংবা মুখরোচক খাবার পছন্দ করেন না এমন মানুষ কমই আছে।

কিন্তু মিষ্টিতে সুগার থাকায় সুস্বাদু বাহারি রকম খাবার খেতে পারেন না অনেকেই।’তবে প্রকৃতির সৃষ্ট গোল গাছের বাগান থেকে আহরিত রস কিংবা গুড়ে সুগার কম থাকায় দিনে দিনে ক্রেতাদের কাছে এর কদর বেড়েছে কয়েকগুন।

 

পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলায় বিস্তীর্ণ এলাকায় ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল থাকায় প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নিচ্ছে গোলগাছ। কিন্তু চাহিদা বাড়লেও ক্রমশই ধ্বংস করা হচ্ছে বাগান।’ফলে বাগানের পাশাপাশি কমছে গাছিদের সংখ্যাও।’গোল বাগান বিনষ্টের ফলে গুড় উৎপাদন কমে যাওয়ায় এখন অনেক গাছিরও পেশার পরিবর্তন হয়েছে।

শীতের শুরুতেই বিকালে গাছের ডগা কেটে হাড়ি পাতেন গাছিরা। রাতভর হাড়িতে জমা রস কাকডাকা ভোরে সংগ্রহ করেন তারা। পরে চাতালে জাল দিয়ে কঠোর পরিশ্রমের মধ্যে দিয়ে তৈরী করা হয় গুড়।’আর এসব গুড় গাছিরা বিক্রি করছেন ১৭০ থেকে দুই’শ টাকা কেজি দরে। বিশেষ করে রোগাক্রান্ত মানুষের কাছে লবনাক্ত এই গুড়ের চাহিদা অনেক।

কলাপাড়ার নীলগঞ্জ ইউপির নবীপুর গ্রামের গাছি জীবন হাওলাদার জানান, উপজেলার নীলগঞ্জ, তেগাছিয়া, নবীপুর গ্রামের ২৫ জন কৃষক এই কাজের সাথে সম্পৃক্ত। ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীরা বাড়িতে গিয়ে অগ্রিম টাকা দিয়ে আসেন গুড়ের জন্য। কিন্তু ক্রমাগত বাগান ধংসের ফলে এখন ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে পারছেন না।

একই গ্রামের রিতা রাণী জানান,৬০ বছর ধরে এই কাজ করছি। শুরুতে প্রতি ১৫ থেকে ২০ কলস রস পেতাম। এখন ৫ থেকে ৬ কলস রস পাই। এর আগে আমার ছেলে মেয়ে ও পুত্রবধুও এই কাজে করতেন তারা এখন পেশার পরিবর্তন করে ভিন্ন পেশায় যোগ দিয়েছেন।

বরিশাল বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন,’গোলগাছ মানুষের ঘর নির্মাণসহ প্রকৃতি রক্ষায় একটি বড় ভূমিকা পালন করে। গুড় থেকে বিশাল একটা অর্থ আয়ের পাশাপাশি হাজারো মানুষ এর উপর নিভর্রশীল হয়ে জীবীকা নির্বাহ করে।

তিনি বলেন,’গোলবন সংরক্ষনসহ বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় আন্ধারমানিক নদী তীরসহ লোনাজল ভূমিতে গোলচারা রোপন করা হবে।এই গোল গাছ রক্ষা করাসহ সব ধরনের ব্যাবস্থা গ্রহণের আশ্বাস করা হবে।

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *