শিরোনাম

৬ দফা দাবিতে সোনারগাঁও টেক্সটাইল শ্রমিক-কর্মচারীদের সংবাদ সম্মেলন

Views: 55

বরিশাল অফিস:: সোনারগাঁও টেক্সটাইল শ্রমিক-কর্মচারী সংগ্রাম পরিষদের ৬ দফা দাবিতে ফকিরবাড়ি রোডস্থ বরিশাল জেলা কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) বেলা ১২ টায় এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংগঠনের সভাপতি মাসুম গাজীর সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- সোনারগাঁও টেক্সটাইল লি: শ্রমিক-কর্মচারী সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি মাসুম গাজী, সাধারণ সম্পাদক মো: ইমরান, কোষাধ্যক্ষ মোশারেফ হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খুকুমনি, ইউনিয়নের উপদেষ্টা ও বাসদ বরিশাল জেলা শাখার সদস্য দুলাল মল্লিক, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট বরিশাল জেলা শাখার দপ্তর সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট বরিশাল জেলা শাখার সভাপতি বিজন শিকদার প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, ‘সোনারগাঁও টেক্সটাইলের শ্রমিক-কর্মচারীদের অধিকার আদায়ে দীর্ঘদিন ধরে আমরা লড়াই-সংগ্রাম করে আসছি। ২০২০ সালের মার্চ মাসে হঠাৎ করে মালিক কারখানা বন্ধ করে দেয়। যার পর ১১ মাস শ্রমিকরা ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন করার পর মালিক কারখানা পুনরায় চালু করতে বাধ্য হয়। ২০২১ সালে পুলিশ প্রশাসন ও জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধিবৃন্দসহ আন্দোলনকারীদের সাথে বৈঠকে মালিকপক্ষ শ্রমিকদের ৬ দফা দাবি মেনে কারখানা চালু করে। এই ৬ দফার মধ্যে অন্যতম ছিল ৯ মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধ, ২০১৮ সালের গেজেটঘোষিত বেতনস্কেল চালু করা, ৮ ঘন্টা কর্মঘন্টা চালু করা, শ্রমিক ইউনিয়ন গঠনের কার্যক্রমে সহায়তা করা ইত্যাদি। এর মধ্যে ৯ মাসের বকেয়া বেতন ৪৫ কিস্তিতে পরিশোধের প্রক্রিয়া শুরু করেও বেতনের ১৫ শতাংশ পরিশোধ করা শেষে বাকি ১০% পরিশোধ করা নিয়ে মালিক গতবছর থেকেই টালবাহানা শুরু করেছে। ২০২৩ সালের মধ্যে ৯ মাসের বকেয়া বেতন সমুদয় পরিশোধ করার কথা থাকলেও মালিক বকেয়া বেতনের ১০ শতাংশ পরিশোধ করেননি এবং সেটা কবে পরিশোধ করবেন তাও সুস্পষ্টভাবে কিছু বলেননি।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা আরও বলেন, ‘২০১৮ সালে টেক্সটাইল খাতের জন্য সরকারি গেজেটে একটি বেতনস্কেল ঘোষণা করা হয় যা ২০২৪ সালে এসেও সোনারগাঁও টেক্সটাইল কর্তৃপক্ষ বাস্তবায়ন করেনি। সরকার কর্তৃক ঘোষিত ন্যুনতম মজুরী বাস্তবায়ন না করা বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ সালের ১৪৯(১) ধারার সুস্পষ্ট লক্ষণ। কর্তৃপক্ষের এই বেআইনি আচরণ নিয়ে আমরা কলকারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনসহ সবার কাছে ৪ বছর ধরে লিখিত অভিযোগ জানিয়ে আসলেও এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো পক্ষ থেকেই কার্যকর পদপক্ষেপ দেখা যায়নি এবং আমাদের বেতনস্কেল ও বাস্তবায়ন হয়নি। অথচ ২০২১ সালে কারখানা খোলার সময়ে প্রশাসনের উপস্থিতিতে মালিক কর্তৃপক্ষ ২০১৮ সালের বেতনস্কেল চালু করার শর্তে রাজি হয়েই কারখানা খুলেছিল।’

বর্তমান দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির বাজারে এই নিম্নমানের বেতন নিয়ে জীবনযাপন মুশকিল উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ৫ বছর আগের সরকার ঘোষিত বেতনস্কেলও বর্তমান বাজারের জন্য মোটেই যথেষ্ট নয়, কিছুদিনের মধ্যে ২০২৪ সালের জন্য নতুন বেতনস্কেল ঘোষিত হতে যাচ্ছে। তবুও মালিক শ্রমিকদের এতটুকু বেতন বৃদ্ধি করতেও রাজি নয়। ৮ ঘণ্টার জায়গায় ১২ ঘণ্টা ডিউটি করেও আমরা ওভারটাইম পাইনা, এমনকি শ্রম আইনে স্বীকৃত অর্জিত ছুটির টাকা নিয়েও কর্তৃপক্ষ অনিয়ম করেন। এ বছরেও আমরা সরকার ঘোষিত ন্যূনতম মজুরী বাস্তবায়নের কোন আশ্বাস পাচ্ছিনা। জানুয়ারি মাসের বেতনে যদি যুগোপযোগী বেতনস্কেল দেয়া না হয় তাহলে আমাদের সামনে কঠোর আন্দোলনে যাওয়া ছাড়া আর কোন রাস্তা খোলা থাকবেনা। শ্রমিকদের সামনে রাজপথে অবস্থান নেয়া ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবেনা।

৬ দফা দাবি:

১। প্রতিশ্রুতি মোতাবেক মূল বেতনের বৃদ্ধিকৃত ২৫ শতাংশ’র বকেয়া ১০ শতাংশ বেতন পরিশোধ করতে হবে।

২। যুগোপযোগী বেতনস্কেল চালু কর, অবিলম্বে বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট দাও।

৩। ছুটি দেয়া নিয়ে অনিয়ম দূর কর, অর্জিত ছুটির মজুরির হিসাব বছরান্তে পরিশোধ কর।

৪। কোম্পানির লভ্যাংশে শ্রমিকের অংশ বেতনের সাথে পরিশোধ কর।

৫। প্রতি শিফটে ৮ ঘন্টা ডিউটি, ওভারটাইমে মূল বেতনের দ্বিগুণ মজুরি প্রদান কর। সব শিফটে নাস্তার ব্যবস্থা কর।

৬। অব্যাহতি প্রদান করলে বা স্বেচ্ছায় অবসরে গেলে শ্রম আইন অনুযায়ী শ্রমিক কর্মচারীদের সমুদয় পাওনাদি পরিশোধ করতে হবে।

 

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *