শিরোনাম

কলাপাড়ায় বরই চাষে মিজানের চমক

Views: 43

 

মো:আল-আমিন, পটুয়াখালী : বাগানের চারদিকে তাকালে শুধু বরই আর বরই। ছোট গাছগুলো বরইয়ের ভারে নুইয়ে পড়েছে। আপেলের মতো দেখতে লাল টুকটুকে বড় বড় বরই শোভা পাচ্ছে গাছে। গাছগুলো রোপনের পর সঠিক পরিচর্যায় বেড়ে উঠে মাত্র সাত মাসে দারুণ ফলন দিয়েছে। গাছে গাছে দুলছে লাল আভা ছড়ানো থোকায় থোকায় কুল। পাকতে শুরু করেছে সপ্তাহ তিনেক আগে থেকে। বিক্রিও শুরু হয়েছে। আকার ও স্বাদে ভালো হওয়ায় বাজারে মিজানুর রহমানের বাগানের কুলের চাহিদাও অনেক। এখন ১০০ টাকা দরে বিক্রি করছেন।

বরইয়ের দৃষ্টিনন্দন এ বাগান গড়ে তুলেছেন পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার টিযাখালী ইউনিয়নের মধ্য টিয়াখালীর
গ্রামের মিজানুর রহমান। বরই চাষী মিজানুর রহমান মধ্য টিয়াখালীর গ্রামের সাবেক মেম্বার ফকরুদ্দিনের ছেলে।

শীতকালীন অন্যান্য ফলের তুলনায় বরই অনেক বেশি সুস্বাদু। চলতি বছর আবহাওয়া অনুকুলে ও ফলন ভালো হওয়ায় বরইয়ের বাম্পার ফলন হয়েছে।
এক সময় দেশি টক জাতীয় বরইয়ে বাজার ভরা থাকলেও এখন কৃষি গবেষণার ফলে আমাদের দেশে অনেক ধরনের সুমিষ্ট ও সুস্বাদু বরই উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে। অবশ্য বরইকে অনেকে কুল নামেও চেনে-জানে। দেশি টক জাতীয় বরইয়ের পাশাপাশি রয়েছে আধুনিক জাতের নারকেল বরই, আপেল কুল, বাউকুল ও থাইকুল। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে বরইয়ের আবাদ হচ্ছে। বরই চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি পুষ্টির চাহিদাও পূরণ হচ্ছে। বরই এমন একটি ফল- যা শিশু থেকে শুরু করে সব বয়সী মানুষের কাছে অত্যন্ত প্রিয়। তবে টক বরইয়ের চাহিদাও রয়েছে এক শ্রেণির মানুষের কাছে। এ মুখরোচক ফলটি শীতকালে আমাদের দেশের প্রায় সব অঞ্চলে পাওয়া যায়। শখের বশেও অনেকে বাড়ির ছাদে বরইয়ের চাষ করছেন। সুস্বাদুর পাশাপাশি বরই পুষ্টিগুণে ভরা। বরইয়ে রয়েছে ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও পটাসিয়ামসহ নানা উপাদান- যা মানবদেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, মিজানুর রহমানের বাগানে কুল গাছে ভরা। লাল সাদা আর মেরুন রঙ্গেরবাহারি ফলে ভরে গেছে গাছগুলো। কর্মচারীরা ঝুড়ি ভর্তি করে বিক্রির জন্য গাছ থেকে ছিড়ছেন পাকা কুল। পাখির ছোবল থেকে কুল রক্ষার জন্য পুরো বাগান জুড়ে টানিয়ে দেয়া হয়েছে জাল। চলতি মৌসুমেরশুরু থেকেই পাইকারি ব্যবসায়ীরা তার বাগান থেকেই বড়ই কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
এখন মিজানের বাগানে ৪২৫টি মতো বরই গাছ রয়েছে। মাত্র ৭ মাসের মধ্যেই প্রতিটি গাছে প্রচুর পরিমাণে বরই ধরেছে। স্বাদে সুমিষ্টি হওয়ার কারণে এক মন বরই চার হাজার টাকা দরে বিক্রি করেছেন। এ থেকে প্রথম বছরেই বিপুল টাকা আয় করার সম্ভাবনা দেখছেন তিনি। একই সঙ্গে তাদের বাগান থেকে বারোমাসি থাই পেয়ারা আম ও বিক্রি করবেন। বর্তমানে তার বাগান ২০৫ শতাংশ জমি রয়েছে।

বরই চাষী মিজানুর রহমান জানান, কৃষি অফিস থেকে আমাকে অনেক সুপরামর্শ দিয়েছে। আগামি বছর আরো ভাল ফলন ফলাতে পারবো বলে আশা করি। সাত মাসের মাথায় গাছগুলো মাশআল্লাহ ভালো ফলন দিয়েছে। তবে এ বছর শেষের দিকে আবহাওয়া খারাপ থাকায় অনেক ফুল ঝড়ে পাড়েছে ও পাখির আক্রমনে অনেক বরই নষ্ট হয়েছে।

কলাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ আর এম সাইফুল্লাহ বলেন, মিজান একজন সফল চাষি। তাকে কৃষি অফিস সকল সহযোগীতা করে যাচ্ছে। আমাদের মাঠ পর্যায়ে সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আছেন। তারা কুল চাষে কৃষকদের সব রকম পরামর্শ দিয়ে আসছেন।

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *