শিরোনাম

বাউফলের আসলামের বাঁচার আকুতি

Views: 154

 

মো:আল-আমিন, পটুয়াখালী: মাথা গোঁজার ঠাঁই হলেও নেই দুবেলা দুমুঠো খাবারের নিশ্চয়তা। পরিবারের উপার্জনক্ষম কোনো সদস্য না থাকায় অনাহার অর্ধাহারে দিন কাটছে এক অসহায় পরিবারের। এর ওপর আবার আছে প্রতিমাসে কয়েক হাজার টাকার ওষুধের বোঝা। এমনই মানবেতর জীবনযাপন করছে পটুয়াখালীর বাউফলে আসলাম হাওলাদার নামের এক যুবকের পরিবার।

স্থানীয় ও আসলামের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কালাইয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আ. জলিল হাওলাদারের একমাত্র ছেলে আসলাম হাওলাদার (২৮)। বছর কয়েক আগেও ভালোভাবেই চলছিল আসলামদের পরিবার। ২০১২ সালে এসএসসি এবং ২০১৪ সালে এইচএসসি পাশ করা আসলামের জীবন হঠাৎ আকস্মিক ঝড়ে সব এলোমেলো হয়ে যায়।

২০১৫ সালের নভেম্বরে নিজ বাড়িতে গাছের ডাল কাটতে গিয়ে গাছ থেকে পড়ে মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙে যায় আসলামের। প্রথমে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে সেখান থেকে বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বরিশালে চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। ঢাকা ক্রিসেন্ট পপুলার হাসপাতালে কয়েক লাখ টাকা খরচ করে চিকিৎসা নিয়েও পুরোপুরি সুস্থ হতে পারেনি আসলাম।

সেই থেকে পঙ্গুত্ব বরণ করে বেঁচে আছে আসলাম। অন্যদিকে আসলামের বয়োবৃদ্ধ বাবা জলিল হাওলাদার এ পর্যন্ত ৩ বার ব্রেইন স্ট্রোক করে শয্যাশায়ী। প্রতিবেশী ও স্বজনদের সহায়তায় ১টি গরু পালন করে কোনোভাবে সংসার চালিয়ে যাচ্ছিলেন আসলামের মা তাছলিমা বেগম। কিন্তু বিপদ যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না পরিবারটির।

বুধবার (২৪ জানুয়ারি) সকালে বাচ্চা প্রসবের সময় বাচ্চাসহ গরুটি মারা যায়। অসহায় পরিবারের একমাত্র আয়ের উৎস হারিয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে পুরো পরিবারটি।

অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা ভেবে কান্না বিজড়িত কণ্ঠে আসলামের বাবা আ. জলিল হাওলাদার বলেন, আমার পঙ্গু ছেলেকে নিয়ে কীভাবে বাচঁব? আমি সরকারের কাছে সহযোগিতা কামনা করছি।

প্রতিবেশী মনির হাওলাদার বলেন, জলিল ভাই অসুস্থ মানুষ। তার ছেলেটাও পঙ্গু। তাদের কোনো আয় রোজগার নাই। সরকারি সহযোগিতা পেলে সে হয়তো বেঁচে থাকতে পারবে।

অপর প্রতিবেশী লিটন হাওলাদার বলেন, অনুদান পাওয়া ১টি গরুর দুধ বিক্রি করে পরিবারটি চলত কিন্তু গরুটি মারা যাওয়ায় পর থেকে তারা খুব অসহায় হয়ে গেছে। সরকারি কোনো আর্থিক সহযোগিতা পেলে পরিবারটির উপকার হবে।

সমাজের বিত্তবান মানুষ ও সরকারের মানবিক সহায়তা চেয়ে আসলাম বলেন, আমাদের সংসারে হাল ধরার কেউ নাই। ওষুধ খেতে পারি না, খাবারেও কষ্ট। আমার বাবা-মাকে নিয়ে আমি বাঁচতে চাই।

আসলামের পরিবারকে বাউফল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বশির গাজী ১টি গরু কিনে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, প্রতিবন্ধী আসলামের পরিবারের যে কোনো সহায়তা বাউফল উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে করা হবে।

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *