বরিশাল অফিস :: কিশোর-কিশোরীদের পরিবার পরিকল্পনা ও প্রজনন স্বাস্থ্য বিষয়ে সচেতন করার লক্ষ্যে বরিশালের আঞ্চলিক ভাষায় জারিগানে কনটেন্ট নির্মাণ করবে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সিরাক বাংলাদেশ।
এ লক্ষ্যে বরিশাল নগরীর বটতলা এরিয়ার হোটেল ‘রোজ ইন’ এর মিলনায়তন কক্ষে বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সাড়ে দশটায় ‘কনটেন্ট ভ্যালিডেশন’ শীর্ষক একটি ওয়ার্কশপ অনুষ্ঠিত হয়।
ইউএসআইডির অর্থায়নে জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়ের কারিগরি সহায়তায় ‘নলেজ সাকসেস’ শীর্ষক প্রকল্পের কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য ও পরিচিতি পর্ব পরিচালনা করেন, সিরাক বাংলাদেশের উপ-পরিচালক মো.সেলিম মিয়া। বিষয়ভিত্তিক প্রকল্প উপস্থাপন করেন সিরাক বাংলাদেশ এর সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার নুসরাত শারমিন রেশমা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবার পরিকল্পনার বরিশাল বিভাগীয় পরিচালক মো. নিয়াজুর রহমান বলেন, সরকার সরকারি-বেসরকারি সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে কিশোর-কিশোরীদের পরিবার পরিকল্পনা ও প্রজনন স্বাস্থ্য সচেতনতা তৈরিতে কাজ করে যাচ্ছে। এটি খুবই জরুরি একটি বিষয়। আর সচেতনতা তৈরির মাধ্যম হিসেবে বক্তব্য ও সাধারণ কথার চেয়ে আঞ্চলিক ভাষায় নির্মিত জারিগান, পথ নাটক বা পুঁথিপাঠ প্রভাবশালী মাধ্যম।
তিনি আরও বলেন, এসব কনটেন্টের মাধ্যমে সহজেই সহজ ভাষায় কৈশোর ও প্রজনন স্বাস্থ্য বিষয়গুলোকে মানুষের সামনে উপস্থাপন করা যাবে। সিরাক-বাংলাদেশ আঞ্চলিক ভাষাকে প্রাধান্য দিয়ে যে প্রকল্পের উদ্যোগ নিয়েছে তা সকল অঞ্চলের কিশোর-কিশোরীদের তথ্য প্রাপ্তির মাধ্যমে সচেতনতা সৃষ্টিকে আরো ত্বরান্বিত করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পরিবার পরিকল্পনার বরিশাল জেলা এর সহকারী পরিচালক মো. নকিবুল হাসান ও মো. সাইদুর রহমান, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সুপ্রভাত হালদার, বরিশাল জেলা প্রশাসকের সহকারী কমিশনার দেবজামিকর, সভাপতির বক্তব্য রাখেন পরিবার পরিকল্পনা উপপরিচালক মো: মিজানুর রহমান। সমাপনী বক্তব্য রাখেন সিরাক বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক এসএম সৈকত।
সিরাক-বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক এসএম সৈকত সমাপনী বক্তব্যে বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে সব মানুষের দোরগোড়ায় পরিবার পরিকল্পনা ও প্রজনন স্বাস্থ্য বিষয়ক পরিষেবা পৌঁছে দিতে সরকার কাজ করছে।
তিনি আরও বলেন, সরকারের পাশাপাশি এই উন্নয়ন পরিকল্পনা আরো ত্বরান্বিত করতে দেশের ৫ জেলায় (বরিশাল, চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ ও রাজশাহী) কিশোর-কিশোরীদের পরিবার পরিকল্পনা ও স্বাস্থ্য সচেতনতা বিষয়ক অডিও এবং ভিডিও কনটেন্ট তৈরিতে কাজ করছে। তবে এবার আঞ্চলিক ভাষায় (জারি, গম্ভীরা, পালা, ধামাইল, গীতিনাট্য) গানে কনটেন্ট তৈরিতে কাজ করছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সিরাক বাংলাদেশ।
উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, সিরাক-বাংলাদেশের বিভাগীয় সমন্বয়কারী মো. নাঈম হোসেন খান, এবং বরিশালের বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
উল্লেখ্য, সিরাক-বাংলাদেশ ১৯৯১ সালে এর প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই মানবাধিকার, বাল্যবিবাহ ও যৌন সহিংসতা রোধ, নারী, শিশু ও তরুণদের দক্ষতা বৃদ্ধি, গণতান্ত্রিক সচেতনতা, কর্মমুখী শিক্ষা, পরিবার পরিকল্পনা, স্বাস্থ্য অধিকার, নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে সরকারের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে সারাদেশে সুনামের সাথে বিভিন্ন প্রকার উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।
এছাড়াও জাতিসংঘের ইসিওএসওসির সাথে বিশেষ পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তরুণদের নীতি ও উন্নয়নমূলক বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সিরাক বাংলাদেশ সরকারের সমাজসেবা অধিদপ্তর, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীন এনজিও বিষয়ক ব্যুরোতে নিবন্ধিত একটি সংস্থা।