শিরোনাম

বরিশালে শিক্ষার্থীদের স্কুলে যেতে হয় আলাদা পোশাক নিয়ে!

Views: 60
বরিশাল অফিস  :: শেখের বেটি (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) মোগো কারেন্ট (বিদ্যুৎ) দিছে, বিভিন্ন ধরনের ভাতা দিছে। এ্যাহন এই অল্প একটু রাস্তা কইরা দিলেই মোরা খুশি হবো।  মাত্র ছয়শ’ ফুট দৈর্ঘ্যরে এ রাস্তাটির জন্য মোগো বাড়ির ছেলে-মেয়েদের ভাল কোন পরিবারের সাথে বিয়ে পর্যন্ত হচ্ছেনা। প্রতিবার ভোট আসলেই চেয়ারম্যান ও মেম্বর প্রার্থীরা আমাদের কাছে ভোট চাইতে এসে নির্বাচিত হয়েই রাস্তা করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছেন।  নির্বাচিত হওয়ার পর তারা আর রাস্তার ধারে কাছেও আসেন না। সোমবার এই কতা গুলোবলছে আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের পশ্চিম আস্কর গ্রামের গৃহবধু বনলতা মন্ডল।
এসময় একই এলাকার কৃষক বিশ্বনাথ মন্ডল, প্রদীপ বিশ্বাস বলেন,উপজেলার পশ্চিম আস্কর ও দক্ষিণ নাঘিরপাড় একটি গ্রামের কয়েকটি বাড়ির শত শত বাসিন্দারা। ওইসব বাড়ির ছেলে-মেয়েদের কাঁদা পানি পেরিয়ে বিদ্যালয়ে যেতে হয় আলাদা পোশাক নিয়ে। বর্ষা মৌসুমে তাদের চলাচলের একমাত্র ভরসা নৌকা।

স্থানীয় সূত্রে জান গেছে, বাড়ি থেকে যে পোশাক পরে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের উদ্দেশ্যে রওনা হয় তা কাঁদা পানিতে পরিধানের অযোগ্য হওয়ায় সাথে নিয়ে যাওয়া আলাদা ড্রেস পড়ে ক্লাস করেন ওইসব শিক্ষার্থীরা। এ যেন আলোর নিচে অন্ধকার। ঘটনাটি জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের পশ্চিম আস্কর ও দক্ষিণ নাঘিরপাড় গ্রামের সীমান্তবর্তী বিলমুখী প্রদীপ বিশ্বাসের বাড়ি থেকে বিশ্বনাথ মন্ডলের বাড়ি পর্যন্ত মাত্র ছয়শ’ ফুট দৈর্ঘ্যরে কাঁদা-পানির নাম সর্বস্ত্র রাস্তার।

সরেজমিনে দেখা গেছে, মাত্র ছয়শ’ ফুট দৈর্ঘ্যরে ওই রাস্তাটির জন্য শিক্ষার্থীদের যাতায়াত, কৃষিকাজ, কৃষি পণ্য পরিবহন, মুমূর্ষ রোগীদের চিকিৎসা সেবাসহ নানাবিধ ভোগান্তির মধ্যে রয়েছেন শত শত বাসিন্দারা। গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, শত বছর পূর্বে তৎকালীন জমিদাররা প্রজাদের যাতায়াতের জন্য প্রায় তিন কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে ও ২৫ ফুট প্রস্থের হালোটের জমি বরাদ্দ দিয়েছেন। বর্তমানে ওই হালোটের জমি দখল করে নিয়েছেন স্থানীয় কতিপয় ব্যক্তি।

সরেজমিনে দেখা যায়, নাঘিরপাড় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী লিনা অধিকারী বই ও খাতার সাথে বাড়তি স্কুল ড্রেস নিয়ে স্কুলের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছে। লিনা জানায়, আমার পরিহিত পোশাক জল ও কাঁদায় ভিজে যাওয়ার কারণে বিদ্যালয়ে গিয়ে বাড়তি নেওয়া ড্রেস পরিবর্তন করে ক্লাশে যাবো। নাঘিরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী এনা মিস্ত্রী জানায়, রাস্তা না থাকার কারণে আমরা বর্ষা মৌসুমে স্কুলে যেতে পারিনা।

এ বিষয়ে বাগধা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বাবুল ভাট্টি বলেন, আমার কাছে কেই বলেনাই এই রাস্তার জন্য। আমি এখন জানতে পেয়েছি চলতি শুকনো মৌসুমে বোরো ধান কাঁটার পর জরুরী ভিত্তিতে জনগুরুত্বপূর্ণ ওই রাস্তাটি নির্মান করে দেওয়া হবে।

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *