বরিশাল অফিস :: বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী জান্নাতুল ফেরদৌসি। লেখাপড়ার পাশাপাশি কাজ করতেন পথশিশু ও অসহায়দের নিয়ে। যুক্ত ছিলেন বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে। সব কিছু ভালোই চলছিল। কিন্তু ২৫ জানুয়ারি হঠাৎ এক দুর্ঘটনা যেন সব এলোমেলো করে দিলো।
সেদিন অসাবধানতাবশত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের তিনতলা থেকে পড়ে গিয়ে জান্নাতের মেরুদণ্ডে প্রচণ্ড আঘাত লাগে। পরে তার স্পাইনাল কর্ডে ফ্র্যাকচার হয়েছে। সঙ্গে ডান পায়ের গোড়ালিও মারাত্মকভাবে ভেঙে গেছে। স্পাইনাল ফ্র্যাকচারের কারণে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। ডান পায়ের গোড়ালিতে করা হয়েছে প্লাস্টার। তার কোমর থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত প্যারালাইজড হয়ে আছে। কোমরের নিচ থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত কোনো সংবেদন পাচ্ছে না। ঢাকায় একটি কক্ষ নিয়ে নিবিড় যত্নে আছেন তিনি।
জান্নাত বর্তমানে ঢাকার শ্যামলিতে ট্রমা হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ছয় মাসের ফিজিও থেরাপি ও অন্যান্য ট্রিটমেন্টের জন্য অন্তত সাত থেকে আট লাখ টাকার প্রয়োজন।
জান্নাতের ভাই জিওন জানান, প্রথমে বরিশালের শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার একটি সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সর্বশেষ থেরাপি দেওয়ার জন্য তাকে ট্রমা হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, সেখানে পঙ্গু হাসপাতালের সাবেক ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. আব্দুল গণি মোল্লার তত্ত্বাবধায়নে অস্ত্রোপচার করানো হয়। ডা. নাসির উদ্দীন থেরাপি দিচ্ছেন। তবে প্রতি মাসে দেড় লাখের বেশি খরচ হচ্ছে। যা পরিবারটির পক্ষে বহন করা সম্ভব হচ্ছে না।
ইংরেজি বিভাগের ছাত্রকল্যাণ পরিষদের সহ-সভাপতি নাহিদ আকন্দ বলেন, আমাদের বিভাগ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি সহযোগিতা করার। বিত্তবানদেরও আহ্বান থাকবে এগিয়ে আসার।
ইংরেজি বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহযোগী অধ্যাপক তানভীর কায়ছার বলেন, বিভাগ থেকে যতটুকু সহযোগিতা করা প্রয়োজন আমরা করছি।শিক্ষার্থীর বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে ওই শিক্ষার্থীর খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। চিকিৎসার জন্য অনেক টাকা প্রয়োজন। শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষার্থীসহ সমাজের বিত্তবানদের প্রতি আহ্বান থাকবে, তারা যেন সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেন।