শিরোনাম

পটুয়াখালীর মাছ ব্যবসায়ীর লাশের সন্ধান মেলেনি

Views: 49

বরিশাল অফিস :: পটুয়াখালী জেলার রাঙ্গাবালী থেকে মাছ নিয়ে ট্রলারে গলাচিপায় যাচ্ছিলেন ট্রলারের মালিক  রাশেদ খান। পথে আগুনমুখা নদীর মোহনায় ট্রলারে হামলা করে গত বৃহস্পতিবার মাছ লুট করেন ট্রলারের এক মাঝি। এর পর থেকে ওই ব্যবসায়ী নিখোঁজ। পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে, ট্রলারের মালিককে হত্যার পর লাশ সাগরে ফেলে দিয়েছেন ওই মাঝি।

ট্রলারমালিক রাশেদের বাড়ি রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়নের দক্ষিণ চরমোন্তাজ গ্রামে। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি নিখোঁজ থাকায় দিশাহারা হয়ে পড়েছেন স্বজনেরা। নৌ পুলিশের সঙ্গে রাশেদের ভাইয়েরা তাঁকে বঙ্গোপসাগরে খুঁজছেন। অন্যদিকে বাড়িতে তাঁর স্ত্রী-সন্তানদের আহাজারি থামছেই না।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, রাশেদ নিজের ট্রলারে মাছ নিয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চরমোন্তাজ থেকে গলাচিপার উদ্দেশে রওনা দেন। ট্রলারে রাশেদের সঙ্গে মাঝি হিসেবে ছিলেন ইব্রাহিম হোসেন ও জামাল মোল্লা। ট্রলারটি গলাচিপা যাওয়ার পথে পাটুয়া এলাকা অতিক্রম করলে মাঝি ইব্রাহিম অন্য মাঝি ও ট্রলার মালিকের ওপর হামলা করেন।
জামাল আত্মরক্ষায় নদীতে ঝাঁপ দেন এবং সাঁতরে তীরে ওঠেন। কলাপাড়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর তাঁকে বরিশালের শের–ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিন্তু ট্রলারসহ রাশেদের কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না। এ ঘটনায় গত শুক্রবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার বিএফডিসি ঘাটে মাছ বিক্রি করতে এসে পুলিশের হাতে আটক হন মাঝি ইব্রাহিম।
পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন জানায়, ইব্রাহিম মাছ লুটের জন্য অন্য মাঝিকে বেলচা দিয়ে আঘাত করেন। ওই মাঝি নদীতে লাফিয়ে পড়ে নিজেকে রক্ষা করেন। ট্রলারের ভেতরে রাশেদ সম্ভবত ঘুমিয়ে ছিলেন। তাঁর ব্যাপারে ইব্রাহিম মুখ খুলছেন না। জব্দ করা ট্রলার থেকে রক্তমাখা কাপড় জব্দ করা হয়েছে। তাঁকে হত্যা করে লাশ নদীতে ফেলে দেওয়া হতে পারে বলে পুলিশ ধারণা করছে।
রাশেদের সংসারে স্ত্রী ছাড়া দুই মেয়ে ও এক ছেলে আছে। বড় মেয়ে রাশমনি (১৩) ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ছে। অন্য দুজনের একজন নবজাতক ও অন্যটির বয়স এক বছরের একটু বেশি। তিন ভাইয়ের মধ্যে রাশেদ সবার বড়। মাছের ব্যবসা করে অন্য ভাইদের পড়ালেখা করাচ্ছিলেন। রাশেদ নিখোঁজ থাকায় দিশাহারা হয়ে পড়েছে পরিবারটি।
রাশেদের নিখোঁজের ঘটনায় পুরো পরিবার উৎকণ্ঠায়। শিশুসন্তান নিয়ে আহাজারি করছেন স্ত্রী সুরাইয়া। সন্তানদের বুকে নিয়ে অঝোরে কান্নাকাটি করছেন। অবুঝ সন্তানেরা জানে না তাদের বাবার কী হয়েছে?
রাঙ্গাবালী থানার ওসি মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, এ ঘটনায় শুক্রবার নিখোঁজ রাশেদের ভাই আল-আমিন বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। নিখোঁজ রাশেদের সন্ধানে কাজ করছে নৌ পুলিশ। তবে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত লাশের সন্ধান মেলেনি।’
image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *