শিরোনাম

বিলুপ্তের পথে বরিশালে আখ চাষ

Views: 61

বরিশাল অফিস :: বরিশাল জেলার উজিরপুর উপজেলার বামরাইল ইউনিয়নের কালিহাতা, ঘন্ডেশ্বর , ভরসাকাঠি গ্রামে বিগত সময় আখ চাষ হত। সেখান থেকে উৎপাদন হতো হাজার হাজার মেট্রিক টন আখের গুড়। বর্তমানে ভেজালের ভিড়ে প্রকৃত আখের গুড় দেখা যায় না।

ভেজাল মুক্ত আখের গুড় সংগ্রহ করতে এলাকার লোকজনের চাহিদা ছিল ব্যাপক । ভরসাকাঠি গ্রামের আখ চাষী মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন সিকদার জানান তিনি এ বছর ৫২ শতাংশ জমিতে আখ চাষ করেন এতে তার সব মিলিয়ে খরচ হয় এক লক্ষ টাকা, তার চাষ কৃত আখ থেকে প্রায় এক হাজার কেজি গুড় উৎপাদন হয় যার বাজার মূল্য ২ লক্ষ টাকা।

ঘন্ডেশ্বর গ্রামের অপর কৃষক মোহাম্মদ মোশারফ মল্লিক জানান, তিনি মাত্র ৪৫ শতাংশ জমিতে আখ চাষ করে খরচ করেছেন ৭৫ হাজার টাকা। আখ থেকে উৎপাদিত গুড় বিক্রি করে সেখান থেকে আয় করেছেন এক লক্ষ দশ হাজার টাকা।

স্থানীয় শফিকুল ইসলাম জানান, এক
সময় এ অঞ্চল আখের গুড়ে র জন্য বিখ্যাত ছিল,কিন্তু কালের বিবর্তনে আখ চাষ হারিয়ে
গিয়েছে। কৃষকরা আরো জানান,আখ চাষ অত্যন্ত লাভজনক কিন্তু সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে, উন্নত জাতের আখের চারা, রোগ বালাই সনাক্ত ও প্রতিকারের বিষয় অজ্ঞতার কারণে
আমরা লাভবান হতে পারছি না।
এ বিষয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর আমাদের কোন সহায়তা করছে না। তাদের সাথে
যোগাযোগ করলে তারা বলেন আখ চাষের উপরে সরকারের কোন বরাদ্দ নেই।

স্থানীয় সিনিয়র স্কুল শিক্ষক মোহাম্মদ নান্নু জান, এখানকার কৃষকদের উৎপাদিত গুড় স্থানীয়রা ২০০ টাকা কেজি দরে কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি কিনে নিয়ে যায়। যেহেতু ভেজালমুক্ত গুড়ের প্রচুর চাহিদা রয়েছে এটি একটি সম্ভাবনাময় ফসল। তাই এই আখ চাষকে সম্প্রসারণ করে ভেজালমুক্ত গুড় উৎপাদনের দাবি করেন এই শিক্ষক।

কৃষকেরা আরো জানান, মার্চ- এপ্রিল মাসে আখের চারা রোপন করলে কোন প্রকার খরচ ছাড়াই ফেব্রয়ারি মাসে আঁখ মাড়াই করা সম্ভব। কিন্তু মাঝেমধ্যে বিভিন্ন প্রকার রোগ বালাই দেখা দেয়। রোগবালাই নিরাময়ের জন্যই দরকার সরকারি পরামর্শ ও প্রতিকারের নির্দেশনা। কৃষক আরো জানান, আখ চাষের বর্তমানে প্রধান শত্রু হল ইঁদুর।

এ বিষয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ কফিল বিশ্বাস জানান,’আমাদের সরাসরি আখের উপরে কোন প্রকল্প নেই।তবে আমরা সকল প্রকার পরামর্শ দিয়ে থাকি,রোগবালাই হলে কখন কি কীটনাশক বা বালাই নাশক ব্যবহার করতে হবে তার সকল পরামর্শ আমরা দিয়ে থাকি। এখন থেকে আমরা এ অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী আখ চাষ ফিরিয়ে আনার জন্য।চেষ্টা করব ।

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *