শিরোনাম

বরিশাল আ’লীগের প্রধান কার্যালয়ে ঝুলছে তালা, থমকে গেছে কার্যক্রম

Views: 132

এস এল টি তুহিন, বরিশাল :: বরিশাল জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে দলীয় নেতা-কর্মীদের আনাগোনা নেই। বিগত সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পর থেকে চুপসে গেছেন জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মী।

সন্ধ্যার পর দলীয় কার্যালয়ে থাকে সুনসান নীরবতা। অফিস কেয়ারটেকার দুই বেলা অফিস খুললেও বড় কোনা কর্মসূচি ছাড়া সিনিয়র নেতাদের দেখা মেলে না আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে। দলের একাংশের যাবতীয় সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালিত হয় ব্যক্তির বাসায়। অন্যদিকে দলীয় প্রতিপক্ষ গ্রুপের যে কোনো রাজনৈতিক আয়োজন হয় সিটি এবং সংসদ নির্বাচনে ব্যবহৃত সার্কিট হাউস চত্বরের প্রধান নির্বাচনি কার্যালয়ে।

গত বছরের ১২ জুনের সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আগেও জমজমাট ছিল বরিশাল জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ কার্যালয়। প্রতিদিন দুই বেলা দলীয় নেতা-কর্মীদের পদভারে মুখরিত থাকত কার্যালয়টি। কিন্তু সিটি নির্বাচনে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদিক আবদুল্লাহকে মনোনয়ন না দিয়ে তার চাচা আবুল খায়ের আবদুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাতকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়ার পর পাল্টে যায় চিরচেনা সেই চিত্র।


সাদিক আবদুল্লাহ মনোনয়ন না পাওয়ায় তার অনুসারী নেতা-কর্মীরা চুপসে যায়। দলীয় কার্যালয়ে তেমন একটা আনাগোনা নেই তাদের। অফিস কেয়ারটেকার প্রতিদিন দুই বেলা অফিস খুললেও বড় কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি ছাড়া দলীয় সিনিয়র নেতাদের দেখা মেলে না কার্যালয়ে। বিভিন্ন দিবস ভিত্তিক কর্মসূচির প্রস্তুতি এবং দলীয় সভা আয়োজন হয় মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র সাদিক আবদুল্লাহর কালীবাড়ি রোডের বাসায়।

অন্যদিকে বরিশাল, আওয়ামী লীগে সাদিক আবদুল্লাহ পরিবার বিরোধী হিসেবে পরিচিতরা ভিড় করেন সিটি এবং সংসদ নির্বাচনে নৌকার প্রধান নির্বাচনি কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত সার্কিট হাউসের সামনের অফিসে। বিভিন্ন দিবস ভিত্তিক আয়োজন এবং দলীয় কর্মসূচি প্রধান নির্বাচনি কার্যালয়েই পালন করে- সিটি মেয়র আবুল খায়ের আবদুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত এবং সদর আসনের সংসদ সদস্য জাহিদ ফারুকের অনুসারীরা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি আফজালুল করিম বলেন, সংগঠনের প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারি তারা। এ কারণে আমরা সংগঠনের ব্যানারে কোনো দলীয় কর্মসূচি করতে পারি না। মেয়র এবং সদর আসনের এমপির অনুসারী যাদের বিভিন্ন সময় সংগঠন থেকে দূরে সরিয়ে রাখা হয়েছে তারাও দলীয় কর্মসূচি করতে চায়। আমরা তাদের নিয়ে প্রধান নির্বাচনি কার্যালয়ে বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করি। কর্মসূচি কোথায় হলো সেটা বিষয় নয়, আমরা কর্মসূচি পালন করি সেটাই মুখ্য বিষয়। আমরা চাই মহানগর আওয়ামী লীগের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি যারা সিটি এবং সংসদ নির্বাচনে নৌকার বিরোধিতা করেছে সেই কমিটি ভেঙে নতুন কমিটি করা হোক। বর্তমান কমিটি ভেঙে নতুন কমিটি করা হলে দলীয় কার্যালয়ে নেতা-কর্মীদের চাঞ্চল্য ফিরবে বলে তিনি আশা করেন।


বরিশাল মহানগর সেরনিয়াবাতে আওয়ামী লীগের সহসভাপতি গাজী নাইমুল হোসেন লিটু বলেন, আমরা যে কোনো দিবস ভিত্তিক কর্মসূচি দলীয় কার্যালয়ের সামনেই করে থাকি। স্থান সংকটের কারণে অনেক সময় বিভিন্ন প্রস্তুতি সভা ও দলের বর্ধিত সভা দলীয় কার্যালয়ে আয়োজন না করে নেতার বাসায় আয়োজন করা হয় আধুনিক প্রযুক্তি এবং সুযোগ-সুবিধা থাকার কারণে। তবে কর্মসূচি থাকলে অবশ্যই নেতা-কর্মীরা দলীয় কার্যালয়ে যায়।

বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তালুকদার মো. ইউনুস বলেন, নেতারা নিয়মিত দলীয় কার্যালয়ে যাওয়া আসা করেন। যে কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি জেলা ও মহানগর একত্রে কার্যালয়ে করে থাকে। এ ছাড়া অনেক সভা আয়োজন করা হয়ে থাকে আমাদের রাজনৈতিক গুরু শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাতের কালীবাড়ি রোডের বাসায়।

 

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *