বরিশাল অফিস :: এক টাকার মধ্যে ইফতারির সাতটি আইটেম পাওয়া যায়। যারমধ্যে-আলুর চপ, পেঁয়াজু, বেগুনি, সবজির বড়া, কুমড়োর বড়া, শিমের চপ, কলার চপ প্রতিটির প্রতি পিসের দাম একটাকা। এর বাহিরে ডিমের সাসলিক ১০ টাকা, মুরগির সাসলিক ২০ টাকা এবং গরুর সাসলিক মাত্র ৩০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।
রমজান মাসে কতিপয় ব্যবসায়ী যখন অধিক মুনাফালোভে ব্যস্ত। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে ঠিক তখনই এমন মহতি উদ্যোগ গ্রহণ করে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে বরিশাল নগরীর ফকিরবাড়ি রোডে খাবার হোটেল পরিচালনা করা দুই বন্ধ। আর এক টাকায় ইফতার পণ্য পেয়ে ব্যাপক খুশি নগরীর নিন্ম আয়ের রোজদারসহ ক্রেতারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দীর্ঘদিন থেকে নগরীর ফকিরবাড়ি রোডে খাবার হোটেল পরিচালনা করে আসছেন রবিউল ইসলাম মিঠু ও তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু নুরুল ইসলাম সম্রাট। দুই বন্ধুর ওই হোটেলে সারাবছর ভাতের পাশাপাশি তৈরি হয় আলুর চপ, পেঁয়াজু, বেগুনি, সবজির বড়া, কুমড়ো বড়ার মতো নানা পদ। নাস্তার এ পদগুলোর দামও অন্যান্য হোটেল বা রেস্টুরেন্টের মতোই। কিন্তু চলমান রমজান মাসে ওই দুই উদ্যোক্তা নিয়েছেন অভিনব এক উদ্যোগ। বছরজুড়ে যেসব পদ তারা ৫ থেকে ১০ টাকায় বিক্রি করেছেন, এবারের রমজান মাসজুড়ে সেগুলোর দাম রাখছেন মাত্র এক টাকা করে। ফলে ওই দুই বন্ধুর এমন উদ্যোগে হাসি ফুটেছে নগরীর খেটে খাওয়া মানুষের মুখে।
রবিউল ইসলাম মিঠু জানান, রমজান মাস আসলেই কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ীরা সবকিছুর দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। এ সময় গরীব ও মধ্যবিত্তদের কেনাকাটা করা অনেক কষ্ট হয়। তাই আমরা চিন্তা করেছি কীভাবে সমাজের গরিব দুঃখী মানুষের পাশে দাঁড়ানো যায়। সেই চিন্তা থেকে রমজান মাসে আমরা এক টাকায় ইফতারের পদ বিক্রি করার চিন্তা করি।
অপর উদ্যোক্তা নুরুল ইসলাম সম্রাট বলেন, চারদিকে যে হারে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এতে সবার খারাপ অবস্থা। তাই রমজান মাসে সবাইকে একটু স্বস্তি দেওয়ার জন্য আমরা এ উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। তিনি আরও বলেন, আমরা বছরের ১১ মাসইতো ব্যবসা করি। রমজান মাসে না হয় একটু কম ব্যবসা করে মানুষের পাশে দাঁড়াই।
ইফতার সামগ্রী ক্রয় করতে আসা আরিফ হোসেন বলেন, বর্তমান বাজারে এক টাকায় ইফতারের পদ পাওয়া এটা আসলেই অকল্পনীয় ব্যাপার। আসলেই উদ্যোগটা দারুণ। সাধ থাকলেও যাদের সাধ্য নেই, যারা অল্প পয়সায় ইফতার কিনতে চান তারা এখান থেকে অনায়াসে কিনতে পারছেন।
রিকশাচালক আব্দুর রহিম বলেন, এই দোকানটা না থাকলে ইফতার কিনে খাওয়ার সাহস পাইতাম না।