চন্দ্রদীপ ডেস্ক : আবগারি দুর্নীতি মামলায় গ্রেপ্তার ভারতের রাজধানী দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের জন্য কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত।
দিল্লিতে ক্ষমতাসীন আম আদমি পার্টির নেতা কেজরিওয়ালকে আজ শুক্রবার রাউস এভিনিউ আদালতে তোলা হলে ইডির ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদনের শুনানি শেষে বিচারক ২৮ মার্চ পর্যন্ত তাকে সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
ভারতের ইতিহাসে কেজরিওয়ালই প্রথম মুখ্যমন্ত্রী, যিনি পদে থাকাকালে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন। কিছুদিন আগে ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনকেও গ্রেপ্তার করেছে ইডি।
তবে তিনি কেজরিওয়ালের মতো মুখ্যমন্ত্রীর পদে থাকাকালীন গ্রেপ্তার হননি।
কেজরিওয়ালকে গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল আম আদমি পাটি (আপ)। বৃহস্পতিবার রাতেই সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে তারা। শুক্রবার সকালেও এজলাসে দ্রুত শুনানির আবেদন জানিয়েছিলেন কেজরিওয়ালের আইনজীবী।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয় কেজরিওয়ালকে। রাত কাটে ইডি দপ্তরে। নিয়ম মোতাবেক ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তাকে আদালতে হাজির করানো হয়।
শুক্রবার (২২ মার্চ) বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক কাবেরি বাওয়েজার এজলাসে কেজরিওয়ালের মামলার শুনানি ছিল। ইডির পক্ষে কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল এসভি রাজু আদালতে যুক্তিতর্ক করেন। তিনি দাবি করেন, ‘আবগারি দুর্নীতির ‘কিংপিন’ হলেন কেজরিওয়াল।
ভারত রাষ্ট্র সমিতির নেত্রী কে কবিতার সঙ্গে যোগসাজেশ করেই তিনি আবগারি নীতি তৈরির নির্দেশ দিয়েছিলেন। নতুন নীতি তৈরির জন্য কে কবিতা আপ নেতৃবৃন্দকে ১০০ কোটি রূপি দিয়েছিলেন।
শুক্রবার আদালতে ইডির পক্ষ থেকে আরো বলা হয়, আবগারি মামলায় ‘সাউথ গ্রুপ’কে সুবিধা পাইয়ে দিতে অর্থ চেয়েছিলেন কেজরিওয়াল। এ দাবির পক্ষে বয়ানও আছে বলে আদালতে জানায় ইডি।
অন্যদিকে, আম আদমি পার্টি প্রধান কেজরিওয়ালের গ্রেপ্তারির যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তার আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি।
মামলার শুনানিতে তিনি বলেন, ‘আবগারি দুর্নীতি মামলায় যারা গ্রেপ্তার হয়েছেন তাদের মধ্যে ৫০ শতাংশ মানুষ কেজরিওয়ালের নাম নেননি। ৪২ শতাংশ দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কোনো আর্থিক লেনদেনের কথা স্বীকার করেননি। তাই এইভাবে কোনো কারণ ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তার করা যায় না।’
একইসঙ্গে অতীতের প্রসঙ্গ টেনে সিংভি বলেন, ‘কেজরিওয়ালের অন্তর্বর্তী জামিনের আবেদনের পর ইডির বক্তব্য জানতে চেয়েছিল আদালত। কিন্তু ইডি জবাবদিহির জন্য সময় চায়। এর কিছুক্ষণের মধ্যে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।’
দুই পক্ষের যুক্তিতর্কের শেষে বেশ খানিক্ষণ রায়দান স্থগিত রাখেন বিচারক। রাত সাড়ে আটটার পরে রায় ঘোষণা করে আদালত। তখনই দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে সাত দিনের ইডি হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়।