শিরোনাম

দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীদের নিরাপদ ভ্রমণে রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থা নির্বিকার

Views: 36

সামনে পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর

বরিশাল অফিস::  মুসলমানদের বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদ উল ফিতর উপলক্ষে রাজধানী সহ সারা দেশ থেকে ঘরমুখী এবং পরবর্তীতে কর্মস্থলমুখী দক্ষিণাঞ্চলের লাখ লাখ মানুষের নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্য ভ্রমণে রাষ্ট্রীয় সড়ক, নৌ ও আকাশ পরিবহন সংস্থাগুলো এবারো অনেকটা নির্বিকার।

ফলে এ অঞ্চলের বিশাল জনগোষ্ঠীকে পরিবার পরিজনের সাথে ঈদের আনন্দ উপভোগ করা সহ কর্মস্থলে ফিরতে বেসরকারী সেক্টরের কাছে জিম্মি থাকতে হচ্ছে। যাত্রীদের অভিযোগ, এসব রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা দেশের জনগনের টাকায় সারাজীবন বেতন-ভাতা নিলেও অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় সময়েও তাদের স্বাচ্ছন্দ্য ও নিরাপদ ভ্রমণ নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে স্বেচ্ছা অন্ধত্বে ভোগেন। ফলে জনগনের দুর্ভোগ সব সীমা ছাড়িয়ে গেলেও সরকারী প্রতিষ্ঠানগুলো অনেকটাই নির্বিকার থাকছে। অথচ ঈদের আগে ও পরে রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থাগুলো সড়ক, নৌ ও আকাশ পথে কিছু বাড়তি যানবাহনের ব্যবস্থা করলে পরিস্থিতির ইতিবাচক পরিবর্তনের পাশাপাশি ঘর ও কর্মস্থলমুখী বিশাল জনগোষ্ঠীর কিছুটা হলেও নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিত করা যেত। পাশাপাশি বেসরকারী পরিবহন সেক্টরের স্বেচ্ছাচারিতা থেকেও মানুষের রেহাই মিলতো।

এবারো রাষ্ট্রীয় সড়ক পরিবহন সংস্থা-বিআরটিসি’র বরিশাল বাস ডিপো থেকে আসন্ন ঈদ উল ফিতরের আগে-পরে কোন বিশেষ বাস সার্ভিস থাকবেনা বাসের অভাবে। ডিপোটিতে ৭০টি যাত্রীবাহী বাসের মধ্যে ‘অচল ও চলাচল অযোগ্য’ ১৬টি ইতোমধ্যে বিক্রী হয়ে গেছে। অবশিষ্ট ৫৪টি বাসের ৫২টি বরিশাল-ঢাকা ছাড়াও এ বিভাগীয় সদর থেকে খুলনা, যশোর, রংপুর,রাজশাহী সহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় নিয়মিত যাত্রী পরিবহন করলেও আসন্ন ঈদের আগে-পরে বাড়তি যাত্রী পরিবহনের মত কোন বাস ডিপোটির হাতে নেই। দেশের অন্যতম লাভজনক এ বাস ডিপোটিতে গত দু বছরেও কোন নতুন-পুরাতন যাত্রীবাহী বাস সরবরাহ করেনি সংস্থাটির সদর দপ্তর। ফলে ১৮টি বাতানুকুল ও ৩৬টি দীর্ঘদিনের পুরনো বাস দিয়েই যাত্রী সেবা করছে রাষ্ট্রীয় সড়ক পরিবহন সংস্থাটি।

এ ব্যাপারে বিআরটিসি’র বরিশাল ডিপোর ব্যবস্থাপক জানান, ‘আমাদের বাড়তি কোন গাড়ী না থাকলেও বিদ্যমান বাস দিয়েই অতিরিক্ত ট্রিপে যাত্রী পরিবহনের চেষ্টা করব’। এদিকে রাষ্ট্রীয় নৌ-বানিজ্য সংস্থা বিআইডব্লিউটিসি করোনা মহামারীর আগে থেকেই যাত্রী সেবা খাতে হাত গোটানোর পর থেকে গত ৪ বছরে ঢাকা থেকে বরিশাল হয়ে দেশের একমাত্র অভ্যন্তরীণ রকেট স্টিমার সার্ভিসটি আর চালু করার কোন উদ্যোগ নেয়নি। ফলে আসন্ন ঈদের অগে পরে রাজধানী সহ চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকে চাঁদপুর হয়ে বরিশাল অঞ্চলের যাত্রীরা বেসরকারী নৌযান মালিকদের স্বেচ্ছাচারিতার কাছেই জিম্মি হয়ে পড়বে বলে মনে করছেন পরিবহন সংশ্লিষ্টরা।

এমনকি গত ২০ বছরে রাষ্ট্রীয় নৌ-বানিজ্য প্রতিষ্ঠানটি বরিশাল-চট্টগ্রাম রুটের কথা বলে সরকারী শতাধিক কোটি টাকায় উপকূলীয় দুটি নৌযানের পুনর্বাসন ছাড়াও ‘এমভি বার আউলিয়া’, ‘এমভি তাজউদ্দিন আহমদ’ ও ‘এমভি আইভি রহমান’ নামের ৩টি নতুন নৌযান সংগ্রহ করেছে। কিন্তু ২০২১ সালের মে মাস থেকে বরিশাল-চট্টগ্রাম রুটে উপকূলীয় স্টিমার সার্ভিসটি বন্ধ রয়েছে। এদিকে রাষ্ট্রীয় আকাশ পরিবহন সংস্থা-বিমান পদ্মা সেতু চালুর পরে যাত্রী সংকটের ধুয়া তুলে বরিশাল সেক্টরে নিয়মিত ফ্লাইট সপ্তাহে ৩দিনে হ্রাস করে।

ব্যাপক যাত্রী চাহিদার পরেও এক বছর ধরে বরিশাল সেক্টরে ফ্লাইট বাড়ানোর কথা বলা হলেও ৩১ মার্চ থেকে মাত্র ১টি ফ্লাইট বৃদ্ধি করা হচ্ছে। অথচ বরিশাল-ঢাকা আকাশ পথে ৩২শ টাকার টিকিট এখন বিমান বিক্রী করছে ৮ হাজার ৬শ টাকায়। আসন্ন ঈদ উল ফিতরের আগে-পরেও সরকারি আকাশ পরিসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বরিশাল সেক্টরের যাত্রীরা। এ ব্যাপারে সোমবার বিমান এর বরিশাল সেলস অফিসের জেলা ব্যবস্থাপকের টেলিফোনে কল করেও পাওয়া যায়নি। তবে সেলস কাউন্টারে যোগাযোগের পর ‘আসন্ন ঈদ উল ফিতরের আগে-পরে বরিশাল সেক্টরে কোন বিশেষ ফ্লাইট নেই’ বলে জানান হয়েছে। বিমান এর অপর একটি সূত্র থেকে ঈদের আগে আগামী ৮ ও ১০ এপ্রিল বরিশাল সেক্টরে দুটি বিশেষ ফ্লাইট বরিশাল-ঢাকা আকাশ পথে চলবে বলে জানান হয়েছে।

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *