শিরোনাম

চর বিজয় যেন লাল কাঁকড়া আর অতিথি পাখির নির্ভরযোগ্য সাম্রাজ্য

Views: 117

পটুয়াখালী প্রতিনিধি :

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি ও সূর্য উদয়ের বেলা ভূমি সাগর কন্যা কুয়াকাটা। আর এই কুয়াকাটার সমুদ্রের বুকে জেগে উঠেছে যেন আর একটি নতুন বাংলাদেশ।

মৌসুম জুড়েই হাজার হাজার অতিথি পাখির নিরলস উড়ে বেড়ানো এবং পুরো চর বিজয়ের সৈকত জুড়ে লাখ লাখ লাল কাকড়ার অবাধ ছুটে চলা এই সমুদ্রের সৌন্দর্য বাড়িয়ে তোলে কয়েক গুণ। আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে এমন সুন্দর দৃশ্য উপভোগ করাই তো প্রকৃতি প্রেমী মানুষের মনের বড় প্রশান্তি।

কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের মাঝে জেগে ওঠা চর বিজয় দ্বীপটির সৌন্দর্য উপভোগ করতে হাজার হাজার প্রকৃতি প্রেমী পর্যটকরা ছুটে যান এই দ্বীপে। শীত মৌসুম এলেই যেমন বাংলাদেশে বাড়ে পর্যটকদের ভ্রমণ। ঠিক তেমনি সুদূর সাইবেরিয়া থেকে হাজার হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে লাখ লাখ অতিথি পাখি ছুটে চলে আসে বাংলাদেশে। এরই পাশাপাশি লাল কাকড়ার অভয়ারণ্য কেন্দ্র নামে পরিচিত চর বিজয় যেন তাদের নির্ভরযোগ্য বাসস্থান। আর এত সব সৌন্দর্য একসঙ্গে উপভোগ করতেই কুয়াকাটায় আগত পর্যটকরা প্রতিনিয়ত ছুটে যাচ্ছেন চর বিজয়ের প্রান্তে।

২০১৭ সালে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত থেকে ২০ কিলোমিটার গভীরে ৫ হাজার একর আয়তন নিয়ে জেগে ওঠে চর বিজয় নামের এই দ্বীপটি। শীত মৌসুম এলে এই দ্বীপটি জেগে ওঠে কিন্তু বর্ষা মৌসুমে আবার পানির নিচে ডুবে যায়। তবে জেলেদের কাছে এটি হাইরের চর নামেই পরিচিত।

এটির অবস্থান মূলত বঙ্গোপসাগরের কুয়াকাটা সংলগ্ন সৈকত হতে প্রায় ২০ কিলোমিটার পূর্ব-দক্ষিণে এবং পায়রা বন্দর থেকে ৪০ কিলোমিটার দক্ষিণে সমুদ্রের বুকে অবস্থিত।

ঢাকা থেকে কুয়াকাটা বেড়াতে আসা ব্যবসায়ী ফরহাদ হোসাইন বলেন, কুয়াকাটায় আমি এই প্রথমবার ভ্রমণে এসেছি। কুয়াকাটা সত্যিই খুব সুন্দর জায়গা। তবে কুয়াকাটায় সমুদ্রের বুকে জেগে ওঠা চর বিজয় সম্পর্কে কোনো ধারণা ছিল না। কিন্তুু এখানে এসে সত্যিই মুগ্ধ হয়ে গেছি, চারদিকে বিশাল সমুদ্রের মাঝখানে একটি দ্বীপ আর সেই দ্বীপে এত পরিমাণ অতিথি পাখি ও লাল কাঁকড়া দেখে প্রাণ জুড়িয়ে গেছে। আমি আবারও আসতে চাই এখানে পরিবার নিয়ে।

ঢাকা থেকে কুয়াকাটায় বেড়াতে আসা অন্য এক ব্যবসায়ী মনিরুল হক লোটাস বলেন, চর বিজয়ে নামার পর আমি এখানকার পরিবেশ দেখে মুগ্ধ হয়ে গেছি। এত পরিমাণ লাল কাকরা আর অতিথি পাখি দেখলে যে কেউ মুগ্ধ হবে এটাই স্বাভাবিক। কুয়াকাটায় আগত পর্যটকদের জন্য চর বিজয় একটি নতুন মাত্রা যোগ করবে। এটি হতে পারে আরেকটি সেন্ট মার্টিন তবে অতিথি পাখি ও লাল কাকড়া নিধন থেকে বিরত থাকতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বন বিভাগের পক্ষ থেকে এই দ্বীপে এখন পর্যাপ্ত গাছ লাগানো দরকার, যাতে করে পাখিদের নির্ভয় যোগ্য বাসস্থান তৈরি হয়। এবং আমরা যারা এই দ্বীপে ভ্রমণ করতে আসবো তারা যেন কোন ধরনের প্লাস্টিক বর্জ ফেলে এই দ্বীপের সৌন্দর্য নষ্ট না করি।

আরো পড়ুন : বাউফলে পুরোনো মরিচা পড়া লোহা দিয়ে ব্রিজ নির্মাণের অভিযোগ

এ বিষয় ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা (টেয়াক) প্রসিডেন্ট রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, পর্যটকদের কাছে সূর্য উদয়-অস্তের বেলভূমি সাগরকন্যা এমনিতে অনেক জনপ্রিয়। এর মধ্যে চর বিজয় ২০১৭ সাল থেকে যোগ করেছে নতুন মাত্রা। এই চরের পাখি আর লাল কাকড়ার সমাগমে আকৃষ্ট হয় সব শ্রেণির পর্যটকরা। চর বিজয় ভবিষ্যতে সেন্টমার্টিনের মতো জনপ্রিয়তা পাবে বলে মনে করি।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা রিজিওনের পুলিশ সুপার আনসার উদ্দিন বলেন, সমুদ্রের বুকে জেগে ওঠা চরটির নাম দেওয়া হয়েছে চর বিজয়। ২০১৭ সালে সমুদ্রের বুকে জেগে ওঠা এ চরটি এখন খুবই জনপ্রিয় পর্যটকও স্থানীয়দের কাছে।সেখানে প্রতিনিয়ত ভিড় করে শত শত পর্যটক। মূলত লাল কাঁকড়া ও অতিথি পাখির সমাগম দেখতেই পর্যটকরা ভিড় করেন সেখানে। টুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে সকল পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করে কাজ করছি আমরা।

আরো পড়ুন : কলাপাড়ায় উচ্ছেদ আতঙ্কে ভূমিহীন ১৩৬ পরিবার : পায়রাবন্দরের সড়ক নির্মাণ শুরু
image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *